ব্যাঙ্ক কর্মীকে মারধর করে টাকা নিয়ে পালাল দুর্বৃত্তরা!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-উদয়পুরে বেসরকারী ব্যাঙ্ক কর্মীকে মারধর করে লুটের ঘটনার তদন্তে নেমেছে কিল্লা থানার পুলিশ। উদয়পুরে বেসরকারী ব্যাঙ্ক কর্মীর উপর দুষ্কৃতীদের হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা শহরজুড়ে। গত ৯ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লাহান্তি লাস্ট মাইল সার্ভিসেস লিমিটেডের এক কর্মী সবুজ মির্দার উপর ঘটে এই ঘটনা।
আক্রান্ত সবুজ মির্দা জানান, কিস্তির টাকা সংগ্রহ করে ফেরার পথে গোমতী জেলার উদয়পুর মহকুমার কিল্লা রাইয়াবাড়ি গৌতমনি জনমানবহীন এলাকায় মদ্যপ অবস্থায় কয়েকজন দুষ্কৃতকারী তার পথ আটকায়। অভিযোগ, দুষ্কৃতকারীরা তার বুকে ঘুসি ও মুখে হেলমেট দিয়ে ব্যাপক মারধর করে এবং তার কাছ থেকে ব্যাঙ্কের এক থেকে দেড় মাসের জরুরি নথিপত্র সহ ব্যাগে থাকা ২৭ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। সবুজ মির্দার দাবি, ঘটনাস্থলটি রাবার বাগানের মধ্যে-যেখানে আশেপাশে কোনো বাড়িঘর নেই। তার চিৎকারে দু-তিনজন আশেপাশের মানুষ ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায় বলে তিনি জানান।
পরবর্তী সময়ে ওই পরিবারের লোকেরাই কিল্লা থানায় খবর দিলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায়। এরপর ব্যাঙ্ক কর্মীর সহকর্মীরা সবুজ মির্দাকে চিকিৎসার জন্য গোমতী হাসপাতালে নিয়ে যান। পরদিন সংস্থার পক্ষ থেকে কিল্লা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়।
সংস্থার অভিযোগ অনুযায়ী, এসএএফ স্মল ফিনান্স ব্যাঙ্কের উদয়পুর শাখার অধীনস্থ বিজনেস করেসপন্ডেন্ট হিসেবে কর্মরত সবুজ মির্দা সেদিন রায়াবাড়ি গৌতমনি এলাকায় কিস্তির টাকা সংগ্রহ করে ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের হামলার শিকার হন। অভিযোগ, অভিযুক্তরা তাকে মারধর করে তার কাছ থেকে সমস্ত আদায়কৃত টাকা ও রশিদ বই ছিনতাই করে। সংস্থার দাবি, মোট ১১,৬৪০ টাকা লুট করা হয়েছে। আহত অবস্থায় সবুজ মির্দা বিষয়টি সংস্থাকে জানান। এরপর সংস্থার অ্যাসিস্ট্যান্ট ইউনিট ম্যানেজার ত্রিবঙ্কর সাতর কিল্লা থানার ওসিকে অফিসিয়াল লেটারহেডে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়ে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
কিল্লা থানার সাব-ইন্সপেক্টর জাকির হোসেন জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ১১২ জরুরি নম্বর থেকে ফোন পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে পৌঁছে তারা দেখতে পান, আক্রান্ত সবুজ মির্দা ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড়শো মিটার দূরে অনন্ত জমাতিয়ার বাড়িতে অবস্থান করেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ কাউকেই দেখতে পায়নি। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সবুজ মির্দাকে কেউ উদ্ধার করে নিয়ে যায়নি, বরং তিনিই “বাঁচান-বাঁচান” বলে অনন্ত জমাতিয়ার বাড়িতে আশ্রয় নেন। জমাতিয়ার পরিবারের সদস্যরা তখন ঠান্ডার কারণে বাইরে আগুন পোহাচ্ছিলেন। তারা সবুজ মির্দার চোখ-মুখে জল দিয়ে আগুনের সেঁক নিতে বলেন। সেখানে পৌঁছে সবুজ প্রথমে ব্যাঙ্কের কর্মীদের পুরো ঘটনা জানান, এরপর তিনি নিজেই ১১২ নম্বরে ফোন করেন।
পুলিশ সবুজ মির্দাকে গোমতী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে ব্যাঙ্ক কর্মীরা জানান, তারাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবেন; পুলিশ যেতে হবে না। পুলিশ সবুজ মির্দাকে জিজ্ঞেস করে, হামলাকারীদের সামনে আনা হলে তিনি শনাক্ত করতে পারবেন কিনা। সবুজের জবাব- তিনি শনাক্ত করতে পারবেন না।
ঘটনার পরদিন ফোনে কিল্লা থানার পুলিশ সবুজ মির্দাকে বিস্তারিত অভিযোগ জানিয়ে একটি মামলা দায়ের করতে বলে এবং বৃহস্পতিবার যেভাবেই হোক থানায় উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন। তবে এই ঘটনায় সবুজ মির্দা ব্যক্তিগতভাবে কোনো অভিযোগ দায়ের করেননি। ফলে প্রশ্ন উঠছে তার ব্যক্তিগত ১৫ হাজার টাকা লুট হওয়া সত্ত্বেও কেন তিনি আলাদা মামলা করলেন না?