ভূ-প্রাকৃতিক সমস্যায় প্রযুক্তি ও নির্মাণে গুরুত্ব চান মুখ্যমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- উত্তর পূর্বাঞ্চলের আট রাজ্য দেশের উন্নয়নের দিশা স্থির করবে। কেননা দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে উত্তর পূর্বাঞ্চলের আট রাজ্যে প্রভূত উন্নতি হয়েছে এবং হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রীমোদি প্রথম দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের আট রাজ্যকে অষ্টলক্ষ্মী বলে উল্লেখ করেন। তিনি পূর্বে তাকাও’র পরিবর্তে পূর্বে কার্যকর নীতি প্রণয়ন করেন। তারপর থেকেই ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের আট রাজ্যের উন্নয়নে গতি এসেছে। পরিকাঠামোগত দিক থেকে অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। এই মন্তব্য করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা। তিনি বলেন ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি ভৌগোলিক দিক থেকে অত্যন্ত কৌশলগত অবস্থানে রয়েছে।উত্তর পূর্বাঞ্চলের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন দেশের পক্ষে জরুরি হয়ে পড়ে।কারণ উন্নয়নের সার কথা পরিকাঠামোগত উন্নয়ন আর এই বিষয়টি করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি শুধু অনুধাবন করেই বসে থাকেননি, গ্রহণ করেন প্রয়োজনীয় উদ্যোগ। তার তৎপরতার সুফল মিলতে শুরু করেছে সহসা। ত্রিপুরার মতো দেশের প্রান্তিক এবং সীমান্ত রাজ্যে স্থাপিত হয়েছে রেল সংযোগ।বছর কয়েক আগেও ত্রিপুরাবাসীর কাছে রেল সংযোগ কষ্টকল্পনা ছিল। আসামের পর রেলপথ বর্ধিত হতে পারে বলে ভাবা যায়নি। স্বাধীনতার পর দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এমনটাই স্বাভাবিক বলে মেনে নিয়েছেন রাজ্যবাসী।প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উদ্যোগের ফলে এটা গুরুতর বাস্তব। আগরতলা এবং রাজ্যের প্রান্তিক অংশ সাব্রুমের মানুষ এখন রেলের বাঁশির শব্দ শুনতে পান। নিয়মিত বহু দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে আগরতলা, সাব্রুমে। দেশের মূল ভূখণ্ডের বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে রেলপথে স্থাপিত হয়েছে ত্রিপুরা সংযোগ।

ইন্ডিয়ান বিল্ডিং কংগ্রেসের ১০৯তম পরিষদীয় বৈঠক এবং জাতীয় স্তরের আলোচনাচক্র আয়োজিত হচ্ছে রাজ্যে। আগরতলার প্রজ্ঞা ভবনের এক নম্বর সভাগৃহে শুক্রবার আঠারো জুলাই শেষ বিকালে তিনদিন ধরে চলা এই কর্মসূচির সূচনা হয়েছে। এর প্রারম্ভিক অনুষ্ঠানে উদ্বোধক এবং প্রধান অতিথি হিসাবে অংশ নেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা। অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসাবে অংশ নেওয়ার সূচি থাকলেও সরকারী কাজে রাজ্যের বাইরে থাকায় উপস্থিত থাকতে পারেননি পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন ইন্ডিয়ান বিল্ডিং কংগ্রেসের চেয়ারম্যান শ্যামলাল ভৌমিক। ধন্যবাদসূচক বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সম্পাদক ভি আর বনশল। ভাষণ দেন সংগঠনের সভাপতি চিন্ময় দেবনাথ, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও পি গোয়েল, আসামের পূর্ত দপ্তরের বিশেষ কমিশনার রাজ চক্রবর্তী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক ড. শিবাশিস ভট্টাচার্য, রাজ্য পূর্ত দপ্তরের মুখ্য বাস্তুকার রাজীব দেববর্মা সহ অন্যরা।

মুখ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. মানিক সাহা তার বক্তব্যে বলেন, পরিকাঠামোগত উন্নয়ন প্রায় সবকিছু করে দিতে পারে। এর ফলে ঘটে সামাজিক ক্ষমতায়ন। আর এই পরিকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্যে রয়েছে সড়ক সংযোগ, রেল স্টেশন, বিমানবন্দর সহ নানা ধরনের নির্মাণ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দৌলতে সড়ক ও রেল সংযোগ সহ নানা ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের সীমান্ত রাজ্যে রেল সংযোগ স্থাপন কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি এই প্রসঙ্গে রাজ্যের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের নানা দিক তুলে ধরেন। ফিরিস্তি দেন রাজ্যের অভ্যন্তরে থাকা জাতীয় সড়ক থেকে শুরু করে বিভিন্ন সড়কের। জানান অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও প্রকৌশল ব্যবহার করে ত্রিপুরায় বহুতল নির্মাণের কাজ চলছে। ভূমিকম্পের কারণে রিখটার স্কেলে ৮.৫ পর্যন্ত মাত্রার ধাক্কা সইতে পারবে এই ভবন।

মুখ্যমন্ত্রী তার ভাষণে ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির ভূমিকম্পপ্রবণতার কথা স্মরণ করিয়ে দেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রকৌশলীদের। দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে আসা নানা বিষয়ে দক্ষ এবং বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের
রাজ্যবাসীর পক্ষ থেকে স্বাগত জানিয়ে তাদের আলোচনায় ত্রিপুরার উন্নয়ন প্রসঙ্গে এর বিভিন্ন বাধা দূর করার উপর আলোকপাত করার অনুরোধ জানান। জানান, অবস্থানগত দিক থেকে সুবিধার পাশাপাশি ভূ-প্রাকৃতিক সমস্যা রয়েছে। এই সমস্যা নিরসনের মাধ্যমে কী করে দ্রুত রাজ্যের উন্নয়ন ঘটানো যায় উপস্থিত প্রকৌশলীদের সেই বার্তা দিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে সবাইকে নিজ নিজ রাজ্যে ফিরে যাবার আগে ত্রিপুরার অপরূপ প্রাকৃতিক শোভা বর্ধনকারী পর্যটন স্থল সহ নানা ধরনের পর্যটন স্থল সফর করার আহ্বান জানান। তিনি এই প্রসঙ্গে রাজ্যের জাতি-উপজাতিদের বৈচিত্রময় অর্থচ সৌহার্দ্যভরা অবস্থানের কথা উল্লেখ করেন।