August 10, 2025

যোগী রাজ্যের চাকরি দুর্নীতির জাল ত্রিপুরাতেও, ধৃত ইউপি’র দুই যুবক!!

 যোগী রাজ্যের চাকরি দুর্নীতির জাল ত্রিপুরাতেও, ধৃত ইউপি’র দুই যুবক!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-যোগী রাজ্যের অর্থাৎ উত্তরপ্রদেশের চাকরি দুর্নীতির শিকড় ছড়িয়েছে ত্রিপুরা পর্যন্ত।বিষয়টি শুনতে অবাক লাগলেও বাস্তব কিন্তু এটাই। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই বিভিন্ন মহলে নানা ধরনের প্রশ্ন এবং ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। স্টাফ সিলেকশন কমিশনের পরীক্ষায় উত্তরপ্রদেশের চাকরি প্রার্থী যুবক যুবতীরা ত্রিপুরা রাজ্যের নানা এলাকার ঠিকানা ব্যবহার পরীক্ষায় বসছে। এমনকি পাসও করে যাচ্ছে। এমনই একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা শনিবার প্রকাশ্যে এসেছে ধলাই জেলার কমলপুর থেকে। কমলপুরের ভুয়ো ঠিকানা ব্যবহার করে উত্তরপ্রদেশের দুই যুবক ও এক যুবতী স্টাফ সিলেকশন পরীক্ষায় বসে এবং পাসও করে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কমলপুরের কোনও নথিপত্র তাদের না থাকায়, উত্তরপ্রদেশ থেকে দুই যুবক কমলপুরের উদ্দেশে রওনা হয়। স্থানীয় কিছু জনগণ এই খবর পুলিশের কাছে আগাম পৌঁছে দেওয়ায় দুই যুবক সালেমা থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। তাদেরকে শুক্রবার কমলপুর থানার হাতে হস্তান্তর করা হয়।
জানা গেছে, স্টাফ সিলেকশন কমিশনের পরীক্ষায় টিকতে হলে উত্তরপ্রদেশ কোটায় ভালো শতাংশের নম্বর পেতে হয়। কিন্তু ত্রিপুরার কোটায় পরীক্ষা দিলে অনেক কম নম্বরে সুযোগ পাওয়া যায়। আর এই সুবিধা উত্তরপ্রদেশের একটি দুর্নীতিচক্র, যে চক্রের জাল ছড়িয়ে আছে ত্রিপুরা রাজ্যেও, বহি:রাজ্যের চাকরি প্রার্থীদের ত্রিপুরার ঠিকানায় পরীক্ষায় বসিয়ে সুযোগ পাইয়ে দেয়। এমনই একটি চক্র রয়েছে কমলপুরে। জানা গেছে, এই চক্রটির মাধ্যমে গত বছরও বিএসএফের চাকরি বাগিয়ে নিয়েছিল উত্তরপ্রদেশের কয়েকজন যুবক ত্রিপুরার কমলপুরের ঠিকানা দিয়ে।
কমলপুরের মরাছড়া পোস্ট অফিসে অফার এলে পড়ে বিষয়টি ধরা পড়ে। ঘটনার তদন্তে তখন উমেশ চন্দ্র নামে আসাম রাইফেলসের এক অবসরপ্রাপ্ত জওয়ানের নাম উঠে আসে। যে নাকি ওই দুর্নীতিচক্রের সাথে যুক্ত বলে অভিযোগ। এবারও ঠিক একই ব্যক্তির নাম উঠে আসে।
এবার স্টাফ সিলেকশন কমিশনের পরীক্ষায় উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা দুই যুবক যথাক্রমে রূপেশ কুমার, প্রদীপ কুমার এবং মমতা সিং নামে এক যুবতীকে কমলপুর মহকুমার সুরমা বিধানসভার মরাছড়া পঞ্চায়েতের লালছড়ি গ্রামের ঠিকানা দিয়ে পরীক্ষায় বসায়। তিনজনই পাস করে। কিন্তু কমলপুরের ওই ঠিকানার কোনও বৈধ কাগজপত্র তাদের কাছে না থাকায়, তারা মরাছড়া এলাকার একটি সিএসসি সেন্টারের সাথে যোগাযোগ করে। তাদেরকে অর্থের বিনিময়ে কমলপুরের ওই ঠিকানার যাবতীয় নথিপত্র বের করে দেওয়ার কথা বলে। সিএসসি সেন্টারের মালিক তাদের পুরো ঠিকানা, ছবি নিয়ে তারা কবে আসছে তা সবকিছু জেনে ঘটনাটি স্থানীয় কয়েকজনকে জানিয়ে দেয়। ওই স্থানীয়রা বিষয়টি পুলিশকে জানায়। সিএসসি সেন্টারের মালিককে দুই যুবক জানায় যে তারা আট আগষ্ট ট্রেনে আমবাসায় আসছে। পুলিশ সেই মতো আমবাসা থানা ও রেলওয়ে পুলিশকে দুই যুবকের ব্যাপারে সব তথ্য দিয়ে দেয়। যথারীতি রূপেশ কুমার ও প্রদীপ কুমার আমবাসা রেলস্টেশনে নেমে কমলপুরের পথে রওনা দেয়। তাদের উপর পুলিশের নজর আগে থেকেই ছিল। সালেমাতে আসা মাত্র দুই যুবককে আটক করে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়। বিকালে তাদেরকে কমলপুর পাঠানো হয়। আজ এই খবর পেয়ে মরাছড়া সহ পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে কয়েকশো যুবক যুবতী ধৃত দুই যুবককে দেখতে থানায় আসে।স্থানীয়দের বক্তব্য, আমরা কষ্ট করে পরীক্ষা দিয়ে চাকরি পেতে কত ঝামেলা পোহাতে হয়। আর বহিঃরাজ্য থেকে কমলপুরের ঠিকানা দিয়ে বেআইনিভাবে চাকরি বাগিয়ে নিচ্ছে কিছু লোক।জানা গেছে, ধৃতদের আগামীকাল আদালতে সোপর্দ করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *