দেশি-বিদেশিদের উপচে পড়া ভিড়,আন্তর্জাতিক পর্যটন মানচিত্রে জম্পুই!!
বিমান বাতিলে যাত্রী চাপ রেলে!!
অনলাইন প্রতিনিধি :- দেশজুড়ে বেসরকারী বিমান সংস্থা ইন্ডিগোর একের পর এক উড়ান বাতিলের প্রভাব পড়েছে রেলের উপর। দেশের বিভিন্ন অংশে রেল টিকিটের চাহিদা বেড়ে গেছে মাত্রা ছাড়াভাবে। যাত্রী চাহিদা মেটাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে ভারতীয় রেলকে। যাত্রী ট্রেন চলাচলের দায়িত্ব প্রাপ্ত রেলের ষোলটি অঞ্চল জোনের অবস্থা রীতিমতো কাহিল হয়ে পড়েছে। একই অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের ক্ষেত্রেও। লাগামছাড়া যাত্রী চাপ সামাল দিতে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের চিন্তা ভাবনা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে পরিস্থিতির উপর লাগাম টানতে সাময়িকভাবে বেশ কিছু বিশেষ এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলের বিভিন্ন অঞ্চল।

এমতাবস্থায় সীমান্ত রেলের তরফেও একই উদ্যোগ নেওয়াহয়েছে। যাত্রী ভিড় লাঘব করতে কলকাতা-আগরতলা-কলকাতা সহ দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে রাজ্যের প্রধান স্টেশন আগরতলায় সাময়িকভাবে বিশেষ এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এরজন্য অতিরিক্ত যাত্রী ভিড় লাঘব করার পাশাপাশি বিশেষ এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের প্রশ্নে প্রয়োজনীয় কোচ তথা রেলের পরিভাষায় থেকে সহ আনুষঙ্গিক নানা পরিকাঠামোর দিক দিয়ে পর্যালোচনা চলছে। এই বিষয়ে জানতে চেয়ে যোগাযোগ করা হয় সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মার সঙ্গে। তিনি সমস্যার গভীরতার কথা স্বীকার করেন। বলে সমস্যা নিরসনে ভারতীয় রেলের সঙ্গে সঙ্গে সীমান্ত রেলের তরফেও সম্ভাব্য সব ধরনের চেষ্টা চলছে। তবে শ্রী শর্মা এখন পর্যন্ত কলকাতা-আগরতলা-কলকাতা সহ দেশের অন্যান্য অংশের সঙ্গে ত্রিপুরা তথা আগরতলার মধ্যে কোনও অতিরিক্ত বিশেষ এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান। তার বক্তব্য বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা চলছে। পাশাপাশি তিনি এও জানান যে বিমান চলাচল ঘিরে সৃষ্ট বিপত্তির কারণে প্রভাব পড়েছে রেলের উপর। সীমান্ত রেল এলাকায়ও আচমকা প্রবল যাত্রী চাপ দেখা দিয়েছে। ভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবর অনুসারে কলকাতা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজ্যের বহু মানুষ আটকে আছেন। পরীক্ষা, চাকরি, বাণিজ্য, লেখাপড়া ইত্যাদি নানা কারণে আটকে আছেন। তাদের মধ্যে একটি বড়ো অংশ বিভিন্ন বয়সি মহিলা বলে খবর। তারা বিমান বিভ্রাটের কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন। আটকে আছেন বিভিন্ন বেসরকারী হোটেলে। ভুগছেন নিরাপত্তাহীনতায়। তাছাড়া ঘরে ফিরবেন কী করে তা নিয়ে পড়েছেন মহা শঙ্কার আবর্তে। তাদের অনেকের ঘরে ছোট সন্তান রয়েছে। বিমান বিভ্রাটের জেরে সৃষ্ট সন্তানের সঙ্গে সাময়িক বিচ্ছেদ মেনে নিতে পারছেন না। তার উপর অনেকের সঙ্গে থাকা অর্থ ফুড়িয়ে আসার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে। জানা গেছে আটক মানুষের সবচেয়ে বেশি রয়েছেন কলকাতায়। তবে দেশের রাজধানী শহর নয়াদিল্লী সহ তুলনায় আগরতলার কাছের শহর গুয়াহাটি সহ অন্য বহু শহরে আটকে আছেন রাজ্যের মানুষ। একইভাবে আগরতলা সহ রাজ্যের নানা অংশে আটকে আছেন বহি:রাজ্যের বহু মানুষ। আচমকা বিমান সঙ্কট দেখা দেওয়ায় তারা পড়েছেন বিপাকে। অনেকেই বি এড পরীক্ষা সহ নানা ধরনের পরীক্ষার জন্য ঘর থেকে বের হয়েছেন। ঘরে ফেরার হিসাব করে ফিরতি বিমানের আগাম করে রাখেন তারা। আচমকা ইন্ডিগো বিমান সংস্থার একের পর এক উড়ান বাতিলের ফলে তাদের যাবতীয় পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। তাদের চেখে মুখে যেন অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে। এখন কবে এবং কী করে ফিরবেন সেটা বুঝে উঠতে পারছেন না। এই অবস্থায় যারা রেলের নাম শুনলে কার্যত নাক সিটকাতে অভ্যস্ত ঘরে ফেরার তাড়নায় তাদের কাছেও শেষ ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে রেলপথ। আর সেই কারণে রেলেরও যেন ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই অবস্থা দেখা দিয়েছে। বস্তুত বিমান বিভ্রাটের কারণে এক সঙ্গে বহু মানুষ এক প্রকার হুমড়ি খেয়ে পড়েন রেল টিকিটের জন্য। ফলে বিভিন্ন যাত্রী ট্রেনের টিকিট যেন শুকিয়ে খা খা করার অবস্থায় এসে ঠেকেছে। আগরতলা-কলকাতা-আগরতলার মধ্যে সপ্তাহে পাঁচ জোড়া দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল করে। এই সব ট্রেনের প্রায় কোনোটিতেই তৎকাল ছাড়া পরবর্তী অন্তত এক সপ্তাহের জন্য নিশ্চিত তথা কনফার্ম টিকিট নেই। কোনো কোনো অপেক্ষমাণ তালিকা তথা ওয়েটিং লিস্টের টিকিট কাটারও উপায় নেই। আগরতলার সঙ্গে দেশের অন্যান্য অংশের সংযোগ রক্ষাকারী যাত্রী ট্রেনের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি একইরকম বলে খবর। চলছে ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই অবস্থা। টিকিট নিয়ে চলছে হাহাকার।