December 15, 2025

নির্লজ্জ গোষ্ঠীকোন্দল!!

 নির্লজ্জ গোষ্ঠীকোন্দল!!

রাজ্য বিজেপিতে নির্লজ্জ গোষ্ঠীকোন্দল চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।যত দিন যাচ্ছে, কোন্দলের মাত্রা ততই বেড়ে চলেছে। পরিস্থিতি এখন এতটাই ভয়ানক হয়ে উঠেছে যে, কোন্দলকে আর ঘরের চার দেওয়ালের ভিতর আটকে রাখা যাচ্ছে না কিছুতেই। দেওয়াল ভেঙে অনেক আগেই প্রকাশ্যে রাজপথে নেমে এসেছে। শাসক দলের এই গোষ্ঠীকোন্দল দেখে বিরোধী দল এবং দলের নেতানেত্রীরা খুশিতে আত্মহারা হচ্ছেন। কেননা, বিরোধী দলগুলিকে এখন আর কোনও পরিশ্রম করতে হচ্ছে না। শাসকদলের বিরুদ্ধে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচী গ্রহণ করতে হচ্ছে না। রাজপথে নেমে শাসকের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে হচ্ছে না। শাসক দলের বিরুদ্ধে জনমত তৈরির জন্য কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচী, আন্দোলন সংগঠিত করতে হচ্ছে না। ফলে বিরোধী দলগুলি বেজায় খুশি। কারণ, বিরোধী দলের যাবতীয় কাজ এখন শাসক দলই নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, আন্তরিকভাবে সেই দায়িত্বও পালন করে চলেছে বর্তমান শাসকদল। শাসকের নির্লজ্জ এবং নগ্ন গোষ্ঠীকোন্দলই বিরোধীদের কাজকে সহজ এবং অনেকটা সুবিধা করে দিচ্ছে বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত।
বর্তমানে রাজ্য বিজেপির অন্দরে গোষ্ঠী বিবাদ এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে, যার নগ্ন রূপ দেখে রাজ্যবাসীও হতবাক। সামাজিক মাধ্যম গুলোতে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এসব দেখে রাজ্যবাসী যেমন হতাশ, তেমনি হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছে দলের সমর্থকরাও। সকলের মুখে একটা প্রশ্ন- এসব কি চলছে? অনেকেই বলছেন, রাজনৈতিক দলে মতোবিরোধ, গোষ্ঠীবিবাদ একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। সব রাজনৈতিক দলের অন্দরেই এই ধরনের মতোবিরোধ, গোষ্ঠীবিরোধ থাকে। কিন্তু একটি সুশৃঙ্খল এবং কঠোর অনুশাসন মেনে চলা একটি রাজনৈতিক দলের এমন মতবিরোধ এবং গোষ্ঠীবিবাদ পার্টি অফিসের চার দেওয়ালের ভিতরেই আবদ্ধ থাকে। বাইরে বেরিয়ে আসার কোনও সুযোগ থাকে না। বিশ্বের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। এনিয়ে কোনও দ্বিমত নেই। এই দলটিকে একটি সুশৃঙ্খল, নীতি আদর্শ এবং কঠোর অনুশাসন মেনে চলা একটি রাজনৈতিক দল হিসাবেই রাজ্যবাসী ও গোটা দেশবাসী জানে। কিন্তু ত্রিপুরায় বিজেপি (শাসক দল) দল যেভাবে চলছে, যে পথে চলছে- তাতে এই ধারনা বারবার হোঁচট খাচ্ছে। দলের বর্তমান নেতা নেত্রী এবং কার্যকর্তারাই যেন দলের সর্বনাশ করতে একেবারে উঠে পড়ে লেগেছে। গোষ্ঠীকান্দলকে বর্তমান নেতৃত্ব এমন এক পর্যায়ে নিয়ে দাঁড় করিয়েছে যে, দলের ‘শৃঙ্খলা’ এবং ‘অনুশাসন’ এই শব্দ দুইটি এখন চরম অস্তিত্ব সংকটে পড়ে গেছে।
অনেকের দাবি, দলীয় কোন্দল আগেও ছিলো, কিন্তু এতটা নগ্নতা এর আগে দেখা যায়নি বা শোনা যায়নি। গত তিন থেকে সারে তিন বছরে রাজ্য বিজেপি’র অন্দরে গোষ্ঠী কোন্দল যেন একটা অন্য রূপ পেয়েছে। তা বাড়তে বাড়তে এখন এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে, পুরো দলটাই নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের অভিমত। এককথায় রাজ্য বিজেপি এখন অভিভাবকহীন। কারো হাতে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। কোনো শৃঙ্খলা নেই। কোনোও দলীয় অনুশাসন নেই। যে যার মতো চলছে। যে যার খুশি মতো কর্মসূচী পালন করছে। যে যার খুশি মতো কথা বলছে। সর্বশেষ কমলাসাগর মতিনগরের ঘটনা। একদিকে শরিকি দন্দ, অন্যদিকে শাসকের চরম গোষ্ঠীকোন্দল, সব মিলিয়ে রাজ্যের পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। সব থেকে বিস্ময়কর ঘটনা হলো, দলের এই হতচ্ছিড়ি অবস্থাকে দলেইর একটা মহল থেকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। দলের একটি বৃহৎ অংশকে নানা ভাবে কোনঠাসা করার প্রয়াস চলছে প্রতিনিয়ত। যে কারণে বিবাদ এখন রাজপথে নেমে আসছে।
এভাবে চলতে থাকলে ২০২৮ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না। তার আগেই বিদায় নিতে হবে বর্তমান সরকারকে। এমনটাই মনে করছে রাজ্যবাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *