স্মার্ট সিটি না স্মার্ট লুট? শহরের ড্রেন ফুটপাথ নিয়ে ক্ষোভের ঝড়!!
ন্যায় বিচারের অধিকার ও আইনের শাসন-শীর্ষক সেমিনার,বিচার ব্যবস্থায় শীর্ষস্থানে ত্রিপুরা: গৌড়!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- রাজ্যের বিচারব্যবস্থা দেশের শীর্ষস্থানে রয়েছে। গত তিন বছর ধরে বিচার ব্যবস্থা দেশের প্রথম স্থানে রয়েছে রাজ্য। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তিতেও দেশের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে ত্রিপুরা। বিচার ব্যবস্থা গুণগত দিক দিয়েও এগিয়ে রয়েছে রাজ্য। আজ এমনটাই বললেন ত্রিপুরা হাইকোর্টের বিচারপতি ড. টি অমরনাথ গৌড়।
তিনি বলেন, রাজ্যে নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালত পর্যন্ত মামলা নিষ্পত্তিতে দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে ত্রিপুরা। অথচ ত্রিপুরাতেও বিচারপতি এবং বিচারক প্রয়োজন অনুযায়ী নেই। এরপরও বিচার ব্যবস্থায় কোনো বাধা আসছে না। যা সম্ভব হয়েছে রাজ্যের বিচারপতি, বিচারক, আইনজীবী, আইন ব্যবস্থার সাথে যুক্ত অন্যদের সহযোগিতার জন্যে।সোমবার ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্টবিজ্ঞান বিভাগ আয়োজিত ‘ন্যায় বিচারের অধিকার ও আইনের শাসন’ শীর্ষ সেমিনারের আয়োজন করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথিশালার সভাগৃহে। এদিন সেমিনারে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গঙ্গা প্রসাদ প্রসিনকে পাশে বসিয়ে বিচারপতি ড. টি অমরনাথ গৌড় বলেন, তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের অধীনে এক সময় প্রায় দুই লক্ষ ত্রিশ হাজার মামলা শুনানির জন্য অপেক্ষারত ছিল। তিনি তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের বিচারপতি হিসাবে থাকাকালীন অবস্থা এর মধ্যে প্রায় ত্রিশ শতাংশ মামলার নিষ্পত্তি করেছেন।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত বিভিন্ন রাজ্যে ৯২ হাজার মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে তার কোর্টে। দেখা গেছে প্রত্যেকটি মামলার ক্ষেত্রেই দুই পক্ষই খুশি ছিলেন। তিনি বলেন, এর মধ্যে অধিকাংশ মামলার ক্ষেত্রে দেখা গেছে ডিভিশন বেঞ্চে এবং সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়নি। প্রত্যেক দিনের হিসাব করলে দেখা যায় ১০৯টি মামলার নিষ্পত্তি প্রতিদিন হয়েছে।
তিনি ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, নেশা আসক্তি এখন আমাদের কাছে নয়া বিপদ। নেশা আসক্তির প্রলোভনে পড়ে বাড়ছে এইচআইভি পজিটিভরোগীর সংখ্যা। এক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের তিনি সতর্ক থাকার আহ্বান জানান। এ ধরনের সেমিনার আয়োজনের জন্য ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রশংসা করেন।

ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর গঙ্গা প্রসাদ প্রসিন বলেন, রাজ্যের গবেষক ছাত্রছাত্রীদের জন্য নয়া দিগন্তের সূচনা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে। গবেষণামূলক কাজের জন্য সারা দেশে সুনাম অর্জন করেছে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়। শুধু তাই নয় জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সেমিনার করার ক্ষেত্রে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় দেশের মধ্যে অন্যতম স্থানে রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক অধ্যাপিকাদের জন্যেই তা সম্ভব হয়েছে। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহ সকল স্তরের অধ্যাপক অধ্যাপিকা গবেষক ও ছাত্রছাত্রীদের প্রশংসা করেন।
স্বাগত ভাষণে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রফেসর অলক ভট্টাচার্য বলেন, আইনের শাসন নিশ্চিত করে যে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয় এবং আইন সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। ন্যায় বিচার হল সেই বাস্তব সেতুবন্ধন, যা আইনি নীতি ও মানবিক মূল্যবোধকে একত্রিত করে- শুধু আইনের বইয়ে নয়, মানুষের জীবনে তা বাস্তবায়ন করে। প্রাচীন দার্শনিক প্লেটো তাঁর আদর্শ রাষ্ট্রধারণায় ন্যায় বিচারকে স্বাস্থ্যের সাথে তুলনা করেছেন- যেমন একটি সুস্থ দেহের জন্য সব অঙ্গের সমন্বয় দরকার, তেমনই ন্যায় বিচারের জন্য সমাজের প্রতিটি অংশের সুষ্ঠু ভারসাম্য দরকার। তার মতে, শাসকরা জ্ঞানী হবে, সহায়তাকারীরা সাহসী হবে এবং উৎপাদনশীল শ্রেণী তাদের কর্মে মনোযোগী হবে এভাবেই সমাজের প্রতিটি অংশ তাদের ভূমিকা পালন করবে। ন্যায় বিচার হল প্রতিটি মানুষকে তাদের যথাযথ স্থান ও উদ্দেশ্য প্রদান করা, অন্যের কাজে অযথা হস্তক্ষেপ না করা। দুদিনব্যাপী জাতীয় সেমিনারে বক্তব্য রাখেন, মুম্বাইয়ের ফোরম ফর ফাস্ট জাস্টিস-এর চেয়ারম্যান ভাগবানজি রায়ানি, ফার্স্ট জাস্টিস ত্রিপুরা অধ্যায়ের সভাপতি প্রফেসর রাজ কচ্ছরু, ট্রাস্টি ড. অঞ্জলি চক্রবর্তী এবং শিশু অধিকার কর্মী ড. রবিন রোমিং প্রমুখ। নয়াদিল্লীর ন্যাশনাল ফেডারেশন অব সোসাইটি ফর ফার্স্ট জাস্টিস (এনএফএসএফজে)-র সহযোগিতায় সেমিনার হচ্ছে ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে।