August 23, 2025

বঙ্গে বিজেপি চাই কেন, বোঝাতে ত্রিপুরা-আসাম টানলেন মোদি!!

 বঙ্গে বিজেপি চাই কেন, বোঝাতে ত্রিপুরা-আসাম টানলেন মোদি!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- আলিপুরদুয়ার এবং দুর্গাপুরের সভা থেকে বাংলায় বিজেপির সরকার গড়ার ডাক দিয়েছিলেন, আর শুক্রবার কলকাতায় এসে ছাব্বিশের নির্বাচনের স্লোগানও বেঁধে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দমদম সেন্ট্রাল জেল ময়দান থেকে তার স্লোগান, বাঁচতে চাই, বিজেপি তাই। ত্রিপুরা ও আসামের প্রসঙ্গ টেনে দাবি করলেন, এই রাজ্যগুলিতে বিজেপির সরকার আছে বলেই এখানকার মানুষ কেন্দ্রের গরিব কল্যাণ যোজনার সহায়তা পাচ্ছেন। বাংলাতেও বিজেপির সরকার এলে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের স্বপ্নের বাংলা গড়া হবে বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কলকাতায় এসে মেট্রোর তিনটি নতুন রুটের সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও নতুন প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। এরপরেই সেন্ট্রাল জেল ময়দানের সভা থেকে নিজের বক্তৃতায় বাংলার তৃণমূল সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তিনি।বাঙালি অস্মিতার কথাই বারবার মোদির বক্তৃতায় উঠে এসেছে।এবার মোদির মুখে শোনা গিয়েছে জয় মা কালী, একইভাবে হনুমান মন্দিরের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। তার কথায়, আমি এমন একটা সময়ে বাংলায় এলাম যখন দুর্গাপুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। বড়বাজার থেকে পার্কস্ট্রিট সেজে উঠেছে। এখান থেকে কিছু দূরে আজ নতুন প্রজেক্টের
উদ্বোধন করার সুযোগ পেলাম। ভৌগোলিকভাবে পশ্চিমবঙ্গ দেশের অন্যতম জনবহুল রাজ্য। তাই পশ্চিমবঙ্গ যতক্ষণ না এগিয়ে যাবে, ততক্ষণ বিকশিত ভারত সম্ভব নয়।


প্রধানমন্ত্রী আজ দাবি করেছেন, বাংলায় ন্যাশনাল হাইওয়ের জন্য ইউপিএ আমলের থেকে কেন্দ্রের বর্তমান সরকার তিন গুণ বেশি টাকা দিয়েছে। রেলওয়ের ক্ষেত্রেও একইভাবে বাংলার জন্য বাজেট বেড়েছে। কিন্তু এরপরেই প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের বিকাশের জন্য কেন্দ্র যে টাকা পাঠায় তার সিংহভাগ টাকা তৃণমূলের ক্যাডাররা লুঠে নিচ্ছে। তিনি বলেন, কেন্দ্র যে টাকা দিচ্ছে সেই টাকা তৃণমূল ক্যাডারদের জন্য খরচ হচ্ছে। সেই কারণে এই রাজ্য গরিব কল্যাণে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। কিছু বছর আগেও আসাম, ত্রিপুরায় এই অবস্থা ছিল। যখন থেকে এই দুই রাজ্যে বিজেপির সরকার গঠন হয়েছে গরিব কল্যাণের লাভ পাচ্ছেন দুই রাজ্যের মানুষ। এই লাভ পশ্চিমবঙ্গের জন্য পেতে হলে পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপির সরকার চাই। এটা নিশ্চিত আগামী নির্বাচনে তৃণমূল যাবে, বিজেপি আসবে। বাংলাকে নবজাগরণের পীঠস্থান বলে উল্লেখ করেন মোদি। আর তারপরেই বাংলার পূর্বতন কংগ্রেস ও বাম সরকার সহ বর্তমান তৃণমূল সরকারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে প্রথমে কংগ্রেস, পরে বামপন্থীদের লম্বা শাসন ছিল। তারপর বাংলার মানুষ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিলেন। বাংলার মানুষ মা-মাটি-মানুষ স্লোগানে ভরসা করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে বাংলার পরিস্থিতি আরও খারাপ। দুর্নীতি, অপরাধ তৃণমূল সরকারের পরিচয়। এটা নিশ্চিত যতদিন তৃণমূল সরকার থাকবে ততদিন বাংলার বিকাশ অবরুদ্ধ থাকবে। তৃণমূল যাবে তবেই আসল পরিবর্তন আসবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মধ্যেই যাতে মানুষের কাজ হয়, মহিলাদের সুরক্ষা দেওয়া যায়, কৃষকদের সুবিধা দেওয়া, গরিব মানুষ সম্মানের সঙ্গে বাঁচবে, আর এই পরিবর্তন শুধু বিজেপি আনতে পারে। তাই বাংলার ঘরে ঘরে একটা কথা পৌঁছে দিতে হবে, বাঁচতে চাই, বিজেপি তাই।
অপারেশন সিন্দুরের প্রসঙ্গও উঠে এসেছে প্রধানমন্ত্রীর কথায়। তিনি বলেন, বিজেপি যে অঙ্গীকার করে সেটি পূরণ করে। সেটার প্রমাণ অপারেশন সিন্দুর। আমাদের সেনা সীমা পেরিয়ে জঙ্গি ও জঙ্গিদের মদতদাতাদের উচিত শিক্ষা দিয়েছে। এমন শিক্ষা দিয়েছে যাতে এখনও পাকিস্তানের ঘুম ছুটে গিয়েছে। সংসদে যে অ্যান্টি করাপশন বিল আনা হয়েছে সেই কথাও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, দেশের নানা প্রান্তে স্মার্ট সিটি মিশন প্রকল্প চালু হয়েছে। কিন্তু বাংলার তৃণমূল সরকার তাতে অংশ নেয়নি। বাংলায় বিজেপির সরকার এলে রাজ্যে নতুন শিল্প হবে, কর্মসংস্থান হবে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে বলছি, আপনি যত বাংলায় আসবেন ততই বিজেপির আসন কমবে। লিখে নিন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক বিধায়ক নিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় আসবে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী হবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *