August 1, 2025

দুর্বল বিদেশনীতি!

 দুর্বল বিদেশনীতি!

ভারতের বিদেশনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী।রাহুল গান্ধী বলেছেন,ভারতের বিদেশনীতি সত্যিকার অর্থেই দুর্বল। মূলত ভারত-পাক যুদ্ধ, মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণার দাবি ইত্যাদি নিয়েই সরকারকে আক্রমণ করেছেন রাহুল গান্ধী এবং দুর্বল বিদেশনীতির তত্ত্বও সামনে এনেছেন রাহুল গান্ধী। এই দুই ইস্যুতেই বর্তমানে মোদি সরকারকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি তিনি।এমন সময় মোদিকে তিনি খোঁচা দিয়েছেন যেসময় মোদি বিদেশে।
এছাড়াও গত কয় বছর ধরে চিনের সাথে ভারতের সম্পর্ক নিয়েও সরব বিরোধীরা। বিশেষ করে লাদাখ এবং অরুণাচল সীমান্তে চিনের দাদাগিরি ইস্যুতে সরকারের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল বিরোধীরা। কিন্তু সরকার বরাবরের মতোই ‘কিছুই হয়নি’ গোছের মন্তব্য করে দায়িত্ব শেষ করেছে।
সম্প্রতি ভারত-পাক যুদ্ধের তিন-চারদিনের মধ্যেই আচমকা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হয়ে যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে সেই ঘোষণা করে বসেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয়, প্রায় ২৫বার এখন পর্যন্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন যে ভারত-পাক যুদ্ধ বন্ধ তিনিই করিয়েছেন। একবার তিনি বলছেন, ভারতকে বাণিজ্য বন্ধের হুমকি দিয়ে তিনি যুদ্ধ বন্ধ করেছেন।অন্যবার বলছেন, দুদেশের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। তরাং এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ভেবেই তড়িঘড়ি যুদ্ধ বন্ধ করার আাষণা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।মার্কিন রাষ্ট্রপতি সুযোগ পেলেই তা দাবি করছেন।কিন্তু ভারতের তরফে একবারও এর কোনো জুতসই ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি বা প্রধানমন্ত্রী এ নিয়ে
কোনো উচ্চবাচ্য করেননি বা ভারতীয় বিদেশমন্ত্রীও ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি নিয়ে একবারও কোনো মন্তব্য করেননি। আর এখানেই কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বক্তব্য- তাহলে “ডাল মে কুছ কালা তো হ্যায়”।
প্রশ্ন হল, ভারতীয় তরফে কিছু বলা হচ্ছে না কেন? প্রধানমন্ত্রী নীরব। এটাই রহস্যের জন্ম দিয়েছে। কানাডায় কিছুদিন আগে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী মোদি যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পও যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু মোদি-ট্রাম্প সাক্ষাৎ হয়নি, কোনো বৈঠকও হয়নি। ধারণা করা গেছিল অপারেশন সিন্দুর পরবর্তী সময়ে মোদি-ট্রাম্প কথা হবে এবং এ বিষয়ে একটা স্পষ্টীকরণ মিলবে। কিন্তু মোদি-ট্রাম্প কোনো কথা হয়নি, বৈঠকও হয়নি। তবে মোদি টেলিফোনে ট্রাম্পের সাথে কথা বলেন।
এর আগেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক ভারতীয় নাগরিকের পায়ে শেকল বাঁধা অবস্থায় ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। এই ছবি দেখে দেশ শিউরে ওঠেছিল। কিন্তু ভারতের তরফে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। বিরোধীরা এই ইস্যুতে হৈচৈ করলেও সরকার নীরবই থাকে। এ নিয়েও দেশের বিদেশনীতি নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিরোধীরা। সত্যিই কি ভারতের বিদেশনীতি দুর্বল। কেন ভারত এত অসহায় বোধ করছে কোনো বিবৃতি জারি করতে? পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ বন্ধের পর ভারতকে কেন সাংসদ প্রতিনিধি দল পাঠাতে হল দেশে দেশে। সেই সাংসদ প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে যেচে যেচে সহমর্মিতা আদায় করছে দেশ। কোনো দেশ কি আগ বাড়িয়ে ভারতকে সমর্থন করেছিল? এমন কথা তো শোনা যায়নি। সাংসদ প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে আখেরে দেশের কি কোনো লাভ হল? পাকিস্তানকে একঘরে করা গেল? সুতরাং ভারতের বিদেশনীতি নিয়ে প্রশ্ন কিন্তু রয়েই গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *