August 18, 2025

দীপাবলির উপহার!!

 দীপাবলির উপহার!!

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সামনের দীপাবলিতে দেশবাসীকে উপহার চলেছেন।কী সেই উপহার?সেটাও প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা প্রকাশ্যে আসতেই এ নিয়ে দেশজুড়ে চর্চা শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত শুক্রবার অর্থাৎ ১৫ আগষ্ট লালকেল্লা থেকে স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে ঘোষণা করেছেন যে, তাঁর সরকার এই বছরের দীপাবলির আগেই পরবর্তী প্রজন্মের জিএসটি সংস্কার চালু করবে। তিনি এই নতুন জিএসটি সংস্কারকে সমস্ত দেশবাসীর জন্য ‘অনেক বড় উপহার’ হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর দাবি, এতে দেশের সমস্ত অংশের জনগণের আরও অনেক বেশি সুবিধা হবে, অনেক বেশি লাভবান হবে এবং কর ব্যবস্থা আরও সরল হবে।
এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, এই সংস্কারগুলি কর ব্যবস্থার স্ল্যাব গুলির যৌক্তিকিকরণ হবে। একই সঙ্গে অত্যাবশকীয় ও দৈনন্দিন ব্যবহার্য সামগ্রী গুলির উপর জিএসটি হার হ্রাস করার দিকে মনোনিবেশ করবে সরকার। এই সংস্কারের মূল লক্ষ্য হলো, দেশের সাধারণ, অর্থাৎ গরিব, নিম্নমধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারগুলিকে সরাসরি -স্বস্তি দেওয়া এবং খরচ কমানো। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই দীপাবলির মধ্যে দেশবাসী একটি নতুন, আরও সরল জিএসটি কাঠামো দেখতে পাবে, যা সাধারণ মানুষের জীবনকে সহজ করে তুলবে এবং আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে।
লালকেল্লা থেকে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেছেন, উন্নত ভারতের ভিত্তি হলো আত্মনির্ভর ভারত। কেউ যদি অন্যের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে পড়ে, তাহলে স্বাধীনতার প্রশ্নটিই ম্লান হয়ে যেতে শুরু করে আত্মনির্ভর কেবল আমদানি, রপ্তানি, রুপি, পাউন্ড বা ডলারের মধে সীমাবদ্ধ নয়। এর অর্থ আরও বিস্তৃত। আত্মনির্ভর সরাসরি আমাদেন শক্তির সাথে যুক্ত’ প্রধানমন্ত্রী এদিন দেশের তরুণ বিজ্ঞানী, প্রতিভাবান যুবক-যুবতী, ইঞ্জিনিয়ারদের উজ্জীবিত করে বলেছেন, আমাদে নিজস্ব ভারতে তৈরি যুদ্ধবিমানের জন্য জেট ইঞ্জিন থাকার গুরুত্ব মে করিয়ে দিয়ে এই কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী এদিন বলেছেন, ভারত মিশন মোডে সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে কাজ করছে এই বছরের শেষদিকে’মেড ইন ইন্দিয়া’ সেমিকন্ডাক্টর চিপ বাজারে আসবে।এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ থেকে ৫০-৬০ বছর আগে আমাদের দেশে সেমিকন্ডাক্টর নিয়ে কাজ শুরু হয়েছিল। সেমিকন্ডাক্টর কারখানার ধারণাটি ৫০-৬০ বছর আগেই এসেছিল। কিন্তু অঙ্কুরেই সেই ধারণা মারা গিয়েছে। আমরা ৫০-৬০ বছর হারিয়েছি।
এদিন, লালকেল্লায় দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী অনেক কথাই বলেছেন। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে দীপাবলির উপহার অর্থাৎ জিএসটি কর সংস্কারের ঘোষণা নিয়েই চর্চা বেশি হচ্ছে। দেশবাসীর নজর এখন সেই দিকেই।
২০১৭ সালের ১ জুলাই সারা দেশে জিএসটি চালু হয়েছিল। পরোক্ষ এই কর ব্যবস্থার ইতিমধ্যে আট বছরূ পূর্ণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যে ইঙ্গিত দিয়েছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে যে, আগামীদিনে মাত্র দুটি ধাপের জিএসটি হবে। ৫ এবং ১৮ শতাংশ। বর্তমানে ১২ শতাংশ জিএসটির আওতায় থাকা পণ্যের সিংহভাগ চলে আসবে ৫ শতাংশের অধীনে। আর ২৮ শতাংশ জিএসটি’র আওতায় থাকা পণ্যের সিংহভাগ চলে আসবে ১৮ শতাংশের অধীনে। যদি তাই হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের জন্য জিনিসপত্রের উপর কর উল্লেখযোগ্য ভাবে হ্রাস পাবে। কর হ্রাস পেলে জিনিসপত্রের দাম অনেকটাই কমবে। নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র অনেকটা সস্তা হবে। এতে সবথেকে বেশি উপকৃত এবং লাভবান হবেন দেশের আমজনতা। বিশেষ করে কম আয়ের জনগণ। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর ‘দীপাবলির উপহার’ ঘোষণার সাথে বাস্তবে কতটা মিল পাওয়া যায়? সেটাই এখন দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *