ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক মেরিট কাম মিনস অ্যাওয়ার্ডস-২৫,অদম্য মেধার খোঁজে দৈনিক সংবাদ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-শুধু ত্রিপুরাই নয়, গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতের সংবাদপত্র জগতের এক পুরোধা ব্যক্তিত্বের নাম হচ্ছে ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক। অবিস্মরণীয় এই নামটি তিনি আপন কর্মসাধনায় গৌরবান্বিত এবং মহিমান্বিত করেছেন সমাজের প্রতিটি স্তরে। সংবাদজগতে তাঁর অবদান ঐতিহাসিক। তাঁরই হাতে গড়া ত্রিপুরার সর্বাধিক প্রচারিত ও জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘দৈনিক সংবাদ’ সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে আজ ঠিক যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, সেটা তাঁরই রক্তঝরা সুদীর্ঘ এবং কঠিন লড়াইয়ের ফসল। তিনি প্রাণপণ চেষ্টায় তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন গণসংগ্রামের এই মোক্ষম হাতিয়ারকে এবং একই সাথে জনসেবার এই বিশ্বস্ত মাধ্যমকে। সমাজের যে কোনও অন্যায়ের বিরুদ্ধে তাঁর বজ্রকঠিন প্রতিবাদী কন্ঠস্বর, সমাজের শোষিত, নিপীড়িত,বঞ্চিত মানুষদের সাহস জুগিয়েছে।একই সাথে সমাজের প্রতি তার দায়দ্ধতা এবং সমাজসেবামূলক কাজের ইতিহাসও অবিস্মরণীয়। তিনি তার কর্মজীবনকে খুব সচেতন ভাবেই দুটি সত্তায় বিভাজিত করেছেন।
একদিকে তিনি একজন দৃঢ়চেতা, সংগ্রামী, প্রতিবাদী, আপসহীন সম্পাদক। অন্যদিকে তিনি একজন অত্যন্ত হৃদয়বান, সংবেদনশীল, পরোপকারী, সহজ সরল একজন মানুষ। শত ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যেও তিনি বাঁচিয়ে রেখেছিলেন তাঁর অসামান্য মানবিক মূল্যবোধ ও চরিত্রটিকে। যা বর্তমান সমাজে খুবই বিরল। যতদিন বেঁচে ছিলেন, ততদিন নিরলসভাবে অসহায় মানুষের সেবা করে গেছেন, সম্পূর্ণ প্রচারের আলোর বাইরে থেকে। মানবিক মূল্যবোধের যে ধারা তিনি সূচনা করেছিলেন, দৈনিক সংবাদ এবং তাঁরই হাতে গড়া ‘ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক ট্রাস্ট’ সেই ধারাকে অব্যাহত রেখে আগামীর পথ চলছে।প্রয়াত সম্পাদকের আদর্শকে পাথেয় করেই ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক ট্রাস্ট গত বছর ২০২৪ থেকে চালু করেছে ‘ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক মেধা সম্মান’। উদ্দেশ্য খুবই স্পষ্ট।এই সম্মান তাদেরই জন্য, যারা আর্থিক প্রতিকূলতা এবং সীমাহীন দারিদ্রতার সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করে নিজেদের স্বপ্নগুলোকে একটু একটু করে বাস্তবায়নের পথে হাঁটছে। এই সম্মান তাদের জন্য, যারা এই সমাজের সমস্ত বাধা-বিপত্তিকে পিছনে ঠেলে সাফল্যের শিখরে পৌঁছাতে চায়। কিন্তু আর্থিক অনটন তাদের সেই অদম্য ইচ্ছেটাকে মাঝে মাঝে টালমাটাল করে দেয়। প্রবল অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেয়। তারপরও উঠে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। তাদের জন্য এই সম্মান। এই সম্মান তাদের জন্য, যারা চরম দারিদ্রতার মধ্যেও নিজেদের মেধাবী হিসাবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে অন্যদের অনুপ্রাণিত এবং অনুপ্রেরণা জোগায় তাদের জন্য। আমরা তাদের পাশে দাঁড়াতে চাই। এই রাজ্যের আনাচে-কানাচে এমন অসংখ্য মেধাবীরা আছে, যারা হয়তো একটু সহায়তা পেলে নিজেদের সাফল্যের গল্পটাকে একটু মসৃণ ও সহজভাবে রচনা করতে পারবে। আমরা তাঁদের খুঁজে এনে সেই কাজটাই আন্তরিকভাবে করতে চাই।যে পথ আমাদের দেখিয়ে গেছেন প্রয়াত সম্পাদক ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক।
তাই এবছরও মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বিভিন্ন শিক্ষা পর্ষদের (টিবিএসই, সিবিএসই আইসিএসই, আইএসসি) আর্থিকভাবে দুর্বল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক মেরিট কাম মিনস অ্যাওয়ার্ড- ২০২৫’ প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক ট্রাস্ট। আগামী ১৫ জুন ২০২৫ তারিখের মধ্যে আবেদনকারী ছাত্রছাত্রীদের তাদের নিজ নিজ স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সুপারিশ ও স্বাক্ষর করা আবেদনপত্র, মার্কশিট, আধারকার্ড, রেশনকার্ডের প্রথম পাতার ছবি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ খামের উপর ‘ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক মেরিট কাম মিনস অ্যাওয়ার্ড’- ২০২৫’ লিখে দৈনিক সংবাদ, সংবাদ ভবন, ১১ জগন্নাথবাড়ি রোড, আগরতলা, ত্রিপুরা (পশ্চিম), পিন- ৭৯৯০০১ এই ঠিকানায় পাঠিয়ে দিতে হবে।এবারের মেরিট কাম মিন্স অ্যাওয়ার্ডস- ২০২৫-এত্রিপুরা বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশনের মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ১০ জন, উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ ৮ জন, সেন্ট্রাল বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশনের মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ৪ জন, উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ ৩ জন, ইন্ডিয়ান সার্টিফিকেট অব সেকেন্ডারি এডুকেশনের মাধ্যমিক উত্তীর্ণ ৪ জন, কাউন্সিল ফর দ্য ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজামিনেশনের উচ্চমাধ্যমিক ৩জন এবং আর্থিকভাবে দুর্বল শারীরিক অক্ষম ও দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত-এই বিশেষ ক্ষেত্রে ২ জনকে মেধা সম্মান না প্রদান করা হবে।
এ বছর মোট অ্যাওয়ার্ডের সংখ্যা থাকবে ৩৪ টি এবং প্রতিটি সম্মানের আর্থিক মূল্য নগদ ২৫ হাজার টাকা এবং একটি মানপত্র। প্রয়াত ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক তাঁর জীবদ্দশায় সাংবাদিকতার পাশাপাশি সমাজের দুর্বল, বিপন্ন, পিছিয়েপড়া অসহায় মানুষের জন্য বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজ করেছেন। সমাজ ও রাজ্যের দুর্বলতর মানুষদের জন্য প্রয়াত সম্পাদকের অঙ্গীকারকে সামনে রেখেই এই প্রয়াস অব্যাহত থাকবে বলে ভূপেন্দ্র চন্দ্র দত্ত ভৌমিক ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সঞ্জয় পাল জানিয়েছেন।