December 10, 2025

ফাঁসির রায়ের পর হাসিনাকে অন্য মামলায় ২১ বছর কারাদণ্ড!!

 ফাঁসির রায়ের পর হাসিনাকে অন্য মামলায় ২১ বছর কারাদণ্ড!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্লট দুর্নীতির তিন মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে ৭ বছর করে মোট ২১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে একটি মামলায় এবং মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে আরেক মামলায় ৫ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঢাকা শহরে বাড়ি বা ফ্ল্যাট বা আবাসন সুবিধা থাকার পরেও ‘সেই তথ্য গোপন করে তারা আইন ভেঙে দুর্নীতির মাধ্যমে’ পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা আকারের তিনটি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বৃহস্পতিবার ওই তিন মামলার রায় ঘোষণা করেন।হাসিনা পরিবারের তিনজন ছাড়াও এ তিন মামলায় আরো ২০ জন আসামি ছিলেন।তাদের মধ্যে কেবল গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার খালাস পেয়েছেন। বাকিদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড হয়েছে।
শেখ হাসিনা, তার ছেলে, মেয়েসহ বাকি আসামিদের পলাতক দেখিয়ে এ মামলার বিচার কাজ চলে। ফলে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ তারা পাননি। তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী শুনানিতে অংশ নিতে পারেননি। কারাদণ্ডের পাশাপাশি শেখ হাসিনাকে এক লাখ টাকা করে তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ৬ মাস করে ১৮ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড, পুতুল ও জয়কে দণ্ডের পাশাপাশি এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড ও অনাদায়ে ৬ মাস করে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। শেখ হাসিনা পরিবারের বিরুদ্ধে তিন মামলায় দুদকের পক্ষে শুনানি করেন খান মো. মাইনুল হাসান লিপন। জুলাই গণঅভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে গত ১৭ নভেম্বর শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এবার তাকে দুর্নীতি মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হল। তিনি বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রাক্তন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান, দুর্নীতির দায়ে যার সাজার রায় এলো।
আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন না হওয়ায় হতাশ দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। রায়ের পর দুদকের কৌসুলি খান মো. মাইনুল হাসান লিপন বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করেছিলাম, তা হয়নি। কমিশনের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি খুরশীদ আলমের আইনজীবী শাহীনুর ইসলাম। ‘শেখ হাসিনা একজন পলিটিক্যাল লিডার, চারবারের প্রধানমন্ত্রী। তার কেন এতো টাকা লাগবে, এতো সম্পদ লাগবে?’ প্লট দুর্নীতির তিন মামলায় বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণার আগে পর্যবেক্ষণে এ কথা বলেন ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন। পর্যবেক্ষণে বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর একটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাজউকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে নিজ নামে ও পরিবারের সদস্যদের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ২৭ নম্বর সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০৩ নম্বর রোড থেকে ১০ কাঠা করে ৬০ কাঠার ছয়টি প্লট বরাদ্দ নিয়েছেন। ‘এরপর দুদক টিম গঠন করে শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যদের নামে প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত দুর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধানের রিপোর্টের ভিত্তিতে গত ১২ জানুয়ারী মামলা দায়েরের অনুমতি দেয় দুদক। এরপর অভিযোগপত্র দেওয়া হয়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *