সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ হতেই ধুন্ধুমার সংসদে, বিল ছিঁড়ে ছোড়া হলো শাহের মুখে!!
পাহাড়ি পথ নিয়ে দুশ্চিন্তায় রেল কর্তৃপক্ষ!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-পাহাড়ি রেলপথের হাল ভালো নয়। ট্রেন চলাচলে ব্যাঘাত না ঘটলেও এই রেলপথ নিয়ে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে খোদ রেল কর্তৃপক্ষের মধ্যে। কারণ ফি বছর বর্ষাকালে এই রেলপথ নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। যাত্রীদের পাশাপাশি রেল কর্তৃপক্ষকেও সইতে হয় ঝঞ্ঝাট। তার মধ্যে চলতি ২০২৫ সালে সংকট কার্যত মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। বর্ষার মরশুমে কয়েক দফা পাহাড়ি রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে রাখতে হয়। এর আগে আগরতলায় মিটারগেজ চালুর এক বছর পর ২০১০ সালে বর্ষাকালীন বিপর্যয়ের কারণে টানা বাইশ দিন পাহাড়ি রেলপথের যাবতীয় ট্রেন চলাচল বন্ধ করে রাখতে হয়। এই তথ্য তুলে ধরে রেল সূত্রের বক্তব্য চলতি বছর এতো বেশি দিন ট্রেন চলাচল বন্ধ করে রাখতে না হলেও পরিস্থিতি ভালো নয়। পরবর্তী বছরগুলিতে পরিস্থিতি কী দাঁড়ায় বলা শক্ত হয়ে গেছে। এই সমস্যার মূলে রয়েছে বরাইল পাহাড়ের চরিত্র বদল।
ব্রিটিশ যুগে পাহাড়ি রেলপথের সঙ্গে বর্তমান যুগে নির্মিত ব্রডগেজ রেলপথের চরিত্র এক নয়। বরাইল পাহাড় ঘেরা ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ করতে গিয়ে আগের মিটারগেজের এলাকা বেশ কিছু অংশে বদলে ফেলা হয়েছে। দূরত্ব কমানো সহ নানা কারণে এই বদল করার সময় ব্যাপকহারে কাটা হয়েছে পাহাড়। ফলে রেলপথের দিকে পাহাড় হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় পুরোপুরি খাড়া। আর এই খাড়া পাহাড় খসে পড়ছে সহসা। বর্ষণ শুরু হতেই পাহাড় বেয়ে রেলপথে ধস নামা শুরু হয়।রেলপথের কাছে পাকা দেওয়াল মুক্ত নালা নির্মাণ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলেছে। সেই সঙ্গে প্রায় খাড়াভাবে কেটে ফেলা পাহাড়ের গায়ে নানা ধরনের গাছ ও ঘাস বসানো হয়েছে। বসানো হয়েছে কৃত্রিম উপায়ে পাহাড়ের গায়ে চাদর। তাতে মোটামুটি সুফল। পাওয়া যায়। তবে বর্ষণ একটু মাত্রা ছাড়িয়ে গেলে কিছুতেই যেন কিছু হতে চায় না। ভূ বিজ্ঞানী সহ প্রকৌশলীদের বক্তব্য এমনটা হওয়ারই কথা। কেন না বৈশিষ্ট্যগতভাবে পাহাড়ে উল্টো করে রাখা চোঙাকৃতি পিরামিড আকৃতির হয়ে থাকে। এইভাবে পাহাড়ের এক দিক অন্য দিকটিকে ধরে রাখে। তাতে পাহাড় কোনো দিকে হেলে অথবা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকে না। রেলপথ নির্মাণ সহ নানা ধরনের উন্নয়ন কাজের দৌলতে পাহাড়ের এই চরিত্রের বদল ঘটে চলছে। পাহাড় নির্মাণ কাজের অংশে হয়ে পড়ছে খাড়া। তাতেই বাড়ছে বিপদ। পাহাড়ের খাড়া দিকটি সহসা নীচের দিকে নেমে আসছে। যাচ্ছে ভেঙে। বরাইল পাহাড়ও এর ব্যতিক্রম নয়। এমনিতে দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলের মাটির বিশেষ একটি চরিত্র রয়েছে। এই মাটি শুকনো অবস্থায় খুব কঠিন থাকে। আবার ভিজে গেলে হয়ে যায় নরম ও ঝুরঝুরে। সহসা আলগা হয়ে মূল অংশ থেকে আলাদা হয়ে পড়ে। উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের লামডিঙ বিভাগের আওতাধীন বরাইল পাহাড় ঘেরা পাহাড়ি রেলপথের ক্ষেত্রেও ঘটে চলছে অনুরূপ ঘটনা। ফি বছর বর্ষাকালে ভাঙছে পাহাড়। বিপর্যয় ঘটছে রেলপথে। বিপাকে পড়ছে মানুষ। প্রাপ্ত খবর অনুসারে প্রতি বছর বরাইল পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় বর্ষার প্রকোপ বাড়ছে। তাতে বাড়ছে আশঙ্কা এবং ঝুঁকি। চলতি মরশুমেও এই ঝুঁকি বহাল রয়েছে বলে খবর। আরও খবর যে, এই ঝুঁকি ও শঙ্কা আরও বাড়তে পারে। যাবতীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা অবলম্বন করে অত্যন্ত ঢিমেতালে ট্রেন চলাচল করার পরও ঝুঁকি পুরোপুরি এড়ানো সম্ভব হবে না, হচ্ছেও না। আর এই বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষকে। আগরতলা-গুয়াহাটি-আগরতলা অথবা শিলচর-গুয়াহাটি-শিলচর রেলপথের একমাত্র বিকল্প পাহাড়ি রেলপথ। উভয় ভায়া বদরপুর জংশন ও লামডিঙ জংশন স্টেশন হয়ে গুয়াহাটি সহ দেশের মূল ভূখণ্ডে রেলপথে আসা-যাওয়া করতে হয়। লামডিঙ জংশন স্টেশনকে পাশ কাটিয়ে চলাচলের একটি বিকল্প ব্যবস্থা অবশ্য আছে। সেই ক্ষেত্রে লামডিঙ জংশন স্টেশনের আগের স্টেশন মান্দারডিসা ও লামসাগাঙ হয়ে চলাচলের সুবিধা আছে। তাতে দূরত্ব ও সময় বাঁচে কিছুটা হলেও। তবে কোনোও অবস্থায়ই পাহাড়ি রেলপথ এড়িয়ে চলাচলের উপায় নেই।