September 16, 2025

পরিত্যক্ত কয়লাখনিতে ‘অমূল্য’ সাদা হাইড্রোজেনের ভাণ্ডার ফ্রান্সে।

 পরিত্যক্ত কয়লাখনিতে ‘অমূল্য’ সাদা হাইড্রোজেনের ভাণ্ডার ফ্রান্সে।

পরিত্যক্ত একটি কয়লাখনিতে মিথেন সন্ধানে
গবেষণা শুরু করেছিলেন একদল ফরাসি বিশেষজ্ঞ। কিন্তু মিথেনের বদলে তারা মাটির গভীরে যে খনিজের সন্ধান পেলেন, জ্বালানি- শক্তি হিসাবে তাকে অমূল্য বললেও কম বলা হবে। সেই খনিজ হল বিরল সাদা হাইড্রোজেন। এই ঘটনার পর স্বভাবতই গর্বে ফুটছে ফরাসি সরকার। ঠিক কী ভাবে পাওয়া গেল সাদা হাইড্রোজেনের ভান্ডার ? ফরাসি মিডিয়া সূত্রে খবর, ফ্রান্সের উত্তর- পূর্বে লোরেন এলাকায় একটি পরিত্যক্ত কয়লাখানিতে গবেষ্ণণা চালাচ্ছিলেন লোরেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক। মূলত তারা মিথেন গ্ল্যাসের সন্ধানে নেমেছিলেন।
ওই পরিত্যক্ত কয়লাখনিতে মিথেন থাকলেও তার পরিমাণ জানতে বেশি উৎসুক ছিলেন গবেষকরা।কিন্তু অনেক অনুসন্ধানের পরেও তারা ওই কয়লাখ নিতে সেভাবে মিথেনের অস্তিত্ব না পেয়ে খানিকটা হতাশই হন। অবশেষে মিথেনের পরিবর্তে তাদের হাতে এসেছে আরও মূল্যবান, আরও গুরুত্বপূর্ণ খনিজ শক্তি সাদা হাইড্রোজেন। গবেষকরা দাবি করেছেন, এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাদা হাইড্রোজেনের ভান্ডার হতে পারে। গবেষকদের অনুমান সঠিক হলে, ওই অঞ্চলে মোট ৪৬০ লক্ষ টন সাদা হাইড্রোজেন মজুত রয়েছে, যা গোটা ইউরোপকে পরিবেশে দূষণ সৃষ্টিকারী জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের থেকে মুক্তি দিতে পারে।প্রসঙ্গত, লোরেনের পরিত্যক্ত কয়লাখনি ছাড়াও ফ্রান্সে আরও বেশ কিছু জায়গায় সাদা হাইড্রোজেনের খোঁজ মিলেছে।ভূবিজ্ঞানী অ্যালাইন প্রিঞ্জোফার এবং এরিক ডারভিল মালি আমেরিকা এবং মালিতে অনেক গুলি ভূগর্ভস্থ জলাধার থেকে প্রাকৃতিক হাইড্রোজেনের খোঁজ পেয়েছেন।তবে সেই হাইড্রোজেন আদৌ ব্যবহার্য কি না সংশয় রয়েছে।কী এই সাদা হাইড্রোজেন?সাদা হাইড্রোজেন হল প্রাকৃতিক হাইড্রোজেন যা গোল্ডেন হাইড্রোজেন নামেও পরিচিত। প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্ট এই আণবিক হাইড্রোজেন পৃথিবীর বুকে পাওয়া যায়। মূলত ভূগর্ভস্থ জলাধারে এই প্রাকৃতিক হাইড্রোজেনের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়।গবেষণাগার বা শিল্পে উৎপাদিত হাইড্রোজেনের থেকে প্রাকৃতিক হাইড্রোজেন একেবারে আলাদা।পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির উৎস থেকে জলের তড়িৎ বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাকৃতিক হাইড্রোজেন তৈরি হয়।অন্য দিকে ধূসর, বাদামি এবং কালো হাইড্রোজেন তৈরি হয় জীবাশ্ম উৎস থেকে।এই সব হাইড্রোজেন উৎপন্ন করার সময় কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন হয়, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক।এ ছাড়া আরও অনেক ক্ষতিকারক গ্রিনহাউস গ্যাস এই হাইড্রোজেনগুলি উৎপাদনের সময় নির্গমন হয়।সেখানে প্রাকৃতিক হাইড্রোজেন পুনর্ব্যবহারযোগ্য।এই হাইড্রোজেন পুড়লে পরিবেশ দূষিত হয় না। আর সেই কারণেই এই হাইড্রোজেনকে ‘সাদা’ বলা হয়। তাছাড়া কারখানায় তৈরি হাইড্রোজেন তৈরিতে যে খরচ হয়, প্রাকৃতিক হাইড্রোজেনের ক্ষেত্রে খরচের পরিমাণ যৎসামান্য।খুব কম খরচেই এই হাইড্রোজেন সংগ্রহ করে ব্যবহার করা যায়। ভবিষ্যতে সাদা হাইড্রোজেনের একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং অফুরন্ত শক্তির উৎস হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।আর সেই কারণেই এই হাইড্রোজেন এত মূল্যবান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *