August 2, 2025

দেবালয় রক্ষা পায় না!!

 দেবালয় রক্ষা পায় না!!

আয়তনের দিক থেকে বিশ্বের ৩৩ম বৃহত্তম দেশ পাকিস্তান।কিন্তু ঋণের জালে জর্জরিত পাকিস্তান দেশটির আর্থিক অবস্থা এখন কার্যত দেউলিয়া। ভিক্ষার ঝুলি হাতে নিয়ে দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর ধরে দেশটির রাজনৈতিক নেতারা বিশ্বের এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে ছোটাছুটি করছেন।সন্ত্রাসী জঙ্গিদের আঁতুড়ঘর পাকিস্তান গত তিরিশ বছরের বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন আর্থিক তহবিল কিংবা বিভিন্ন দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়ে টিকে আছে। অথচ দেশটি বিভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহ করা ঋণের টাকা কখনোই সঠিক কাজে ব্যবহার না করে, সীমান্ত অপরাধ, জঙ্গি প্রশিক্ষণ এবং সন্ত্রাসীদের ভরণপোষণ ও অস্ত্র সংগ্রহের কাজে ব্যবহার করে আসছে। ঋণ গ্রহণের সময় একটি দেশকে যে সব শর্ত মানতে হয়, পাকিস্তান প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিয়ম লঙ্ঘন করে সেই টাকা বেপথে খরচ করেছে।
গত ৩০ বছরের মধ্যে টানা ২৮ বছর ধরে পাকিস্তান বিশ্বব্যাঙ্ক অর্থাৎ আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার থেকে সাহায্য ও ঋণ নিয়ে চলেছে।অথচ বিস্ময়কর ঘটনা হলো রাষ্ট্রপুঞ্জ থেকে শুরু করে তাবড় দুনিয়ার সব বড় শক্তির কাছে পাকিস্তানের সন্ত্রাসী চরিত্রের কথা অজানা নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যাণ্ড, ইউরোপের বিভিন্ন রাষ্ট্র, রাশিয়া সকলের কাছেই পাকিস্তানের সন্ত্রাসী চেহারার স্বরূপ স্পষ্ট। অতীতের এই ট্র্যাক রেকর্ড থাকার পরেও পাকিস্তানকে আবারও প্রায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার অতিরিক্ত ঋণ মঞ্জুর করেছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার অর্থাৎ আই এম এফ।প্রতিবারই পাকিস্তানকে ঋণ দেওয়ার সময় সন্ত্রাসবাদে লাগাম টানার প্রতিশ্রুতির কথা পাকিস্তানের মুখ থেকে আদায় করা হয়। কিন্তু পাকিস্তানের এই প্রতিশ্রুতিগুলো কতটা ফাঁপা সেটা তো লস্কর, আল-কায়দা, জৈশ ই- মহম্মদের মতো জঙ্গি সংগঠনগুলোকে ঘরে দুধ কলা দিয়ে পোষা এবং বিনিময়ে ভারতের সীমান্ত পেরিয়ে ধারাবাহিক সন্ত্রাস ও জঙ্গি তৎপরতা চালানোর ঘটনার মধ্যে দিয়েই গোটা বিশ্ব জনমতের কাছেই দিনের আলোর মতোই বিষয়টি পরিষ্কার।আর এর সর্বশেষ নজির তো পহেলগাঁও ঘটনা। যার জের ধরে ভারত পাক যুদ্ধজনিত পরিস্থিতি চলেছে গোটা এলাকাজুড়ে। ইতিমধ্যে ভারত সহ কয়েকটি দেশ পাকিস্তানকে এই ভাবে ঋণ দেওয়ার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এই ধরনের আর্থিক সাহায্য আসলে যে সন্ত্রাসবাদকে মদত দেওয়া এবং পাকিস্তান নামক একটি সন্ত্রাসী দেশকে পুরস্কৃত করার শামিল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এতে করে বিশ্বব্যাঙ্ক নামক সংস্থা যেমন বিশ্বজুড়ে হাসির খোরাক হবে, তেমনি মানবিক মূল্যবোধ মাথা ঠুকরে কাঁদবে।
আসলে সন্ত্রাসবাদের জন্মদাতা ও লালপালন কর্তা পাকিস্তানকে বিশ্বব্যাঙ্কের ঋণ দেওয়ার মানেই হল বকলমে বিশ্বের শান্তিপূর্ণ জনমতের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদকে শক্তিশালী করা। হতে পারে আইএমএফ যখন কোন দেশকে আর্থিক ঋণ প্রদান করে তখন রাজনৈতিক কিছু বিচার বিবেচনা প্রাধান্য পায়। যেহেতু চিন, সৌদি আরব, কাতারের মতো দেশের সঙ্গে পাকিস্তানের সুসম্পর্ক রয়েছে সেই রাজনৈতিক সমীকরণ মাথায় রেখে এবং উপমহাদেশে ভারসাম্যের রাজনীতির কারণে কোন অদৃশ্য প্রশ্রয় পাকিস্তানের ঋণ পাওয়ার পেছনে কাজ করে থাকে। কিন্তু একটা কথা মাথায় রাখা জরুরি, পাকিস্তান বিগত চার দশক ধরে যেভাবে সন্ত্রাসবাদ ভারতের বুকে রপ্তানি করে চলেছে সেটা চলতে থাকলে তা একদিন বিশ্বকেও জ্বালিয়ে পুড়িয়ে খাক্ করে ছাড়বে। নগরে আগুন লাগলে দেবালয়কে যেমন রক্ষা করা যায় না, তেমনি মানবতার বীভৎস শত্রু পাকিস্তানের সন্ত্রাসী আগুনে একদিন গোটা মানবসভ্যতা অস্তিত্বের সংকটে দাঁড়াতে পারে। এবোটাবাদে অপারেশন ওসামা বিন-লাদেন নিশ্চয় বিশ্ববাসীর ভুলে যাওয়ার কথা নয়। তাই সাধু সাবধান। আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার আইএমএফের এই ভন্ডামি এবং আইএমএফের তথা বিশ্বব্যাঙ্কের মুরুব্বিদের ইচ্ছা-অনিচ্ছায় বিশ্ব আর্থ-রাজনৈতিক পরিমণ্ডল হয়তো নিয়ন্ত্রিত হয়। কিন্তু সব কথার শেষ কথা বলে থাকেন জনগণই।সেই চিরন্তন সত্য কখনোই অর্থশক্তি ও রাজনৈতিক শক্তির জেরে অসত্য হয়ে যায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *