October 20, 2025

নিগমের ১৬ কোটি জালিয়াতি মামলা সিবিআই-কে তদন্ত দিতে তোড়জোড়!!

 নিগমের ১৬ কোটি জালিয়াতি মামলা সিবিআই-কে তদন্ত দিতে তোড়জোড়!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- পুর নিগমের ষোল কোটি টাকার চেক জালিয়াতির মামলার তদন্ত যাচ্ছে সিবিআইয়ের হাতে। ইউকো ব্যাঙ্ক থেকে টাকা রাজ্যের বাইরে পাঠিয়ে দেওয়ার মামলায় রাজ্য পুলিশের ব্যর্থতার কারণেই মামলা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে চাইছে স্বরাষ্ট্র দপ্তর। এমনকী তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশ অফিসাররাও চাইছেন সিবিআইকে দায়িত্ব তুলে দিতে। গত ছয় সেপ্টেম্বর পশ্চিম আগরতলা থানায় ইউকো ব্যাঙ্কের আঞ্চলিক ম্যানেজার ষোল কোটি টাকা জালিয়াতির মামলাটি করেছিলেন। প্রথমে পশ্চিম আগরতলা থানা মামলার তদন্ত করে প্রাথমিকভাবে সাত কোটি টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাবের ফলে তদন্ত আর এগিয়ে যায়নি। রাজনৈতিক নেতারা আগে থেকেই মামলা নিয়ে নিজেদের বক্তব্য রাখতে শুরু করে দেন।খোদ মেয়র মন্তব্য করেন পুর নিগমের কেউ এই জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত নন। এটা ইউকো ব্যাঙ্কের ব্যাপার। অথচ পুর নিগমের এক ক্যাশিয়ারের নাম বার বার তদন্তে উঠে আসে। যে চেকগুলি ক্লোন করা হয়েছিল, এগুলি সব পুর নিগমের কাছেই রয়েছে। তাহলে কীভাবে এই চেক প্রতারকদের কাছে গেলো? পুর নিগমের ক্যাশিয়ার, অ্যকাউন্টেন্ট কীভাবে এই দুর্নীতি থেকে ছাড় পেলো? একজন ব্যক্তি পুর নিগমের কর্মী পরিচয় দিয়ে চেকগুলি নিয়ে একাধিকবার ইউকো ব্যাঙ্কের আগরতলা শাখায় গেছেন। সেখানে ক্যাশিয়ার রামিয়ানি শ্রীময়িকে দিয়ে চেক আরটিজিএস করিয়েছেন। হায়দরাবাদ ছাড়াও একাধিক রাজ্যের ভুয়ো কোম্পানির অ্যাকাউন্টে ষোল কোটি টাকা গেছে। পুলিশ তদন্তে এই পথে এগিয়ে যেতে পারছিল না। যে কারণে পশ্চিম জেলার পুলিশ সুপার নমিত পাঠক তদন্তের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব নাথের নেতৃত্বে চার পুলিশ অফিসারের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম তৈরি করেন। এই টিম চাপে পড়ে ইউকো ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার রামিয়ানিকে গ্রেপ্তার করে। তাকে তিনদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করে। এখানেই তদন্ত থমকে যায়। সিটের অফিসাররা প্রভাবশালী প্রতারকদের কাছে হার মেনে নেন। পরে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক অনুরাগ তদন্তের দায়িত্ব তুলে দেন ক্রাইম ব্রাঞ্চে ইকোনমিক অফেনসেস শাখায়। এই শাখার এসপি পিয়ামাধুরি মজুমদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সৌভিক দে-র আর্থিক জালিয়াতির বড় মামলায় সাফল্য বলতে কিছুই পুলিশের রেকর্ডে নেই। তাদের অভিজ্ঞতাও কম। তারা শ্রীময়িকে আবারও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ডে নেয়। এখন শ্রীময়ি রিমান্ড শেষ করে আবারও জেল হাজতে। অথচ ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসাররা নতুন করে একটি টাকাও উদ্ধার করে আনতে পারেননি।এমনকী আর কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
কে চেক জমা করেছিলেন?কে মূল অভিযুক্ত? টাকাগুলি কোথায় আছে? এসব প্রশ্নের জবাব এক মাসের উপর ধরে তদন্ত করে রাজ্য পুলিশ খুঁজতে পারেনি। ক্রাইম ব্রাঞ্চের পুলিশ অফিসাররাও রাজনৈতিক চাপের ঊর্ধ্বে উঠে তদন্ত করতে পারছেন না। যে কারণে পুলিশ সদর দপ্তরে আলোচনা চলছে ষোল কোটির জালিয়াতির মামলা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে। এ জন্য ইতিমধ্যেই নাকি পুলিশের এক অফিসার সিবিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই মামলার তদন্তের দায়িত্ব নিতে পারে সিবিআই। আগরতলায় সিবিআইয়ের একটি অফিস রয়েছে। উল্লেখ্য দেশে ব্যাঙ্ক জালিয়াতির হাজার হাজার কোটি টাকার মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। এই ক্ষেত্রে মাত্র ষোল কোটি টাকার তদন্তে সিবিআই কতটুকু আগ্রহী হবে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। রাজ্যের দুই সাংবাদিক হত্যা মামলার তদন্তও সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছিল সরকার।আট বছর পরও অভিযুক্তদের বিচার হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *