August 3, 2025

বিদ্যুৎ যন্ত্রাংশ ও সামগ্রী চুরি ধরলেন খোদ দপ্তরের মন্ত্রী!

 বিদ্যুৎ যন্ত্রাংশ ও সামগ্রী চুরি ধরলেন খোদ দপ্তরের মন্ত্রী!

অনলাইন প্রতিনিধি || প্রকাশ্যে বিদ্যুৎ দপ্তরের মূল্যবান যন্ত্রাংশ এবং নানা সরঞ্জাম চুরি আটকাতে ময়দানে নামলেন খোদ বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ। শুধু নামলেন বললে ভুল হবে, আচমকা ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে গাড়ি সহ হাতেনাতে চুরি ধরলেন খোদ মন্ত্রী।ঘটনা শুক্রবার সকালে বনমালীপুর বিদ্যুৎ দপ্তরের অফিসে। মন্ত্রীর এই ভূমিকায় সাধারণ মানুষ যেমন খুশি ব্যক্ত করছে, তেমনি দপ্তরের একাংশ দুর্নীতিবাজ আধিকারিক ও কর্মীর রাতের ঘুম উড়ে গেছে। খবর নিয়ে জানা গেছে, ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার সন্ধ্যায় মহাকরণে আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেছেন। বিষয়টি একেবারে হাল্কাভাবে নেওয়া হচ্ছে না। ঘটনায় বিদ্যুৎ মন্ত্রী এতটাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন, এই ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি স্পষ্টভাবে বলেন, দোষীদের ছাড়া হবে না । উল্লেখ্য, গত কদিন আগে বিদ্যুৎমন্ত্রী বনমালীপুর বিদ্যুৎ দপ্তরের অফিস পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। গিয়ে দেখেন বিদ্যুৎ অফিসে বেসরকারী ঠিকাদারের নানা সামগ্রী মজুত করে রাখা হয়েছে। এই ব্যাপারে মন্ত্রী তখনই ক্ষোভ ব্যক্ত করে শীঘ্রই ওই মালামাল সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী ওই ঠিকাদার গত দুইদিন ধরে গাড়ি ভর্তি করে নানা মালামাল নিয়ে যায়। কিন্তু বিস্ময়ের ঘটনা হলো, ওই মালামাল নিয়ে যাওয়ার সময় বিদ্যুৎ দপ্তরের মূল্যবান বহু যন্ত্রাংশ এবং সরঞ্জামও চুরি করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ। শুক্রবার সকালেও ঠিকাদারের গাড়ি মালামাল নিয়ে যাচ্ছিল। এরই মধ্যে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পৌঁছায় বিদ্যুৎমন্ত্রীর কাছে। মন্ত্রী শ্রীনাথ খবর পাওয়ার সাথে সাথে কাউকে কিছু না বলে আচমকা হাজির হন বনমালীপুর বিদ্যুৎ অফিসে। আধিকারিকরা তখন কেউ কেউ হয়তো সবে অফিসে ঢুকেছেন। কেউ কেউ হয়তো রাস্তায় আছেন। কর্মীরাও একে একে অফিসে আসছেন।হঠাৎ মন্ত্রীর আগমনে অফিসে দৌঁড়ঝাপ শুরু হয়ে যায়। মন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমেই সোজা ভিতরে ঢুকে যেখান থেকে মালামাল নেওয়া হচ্ছে সেখানে চলে যান। গিয়ে দেখেন একটি গাড়িতে বেশ কিছু যন্ত্রাংশ এবং সামগ্রী লোড করা হয়েছে। মন্ত্রী গাড়ি আটকান এবং গাড়িতে উঠানো সামগ্রীর কাগজপত্র দেখতে চান।কিন্তু ঠিকাদার কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। এরই মধ্যে পড়ি কি মরি হয়ে কয়েকজন আধিকারিক ঘটনাস্থলে পৌঁছান। খবর পেয়ে কর্পোরেট অফিস থেকে ছুটে আসেন এমডি। বিদ্যুৎমন্ত্রী সব মালামাল গাড়ি থেকে নামিয়ে নেন। শুধু তাই নয়, দপ্তরের আধিকারিকদের এই ধরনের ভূমিকায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অফিসের ভিতর থেকে ঠিকাদার তার মালামাল নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কি মালামাল নিয়ে যাচ্ছে তা দেখার কোনও লোক নেই। ঘটনায় মন্ত্রী বিস্ময় প্রকাশ করেন।খবর পেয়ে সাংবাদিকরাও ছুটে যান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, খবর যখন আমার কানে গেছে তখন আসাটা আমি কর্তব্য বলে মনে করেছি। তাই এসেছি। দারোয়ানের যে কাজ, একজন মন্ত্রীরও সেই কাজ। মন্ত্রীও একজন গ্রুপ ডি কর্মচারী বলে আমি মনে করি। একা কারোর পক্ষে কিছু করা সম্ভব নয়। সকলের মিলিত প্রয়াস থাকলে ভালো কাজ হবেই। মাল যারই হোক, অফিস থেকে কি মালামাল যাচ্ছে সেটা আমার নজরে থাকবে না? এটা হতে পারে না।এদিকে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, গত দুইদিনে বনমালীপুর বিদ্যুৎ দপ্তরের অফিস থেকে বেশ কয়েক গাড়ি মালামাল বেরিয়ে গেছে।সেই সামগ্রীগুলি কোথায় রাখা হয়েছে? যতটুকু খবর,গোপন এলাকায় কোথাও নিয়ে রাখা হয়েছে। সঠিক তদন্ত করলেই কেঁচো খুঁজতে সাপ বেরিয়ে আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *