August 2, 2025

বন্ধ হচ্ছে লন্ডনের ঐতিহাসিক ‘ইন্ডিয়া ক্লাব’।

 বন্ধ হচ্ছে লন্ডনের ঐতিহাসিক ‘ইন্ডিয়া ক্লাব’।

লন্ডনের ঐতিহাসিক “ইন্ডিয়া ‘ক্লাব’ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আগামী মাস থেকে। ক্লাবের তরফে বিবৃতি দিয়ে এ খবর জানানো হয়েছে। ক্লাব ভেঙে সেখানে তৈরি হবে আধুনিক হোটেল। বাইরে থেকে দেখলে সাবেকি একটি তিন তলা বাড়ি। সেই বাড়ির একটি দরজার উপরে লেখা ‘হোটেল স্ট্র্যান্ড কন্টিনেন্টাল’।এই স্ট্র্যান্ড কন্টিনেন্টালেরই একটা অংশে অনেক ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাক্ষী হিসাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে ইন্ডিয়া ক্লাব। আজকের মতো লন্ডনে যখন এত ভারতীয় খাবারের দোকান তৈরি হয়নি তখন এই ইন্ডিয়া ক্লাবেই বেশ সস্তায় পাওয়া যেত রকমারি ভারতীয় খাবার।এই এলাকায় এখন অনেকগুলি ঝাঁ চকচকে রেস্তরাঁ হলেও ইন্ডিয়া ক্লাবের জনপ্রিয়তা একটুও কমেনি।যারা নিয়মিত এখানে আসেন,তারা বলেন, কলকাতা বা দিল্লির কফি হাউসের ছোঁয়া মেলে এই ক্লাবে।লন্ডনের ইন্ডিয়া ক্লাব বন্ধ হয়ে যাচ্ছে শুনে এক্স হ্যান্ডলে (টুইটার) করে দুঃখপ্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর।এই ক্লাবে বোনের সঙ্গে নিজের একটি ছবি শেয়ার (ছবি) করে থারুর লিখেছেন, “আমি শুনে দুঃখিত যে, লন্ডনের ইন্ডিয়া ক্লাব সেপ্টেম্বর থেকে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে একজনের পুত্র হিসাবে, আমি এমন একটি প্রতিষ্ঠানের বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবরে শোক প্রকাশ করছি, যেটি প্রায় তিন- চতুর্থাংশ শতাব্দী ধরে এত ভারতীয়ের (এবং শুধুমাত্র ভারতীয়দেরই নয়) সেবা করে এসেছে। অনেক ছাত্র, সাংবাদিক এবং পর্যটকদের জন্য, এই ক্লাব যেন বাড়ি থেকে দূরে আর একটি বাড়ি।এখানে সুলভ মূল্যে, ভাল মানের ভারতীয় খাবারের পাশাপাশি বন্ধুত্ব বজায় রাখা এবং দেখা করার জন্য একটি আনন্দদায়ক পরিবেশ রয়েছে।’ কংগ্রেস সাংসদ লিখেছেন, ‘এই ছবিটি এই গ্রীষ্মে আমার বোনের ওই ক্লাবে দাঁড়িয়ে তোলা (আমরা ১৯৫০-এর দশকের শুরুতে আমার বাবার ক্লাবের ইভেন্টে অংশ নেওয়ার ফটোগুলির সামনে দাঁড়িয়ে আছি)। এটিই যে আমার শেষ সফর (ক্লাবে) ছিল, বুঝতে পেরে আমি দুঃখিত। ওম শান্তি ১৯৫১ সালে লন্ডনের ১৪৩ স্ট্র্যান্ডের ঠিকানায় তৈরি হয়েছিল ইন্ডিয়া ক্লাব। তবে ক্লাবের শিকড় ছিল আরও প্রাচীন, ‘ইন্ডিয়া লিগ’ নামে ভারতের স্বাধীনতাকামী একটি ব্রিটিশ সংগঠনের। ১৯২৮ সালে কৃষ্ণ মেননের (যিনি পরে লন্ডনে ভারতের প্রথম হাই কমিশনার নিযুক্ত হয়েছিলেন) নেতৃত্বে ওই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ইন্ডিয়া লিগের প্রথম প্রেসিডেন্ট ছিলেন লেডি এডুইনা মাউন্টব্যাটেন। স্বাধীনতার পরে ইন্ডিয়া ক্লাব তৈরি হলে সেখানকার নিয়মিত অতিথি-তালিকায় ছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুও। ক্লাবের দেওয়ালে এখনও রয়েছে গান্ধীজি, নেহরু-সহ নানা ভারতীয় জাতীয়তাবাদী নেতার ছবি। ১৭ সেপ্টেম্বর (বিশ্বকর্মা পুজো) থেকে চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে এই ঐতিহাসিক ক্লাবের দরজা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *