August 5, 2025

বিনা চালকে ১০০০০ কিলোমিটার ছুটল ১৮ চাকার ট্রাক

 বিনা চালকে ১০০০০ কিলোমিটার ছুটল ১৮ চাকার ট্রাক

এই বিশ্ব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। প্রতিদিন বদলে যাচ্ছে প্রযুক্তি। আজ যে প্রযুক্তি নতুন, কালকেই তা বাসি হয়ে যাচ্ছে। কারণ, বাজারে চলে আসছে নতুন প্রযুক্তি। বিশেষত গাড়ি এবং মোবাইল ফোনের দুনিয়া যে ভাবে রকেট গতিতে বদলে যাচ্ছে, আগামী এক বছর বাদে তা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, কেউ জানে না। তবে এটা ঠিক যে উন্নততর প্রযুক্তি মানুষের কাজ আরও সহজ করে দিচ্ছে। বিশ্বের পয়লা নম্বর ডালাস ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্কের কোম্পানি টেসলা ইতিমধ্যেই চালকবিহীন ফেলেে গাড়ি তৈরি করে ফেলেছে। এবার বাজারে আসার অপেক্ষায় দিন গুনছে চালকবিহীন ট্রাক। গত মার্চ মাসে, বিনা চালকে ১৮ চাকার ট্রাক পাঁচ দিনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস এবং আটলান্টার মধ্যে পণ্য বহন করে ট্রাকটি বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। ওই আমে ট্রাকটি ১০,১৩৪ কিলোমিটারের বেশি পথ ইতিমধ্যে পাড়ি দিয়ে ফেলেছে।

ডালাস ও আটলান্টা শহরের মধ্যে ইতিমধ্যে ৮বার চলাচল করে ফেলেছে। লোকদেখানো চলাচল নয়, প্রতি বার গন্তব্যে পৌঁছে পণ্য বোঝাই ও পণ্য খালাসের কাজ করেছে আশ্চর্যজনক এই ট্রাক ।

এই ট্রাক কিন্তু ইলন মাস্কের কোম্পানি টেসলা বানায়নি। এই ট্রাকটি যৌথ ভাবে তৈরি করেছে আমেরিকার সেলফ-ড্রাইভিং স্টার্ট- আপ কোডিয়াক রোবোটিক্সের সঙ্গে ট্রাক নির্মাতা কোম্পানি ইউএস এক্সপ্রেস। রাস্তার নামার পর মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে এই ট্রাকটি স্ব চালনের ক্ষমতা প্রমাণ করে দিয়েছে। বর্তমান বিশ্বের সর্বত্র যে ট্রাক চলাচল করে সেখানে একজন চালকের ভূমিকাই প্রধান। কিন্তু এই ট্রাকে (ছবি) ড্রাইভারের কোনও প্রয়োজন নেই। অনেকটা রিমোর্ট কন্ট্রোলের মতো। ট্রাকটি কোথায় যাবে, শুধু সেই গন্তব্য সেট করে প্রোগ্রামিং করে দাও। বাকি কাজ ওই ট্রাক নিজেই নিখুঁত ভাবে সম্পন্ন করে ফেলবে। রাস্তায় ট্রাফিক সিগন্যাল দেখে দাঁড়িয়ে পড়বে, প্রয়োজনে ওভারটেক করবে, আবার দরকার পড়লে পিছনের গাড়িতে এগিয়ে যাওয়ার পথ করে দেবে। এখানেই শেষ নয়, এখনকার সাধারণ ট্রাক ১০ দিনে যে পরিমাণ পণ্য সরবরাহ করে, চালকবিহীন এই ট্রাক তা করে তার অর্ধেক দিনে, অর্থাৎ ৫ দিনে। এখনও বাণিজ্যিক ভাবে চালকবিহীন ট্রাক বাজারে ছাড়া হয়নি। এখন তার পরীক্ষামূলক দৌড় চলছে। রোবোটিক্স কোম্পানি কোডিয়াক প্রতিদিন ট্রাকের কেবিনে বিশেষজ্ঞদের একটি নতুন দলকে কাজে লাগাচ্ছে। যাতায়াতের পথে কোনও ত্রুটি ধরা পড়লে তারা তৎক্ষণাৎ তার মেরামতির ব্যবস্থা করছে।

কোডিয়াকের মতো স্টার্ট- র আপগুলি স্ব-ড্রাইভিং ট্রাক তৈরি এবং পরীক্ষা করার জন্য কয়েক বছর ব্যয় করছে । এসব সুবিধা নিতে চায় ট্রাক কোম্পানিগুলো। বিশ্বব্যাপী সাপ্লাই য ট্রাফিক চেইন ব্যাহত হওয়ায় স্ব-চালিত ট্রাকের প্রয়োজনীয়তা ক্রমশ অনুভূত হয়েছে। এ কারণে ব্যবসা ও ভোক্তা চাহিদার ওপর প্রভাব পড়েছে। স্বয়ংক্রিয় ট্রাক এই ধরনের বাধা কমাতে পারে। স্বয়ংক্রিয় ট্রাক খুব দরকারী হতে পারে, কিন্তু সবচেয়ে বড় বিপদ হল এটিতে কোন মানুষ থাকবে না । কোডিয়াকের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এখনই তাদের তৈরি তৈরি কর চালকবিহীন ব্যাপক অর্থে বাজারে সাহায্য কর ছাড়া হবে না। নিরাপত্তা সম্পর্কে ১০০ভাগ নিশ্চিত হওয়ার পরেই সরবরাহ-শৃঙ্খল তৈরি করা হবে। এখন যে ট্রাকটি পরীক্ষামূলক ভাবে চলেছে, সেটি হাইওয়ের কথা মাথায় রেখে বানানো হয়েছে। কিন্তু গলি- গলতায় চলাচল, ইউ টার্নের মতো মেধাবী তৈরি এবং প্রযুক্তি এতে জুড়তে হবে। কোডিয়াক খরচ জানিয়েছে, হাইওয়েতে চলাচলে তেমন বাধা নেই, তাই সেখানে স্ব- চালিত ট্রাক মোতায়েন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *