September 3, 2025

মহাজ্যামে স্মার্ট আগরতলা,দমবন্ধ পথে নেই ট্রাফিক!!

 মহাজ্যামে স্মার্ট আগরতলা,দমবন্ধ পথে নেই ট্রাফিক!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজধানী আগরতলা এখন কার্যত যানজট নগরী।ছোট্ট এই শহরটিকে উন্নয়নের নামে চলছে অব্যবস্থা, অবৈজ্ঞানিক পরিকল্পনা আর প্রশাসনিক গাফিলতি। সকাল থেকে রাত, যে কোনো সময় শহরের রাস্তায় নামলেই নাগরিকদের প্রথম পরিচয় হচ্ছে অসহ্য জ্যামের সঙ্গে। খোদ মুখ্যমন্ত্রী বাসভবনের সামনের রাস্তাও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রশ্ন উঠছে, যেখানে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র অচল, সেখানে প্রশাসন কী করছে?
ড্রেন নির্মাণের নামে দিনের পর দিন রাস্তায় ফেলে রাখা বালি, সিমেন্ট, মাটি যেন নতুন বিপদের কারণ। এর ফলে সংকুচিত রাস্তায় গাড়ির চাপ দ্বিগুণ হয়েছে। অথচ কাজ চলার সময় যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণ বা বিকল্প পথ তৈরি করার কোনও উদ্যোগ নেই। ঠিকাদারদের লাগাম টানার দায়িত্বও প্রশাসন নিচ্ছে না।
তার সঙ্গে রয়েছে বিশৃঙ্খল পার্কিং। যেখানে-সেখানে বাইক, অটো, রিকশা কিংবা ছোট বড় গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে। পার্কিং স্পট নেই। বাস স্টপেজ চিহ্নিত নয়। ফলে রাস্তাই কার্যত গাড়ি রাখার জায়গায় পরিণত হয়েছে।
আসন্ন শারদ উৎসব শহরের সমস্যাকে বহুগুণ বাড়িয়ে তুলেছে। কেনাকাটার ভিড়ে রাস্তাগুলি কার্যত হাঁটার অযোগ্য। তার উপর যোগ হয়েছে পুজোর গেট, প্যান্ডেল, আলোকসজ্জার কাঠামো। এগুলো রাস্তার একেবারে গা ঘেঁষে তৈরি হওয়ায় রাস্তাই যেন হারিয়ে যাচ্ছে। পুজো কমিটিগুলির উপর প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ নেই বললেই চলে।মর্জিমতো কাজ চলছে।ভুক্তভোগী হচ্ছে সাধারণ মানুষ। ক্ষুব্ধ বাসিন্দার প্রশ্ন, প্রশাসন কি শুধু ভিআইপি রাস্তায় নজর দেবে? আমরা সাধারণ মানুষ কি গবাধি পশু যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে বসে থাকব? ব্যবসায়ীরা আক্ষেপ ‘করে বলেন, ক্রেতারা যানজটে আটকে পড়ে দোকানে আসতেই পারছেন না। শারদ উৎসবের আগে যেখানে ব্যবসা বাড়ার কথা, সেখানে আমরা ক্ষতির মুখে।
প্রশাসনের আধিকারিকরা স্বীকার করছেন, শহরে গাড়ির চাপ ক্রমশ বাড়ছে। উৎসবের সময় সমস্যাও বাড়ছে। অথচ ট্রাফিক বিভাগ শহরের অতিরিক্ত প্রশিক্ষিত কর্মী মোতায়েনের কোনও উদ্যোগ নেয়নি। প্রশাসনের তরফে দাবি করা হচ্ছে সব মোড়েই ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
কিন্তু বাস্তবে মানুষ বলছে, রাস্তায় অধিকাংশ স্থানে সেই কর্মীদের দেখা মেলে না। কোনও উন্নত ট্রাফিক কন্ট্রোল সিস্টেম নেই। অবৈধ দখলদারি উচ্ছেদে কোনও পদক্ষেপ নেই। উৎসবের আগে এই অবস্থাকে নাগরিকরা প্রশাসনিক ব্যর্থতা হিসেবেই দেখছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে যানজট নিয়ন্ত্রণে অনেকগুলি উপায় রয়েছে। যেমন এক, ব্যস্ত সড়কগুলিকে ওয়ানওয়ে করা। দুই, শহরের পতিত জমিগুলিকে পার্টিং স্পটে রূপান্তর করা। তিন, পুজো কমিটিগুলির উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ চালু করা। চার, অবৈধ দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ চালানো। এই চারটি পদক্ষেপ নিলে আপাত অনেকাংশে সমাধান মিলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যায়,এই পদক্ষেপ নিতে প্রশাসনের রাজনৈতিক সদিচ্ছা আদৌ আছে কি?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *