October 24, 2025

বিপজ্জনক ‘কার্বাইড গান’ বাজি পোড়াতে গিয়ে দৃষ্টি হারাতে চলেছে বহু শিশু!!

 বিপজ্জনক ‘কার্বাইড গান’ বাজি পোড়াতে গিয়ে দৃষ্টি হারাতে চলেছে বহু শিশু!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-দীপাবলির উৎসবে প্রতি বছরই নতুন নতুন বাজির ট্রেন্ড দেখা যায়।চরকি,রকেট,স্পার্কলার। কিন্তু এ বছর সেই উৎসবই পরিণত হয়েছে আতঙ্কে। মধ্যপ্রদেশ জুড়ে ‘কার্বাইড গান’ নামে দেশি ফায়ার ক্র্যাকারের উন্মাদনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মাত্র তিন দিনে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১২২-এরও বেশি শিশু, এদের মধ্যে ১৪ জনের চোখের দৃষ্টি সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গিয়েছে! সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিদিশা জেলায়, যেখানে সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি থাকা সত্ত্বেও ১৮ অক্টোবরের পরও খোলামেলাভাবে বিক্রি করা হয়েছে এই বিপজ্জনক খেলনা বাজি। দু’শো থেকে আড়াই’শো টাকায় বিক্রি হওয়া ‘কার্বাইড গান’ দেখতে খেলনার মতো হলেও বিস্ফোরণের সময় তারই আচরণ হয় বোমার মতো।হামিদিয়া হাসপাতালে ভর্তি ১৭ বছরের নেহা কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমরা একটা কার্বাইড গান কিনেছিলাম। হঠাৎ সেটা ফেটে যায়। আমার এক চোখ পুড়ে গেছে, কিছুই দেখতে পাচ্ছি না।’ বছর দশ-বারোর রাজ বিশ্বকর্মার বক্তব্য, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিও দেখে ঘরেই বানাতে গিয়েছিলাম। মুখের সামনে ফেটে যায়। চোখটা শেষ হয়ে গেল।’
বিদিশা জেলার পুলিশ জানিয়েছে, বেআইনিভাবে এই বাজি বিক্রির দায়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা এই বিপজ্জনক জিনিস বিক্রি বা প্রচার করছেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন বিদিশা জেলার পুলিশ সুপার। মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে এখন ভর্তি রয়েছেন কয়েক’শো শিশুরা।তবে ভোপাল, ইন্দোর, জবলপুর, গোয়ালিয়র সর্বত্র চক্ষুবিভাগে জায়গা পাওয়াই এখন দুষ্কর হয়ে উঠেছে। ভোপালের হামিদিয়া হাসপাতালেই শেষ ৭২ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছে ২৬ শিশু। চিকিৎসকদের সতর্কবার্তায় স্পষ্ট-এটি কোনও খেলনা নয়, বরং এক প্রকার বিস্ফোরক যন্ত্র। হামিদিয়া হাসপাতালের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ড. মণীশ শর্মা বলেছেন, ‘এই ডিভাইস থেকে নির্গত ধাতব কণা ও কার্বাইড বাষ্প সরাসরি চোখে আঘাত করে, রেটিনা পুড়ে যায়। বহু শিশুর চিরকালের জন্য দৃষ্টিশক্তি হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।’ তিনি এও জানান, চিকিৎসাধীন কয়েকজন শিশু এখন আইসিইউতে ভর্তি রয়েছে। অনেকে হয়তো কখনও আর পুরোপুরি দেখতে পারবেন না। এই তথাকথিত ‘কার্বাইড গান’ সাধারণত প্লাস্টিক বা টিনের পাইপে গানপাউডার, দেশলাইয়ের মাথা, ও ক্যালসিয়াম কার্বাইড ভরে বানানো হচ্ছে। পরে ছোটো ছিদ্র দিয়ে আগুন ধরানো হয়।। বিস্ফোরণের মুহূর্তে যে শক্তি উৎপন্ন হয়, তা চোখ ও মুখে সরাসরি আঘাত করে গুরুতর ক্ষতি ঘটায়। পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় মেলা ও রাস্তার ধারে ‘মিনি ক্যানন’ নামে বিক্রি হচ্ছে। এই ভয়াবহ জিনিস, কোনও নিরাপত্তা বিধি ছাড়াই। এই প্রাণঘাতী ট্রেন্ডের মূল উৎস হিসাবে উঠে এসেছে সমাজ মাধ্যম, বিশেষ করে ইনস্টাগ্রাম রিলস ও ইউটিউব শর্টসে।’ফায়ারক্র্যাকার গান চ্যালেঞ্জ’ নামে ভাইরাল ভিডিও দেখে কিশোররা ঝুঁকছে এই। বিপজ্জনক খেলার দিকে। আর তার। ফল, জীবনভর অন্ধকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *