August 2, 2025

বিদ্যুৎ বিলে স্বচ্ছতা আনতে,রাজ্যজুড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ!!

 বিদ্যুৎ বিলে স্বচ্ছতা আনতে,রাজ্যজুড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যে বিদ্যুৎ বিলে আরও স্বচ্ছতা আনতে বিদ্যুৎ নিগম আজ প্রথমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহার বাসভবন এবং মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে স্মার্ট মিটার বসানোর মাধ্যমে সারারাজ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করলো এই কাজ। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য মন্ত্রিপরিষদের সকল সদস্যদের অফিস ও মন্ত্রীদের বাসভবন, রাজ্যের ২,৭০০ জন বিদ্যুৎ নিগম কর্মচারীর বাড়িতে স্মার্ট মিটার বসানোর কাজ সম্পন্ন করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে এই কাজ চলতে থাকবে। মঙ্গলবার এই কথা জানান বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতনলাল নাথ। মন্ত্রী আরও বলেন, আগামী অক্টোবর মাস থেকে আগরতলা শহরে মাটির নীচে বিদ্যুৎ পরিবাহী তার নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।শুধু তাই নয়, হুক লাইনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ চুরি আটকাতে এবার থেকে ব্যবহার করা হবে ড্রান।
সেই উদ্যোগও নিগমের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে।
এদিন বিদ্যুৎমন্ত্রী আরও জানান, রাজ্যে বর্তমানে মোট ১০.২৬ লক্ষ বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছেন। বিদ্যুৎ বিলে স্বচ্ছতার জন্য ইতিমধ্যে ৯০,০০০ গ্রাহক নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে স্মার্ট মিটার গ্রহণ’ করেছেন। কিন্তু নিগম আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কাজ শুরু করেছে। গ্রাহকদের একটা অংশের মধ্যে স্মার্ট মিটার নিয়ে একটা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। কিছু মানুষের ধারণা, স্মার্ট মিটারে বেশি বিল উঠে। এই ধারণা একেবারেই ভ্রান্ত। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, বিভ্রান্তি দূর করতে সবার আগে মন্ত্রীদের বাসভবন, তাদের অফিস, বিদ্যুৎ নিগমের সমস্ত কর্মীদের বাসভবন, সব সরকারী অফিসে স্মার্ট মিটার বসানোর। স্মার্ট মিটার পর্যবেক্ষণের জন্য দুটি নতুন অফিস খোলা হয়েছে।যেখান থেকে গোটা রাজ্যের স্মার্ট মিটারগুলি নিয়মিত মনিটরিং করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, এই মিটারগুলি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত এবং গ্রাহক বান্ধব। এই মিটারে অতিরিক্ত বিলের সম্ভাবনা একেবারেই নেই। বরং গ্রাহকরা নিজেরা তাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতন হবেন। ভারত সরকার ও ত্রিপুরা সরকারের যৌথ উদ্যোগে রাজ্যের সম্মাননীয় গ্রাহকদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ১১ কেভি ফিডার, ট্রান্সফরমার ও স্মার্ট মিটার বসানো হচ্ছে।
মন্ত্রী স্মার্ট মিটারের সুবিধাগুলি ব্যাখ্যা করে বলেন, এতে মিটারের সঠিক রিডিং অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিল তৈরি হবে। গ্রাহকরা যতটুকু বিদ্যুৎ ব্যবহার করবেন, ততটুকুরই বিল পরিশোধ করবেন। মিটার রিডার বাড়িতে এসে বিল তোলার ঝামেলা থাকবে না। দরজা বন্ধ থাকায় বিল না পাওয়ার সমস্যাও থাকবে না। গ্রাহকরা মোবাইল অ্যাপ বা অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে প্রতিদিনের বিদ্যুৎ খরচ মনিটর করতে পারবেন। বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে বিদ্যুৎ দপ্তরে সতর্কবার্তা পৌঁছবে এই স্মার্ট মিটারের মাধ্যমে। বিদ্যুৎ চলে গেলেও সেই বার্তা পৌঁছে যাবে। এর জন্য গ্রাহককে কল করে অভিযোগ নথিভুক্ত করতে হবে না। বিদ্যুৎ কর্মীরা স্মার্ট মিটারের পাঠানো সিগন্যাল থেকেই জেনে যাবেন সমস্যার কথা। সেই মতো দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। গ্রাহকরা নিজেদের মোবাইলে প্রতিদিন কত বিদ্যুৎ খরচ করছেন, তা নিজেরাই জানতে এবং দেখতে পারবেন। তাছাড়া পুরনো মিটারের সাথেই স্মার্ট মিটার বসানো হবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। এতে গ্রাহকরা নিজেরাই পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন, স্মার্ট মিটারে বিল বেশি উঠছে কিনা। ফলে আশঙ্কার কোনও কারণ – নেই। মন্ত্রী আরও বলেন, গ্রাহকরা তাদের মাসিক বাজেট অনুযায়ী বিদ্যুৎ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। পাশাপাশি, স্মার্ট মিটার থাকলে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য আলাদা নেট মিটার বসানোর প্রয়োজন নেই। এতে প্রায় ৫ হাজার টাকা সাশ্রয় হবে। তাছাড়া স্মার্ট মিটার বসানো সম্পন্ন হলে সংশ্লিষ্ট এলাকার ট্রান্সফরমারগুলিতেও স্মার্ট মিটার বসানো হবে। যাতে ওই এলাকার গ্রাহকরা মোট কতটুকু বিদ্যুৎ ব্যবহার করছেন, তার লোড অ্যাসেসমেন্ট করা যায়। এর ভিত্তিতে নিগমের এনওএমসি রুম থেকে মনিটর করা হবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন ট্রান্সফরমার বসানোর বা বিদ্যমান ট্রান্সফরমারের ক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা করা হবে। বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, আগরতলা শহরে ভূগর্ভস্থ বৈদ্যুতিক তার বসানোর জন্য যাবতীয় প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। আগামী অক্টোবর মাস থেকে কাজ শুরু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগরতলা পুর নিগম এলাকার কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর পরবর্তী পর্যায়ে খুমুলুঙ, উদয়পুর ও ধর্মনগর এলাকাতেও ধাপে ধাপে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে,’ জানান বিদ্যুৎমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *