December 13, 2025

নিপুণ ফেস্ট-এ মুখ্যমন্ত্রী,প্রকৃতির কাছে শিক্ষা নিতে হবে আমাদের!!

 নিপুণ ফেস্ট-এ মুখ্যমন্ত্রী,প্রকৃতির কাছে শিক্ষা নিতে হবে আমাদের!!

অনলাইন প্রতিনিধি:–নিপুণ ত্রিপুরা মিশনের সাফল্যে শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানী আগরতলার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে আয়োজিত জেলাভিত্তিক নিপুণ ফেস্ট-এর উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বলেন, শিক্ষা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং শিক্ষা ছাড়া কোনও কিছুই সম্ভব নয়। আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সর্বদাই জোর দিয়েছেন যে আগামী ভবিষ্যৎ শিক্ষার উপর নির্ভর করবে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, আমাদের অবশ্যই প্রকৃতির কাছ
থেকে শিক্ষা নিতে হবে।শিক্ষার মাধ্যমেই তিনি বলেন, ২০২১ সাল থেকে শুরু হওয়া নিপুন মিশন অপরিহার্য ছিলো। শিক্ষকদের উদ্দেশে অনুরোধ করে তিনি বলেন, প্রত্যেকের পরিবার, ব্যক্তিগত জীবন ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই সমস্যা রয়েছে। এরমধ্যেও আপনারা ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের সামনে হাসুন। কারণ ছোট শিশুদের মনে এই ধরনের বিষয়কে আকর্ষণ করবে। আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, নিপুণ ত্রিপুরা মিশনের সাফল্য পূরণে শিক্ষকরাই মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন। এটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রবর্তিত জাতীয় শিক্ষা নীতির অংশ এবং পার্সেল।
মুখ্যমন্ত্রী তার ভাষণে এদিন শিশুদেরকে খেলার মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানের কথা বলেন। এ থেকেই শিশুরা অনেক বেশি উপকৃত হবে। শিক্ষকদের বুঝতে হবে ছাত্রছাত্রীদের যে বিষয়টি বোঝানো হলো তা বুঝতে পারছে কিনা। যারা বুঝতে পারছে না, শিক্ষকদেরকে সেসব ছাত্রছাত্রীদের আরও বেশি করে সময় দিতে হবে। আমরা যদি তাদের অবহেলা না করি তাহলেই ভালো ফলাফল পেতে পারি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালে রাজ্যে নিপুণ ত্রিপুরা চালু হয়। এই নিপুণ ত্রিপুরার অধীনে প্রায় ৪,২০০ টি বিদ্যালয় রয়েছে। আগামীদিনে এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, মূল লক্ষ্য হচ্ছে অবশ্যই সমাজের অন্তিম স্তর পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে আমাদের। শিক্ষকরা হচ্ছেন মূল ভিত্তি এবং আপনার নিজের সন্তানের মতোই শিশুদের জন্য সময়ের বাইরে গিয়েও কাজ করতে হবে। অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে শিক্ষা দপ্তরের বিশেষ সচিব রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, শিক্ষা অধিকর্তা এন সি শর্মা, অধিকর্তা রাজীব দত্ত সহ বিভিন্ন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং আরও অনেকেই উপস্থিত ছিলে।বিগত তিন মাসে সারা রাজ্যে ৪১০৭টি নিপুণ বিষয়ে সচেতনতামূলক র‍্যালি আয়োজিত হয়েছে। রাজ্যের প্রত্যন্ততম অঞ্চল যেখানে নৌকার মাধ্যমেই মূলত যোগাযোগ রক্ষা করা হয়, সেরকম অঞ্চলের অভিভাবকদের মধ্যে নিপুন বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে আয়োজিত হয় বর্ণাঢ্য বোট র‍্যালি যাতে বুনিয়াদী শিক্ষা অধিকারের অধিকর্তা রাজীব দত্ত এবং স্টেট নিপুণ নোডাল অফিসারও উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া শিক্ষক শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের যৌথ উদ্যোগে বাংলা এবং ককবরক ভাষায় ২৭৬৮টি পথ নাটক আয়োজিত হয়েছে। পাশাপাশি নিপুণ মিশনের অধীন ৪২০৯টি বিদ্যালয়েই দুই বার করে শিক্ষক অভিভাবক সম্মেলনও আয়োজিত হয়েছে। আজকের এই নিপুণ ফেস্ট অনুষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ১০০ জন ছাত্রছাত্রীকে বিগত তিন মাসে ভাষাগত এব গাণিতিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির জন্য পুরস্কৃত করা হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্যের প্রতিটি জেলার জেলা শিক্ষা আধিকারিকদেরও তাদের বিশেষ অবদানের জন্য সম্মানিত করা হয়েছে। সেই সাথে তেলিয়ামুড়া, জিরানীয়া, বিশালগড় কমলপুর, জোলাইবাড়ি, চড়িলাম, কুমারঘাট, করবুক এবং কদমতলা ইন্সপেক্টর অফ স্কুলকেও নিপুণ ফেস্ট চলাকালে বিশেষ বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করার জন পুরস্কৃত করা হয়েছে। পাশাপাশি আট জেলার নিপুণ কো-অর্ডিনেটরদেরকেও তাদের ক্রমাগত প্রচেষ্টার জন্য সম্মানিত করা হয়েছে।
পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা থেকে তিন জন করে ইন্সপেক্টর অফ স্কুল এবং ব্লক রিসোর্সপার্সন ও ক্লাস্টার রিসোর্সপার্সনকেও বিগত তিন মাসে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পুরস্কৃত করা হয়েছে।
সেই সাথে অনুষ্ঠান মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রীর হাত দিয়ে ‘ফ্রম বাডস টু ব্রিলিয়েন্স-নিপুণ ত্রিপুরা’ শীর্ষক নিপুণ মিশনের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং বাস্তবায়নের নিয়ে একটি পুস্তিকার আবরণ উন্মোচন করা হয়েছে।
বিগত তিন মাসে নিপুণ ফেস্ট কর্মসূচির সার্থকতা বিবেচনা করে এই কর্মসূচি বিদ্যালয়স্তরে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বুনিয়াদী শিক্ষা অধিকারের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *