December 13, 2025

ত্রিপুরায় বিদ্যুৎ মাশুল আগের মতোই রয়েছেঃ দাবি কমিশনের!!

 ত্রিপুরায় বিদ্যুৎ মাশুল আগের মতোই রয়েছেঃ দাবি কমিশনের!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজ্যের বিদ্যুৎ গ্রাহকদের বারবার সময়মতো বিদ্যুতের বিল মিটিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে চলেছেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতনলাল নাথ। সময় মতো বিদ্যুৎ বিল পাওয়া গেলে রাজ্যে আরও উন্নত বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রদানে বিদ্যুৎ নিগম কাজ করতে পারবে। এ কথা জানিয়ে হুক লাইন বন্ধে সমাজের সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতাও চেয়েছেন মন্ত্রী। এদিকে, রাজ্য বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন জানিয়েছে, রাজ্যে বর্তমানে যে গ্রাহক-বান্ধব বিদ্যুৎ পরিষেবা তৈরি হয়েছে, তা বজায় রাখতেই বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রক কমিশন থেকে সরকার – সব পক্ষই বিদ্যুৎ মাশুল আগের মতোই অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, বিদ্যুতের প্রতি ইউনিট মাশুল আগের মতোই রয়েছে।কোথাও কোনও বৃদ্ধি হয়নি। আগে যে ট্যারিফ ছিল, এখনও ঠিক সেটাই চলছে।
বিদ্যুৎমন্ত্রী রতনলাল নাথ আগেই বলেছিলেন, সরকারের উদ্দেশ্য একটাই একটি সহজ-স্বচ্ছ গ্রাহক বান্ধব ব্যবস্থা ধরে রাখা। তার কথায়, সবাই নিয়মিত বিল মিটিয়ে দিলে অকারণে দাম বাড়ানোর প্রয়োজন পড়ে না। নিগম আর্থিক চাপে থাকলেও, এই স্থিতাবস্থা বজায় রাখা হয়েছে শুধুমাত্র গ্রাহকদের স্বার্থে। যাতে সাধারণ মানুষ কোনও অতিরিক্ত বোঝা না বহন করেন।
অন্যদিকে, ত্রিপুরা বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য নতুন ট্যারিফ অনুমোদন করলেও, স্পষ্ট করে দিয়েছে যে ২০২৪-২৫ সালের তুলনায় কোনও ক্ষেত্রেই এনার্জি চার্জ বাড়েনি। শহর-গ্রাম নির্বিশেষে গৃহস্থ গ্রাহক থেকে শুরু করে বাণিজ্যিক, শিল্প, সেচ, জল সরবরাহ, মোবাইল টাওয়ার কিংবা পাবলিক লাইটিং – সবার ক্ষেত্রেই প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহারের মাশুল একেবারে অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
কমিশন জানিয়েছে, গ্রামীণ অঞ্চলে শূন্য থেকে পঞ্চাশ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারের ক্ষেত্রে ২০২৪-২৫ এবং ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষ – দুটি বছরেই কার্যকর মাশুল ইউনিট প্রতি ৩ টাকা ৭৯ পয়সা। শহরাঞ্চলে গৃহস্থালি গ্রাহকদের ক্ষেত্রেও সব স্ল্যাবে — 0-৫০, ৫১-১৫০, ১৫১-৩০০ এবং ৩০০ ইউনিটের উপরে আগের ট্যারিফই কার্যকর থাকবে। ফ্রি ফেজ সংযোগের ক্ষেত্রেও কোনও পরিবর্তন করা হয়নি।
বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেও একই ছবি। পান দোকান, ছোট বা বড় ব্যবসা, সেমি-কমার্শিয়াল থেকে থ্রি ফেজ বাণিজ্যিক সংযোগ সব ক্ষেত্রেই ইউনিট প্রতি মাশুল ২০২৪-২৫ সালের সমতুল্য রাখা হয়েছে। সরকারী ভর্তুকির হারও অপরিবর্তিত। নন-ডোমেস্টিক নন-কমার্শিয়াল খাত, মোবাইল টাওয়ার, সেচ ও জল কাজ, বিভিন্ন শিল্প, চা-রাবার-কফি কারখানা, বৈদ্যুতিক যান চার্জিং স্টেশন, রেলওয়ে ট্র্যাকশন – সব ক্ষেত্রেই একই ট্যারিফ বজায় রয়েছে।
কমিশন জানিয়েছে, সামান্য কিছু পরির্তন এসেছে, মূলত ফিক্সড চার্জে। আগে সংযোগ প্রতি নির্দিষ্ট ফিক্সড চার্জ ধার্য থাকলেও, এখন অনেক ক্ষেত্রেই সংযুক্ত লোড অনুযায়ী প্রতি কিলোওয়াট হারে চার্জ ধার্য করা হয়েছে। এই ব্যবস্থা ব্যবহারকারীর প্রকৃত লোড অনুযায়ী খরচকে আরও ন্যায্যভাবে ভাগ করে দেবে। তবে এখানেও এনার্জি চার্জে কোনও প্রভাব পড়েনি। গ্রামীণ গৃহস্থালির ক্ষেত্রে শূন্য থেকে পঞ্চাশ ইউনিট পর্যন্ত ব্যবহারকারীদের জন্য এখন ফিক্সড চার্জ ১৬ টাকা প্রতি কিলোওয়াট। কিন্তু ইউনিট চার্জ অপরিবর্তিত। কুটির জ্যোতি গ্রাহকদের জন্য বরাবরের মতোই কম-মাশুলের বিশেষ ব্যবস্থাই রাখা হয়েছে।
কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষে বিদ্যুতের এনার্জি চার্জ বাড়ানো হয়নি। যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে তা মূলত ২০২৩-২৪ সালের সঙ্গে ভুল তুলনার কারণে। কিন্তু সঠিক তুলনা হয় ২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ সালের ট্যারিফের মধ্যে। আর সেই তুলনা বলছে- দুই বছরেই ইউনিট প্রতি মাশুল একেবারে একই। সুতরাং রাজ্যে বিদ্যুতের দাম কোনওভাবেই বাড়ছে না। সরকার এবং বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন দু’পক্ষই গ্রাহকদের সুরক্ষা দিতে চায়। তার ফলেই বিদ্যুৎ মাশুল অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। গ্রাহক বান্ধব এই পরিবেশ বজায় রাখাই এখন সরকার এবং কমিশনের প্রধান লক্ষ্য। এমনটাই দাবি করেছে বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *