তিন কোটি টাকায় ‘মেঘ বোনা’! তবুও কেন নামল না বৃষ্টি দিল্লিতে?
তিন কোটি টাকায় ‘মেঘ বোনা’! তবুও কেন নামল না বৃষ্টি দিল্লিতে?
অনলাইন প্রতিনিধি :-রাজধানী দিল্লির আকাশে দূষণ কমাতে ‘ক্লাউড সিডিং’ বা কৃত্রিম বৃষ্টি ঘটানোর উদ্যোগ নিয়েছিল দিল্লি সরকার। এ উদ্দেশ্যে আইআইটি কানপুরের সঙ্গে ৩.২১ কোটি টাকার চুক্তি হয়, যেখানে পাঁচ দফা পরীক্ষার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ইতিমধ্যে তিনটি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে, প্রতিটির খরচ প্রায় ৬৪ লক্ষ টাকা। কিন্তু একবারও মেঘ ভেঙে বৃষ্টি নামেনি রাজধানীতে।
আইআইটি কানপুরের ডিরেক্টর মণীন্দ্র আগরওয়াল জানিয়েছেন, মঙ্গলবার মেঘের আর্দ্রতা ছিল মাত্র ১৫ শতাংশ, যা বৃষ্টি হওয়ার পক্ষে একেবারেই অনুকূল নয়। তাই পরীক্ষা সফল হয়নি। তবে তিনি এটিকে ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন না। তাঁর মতে, এ ধরনের পরীক্ষা ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা তৈরি করে। এবারও ১৫টি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী দেখা গেছে, বাতাসে পিএম ২.৫ ও পিএম ১০-এর মাত্রা ৬ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দূষণ নিয়ন্ত্রণে কৃত্রিম বৃষ্টি এক অস্থায়ী ও ব্যয়বহুল সমাধান। সাময়িকভাবে বাতাস পরিষ্কার হলেও কয়েক দিনের মধ্যেই দূষণ ফের বৃদ্ধি পায়। সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের গবেষক অনুমিতা রায়চৌধুরী বলেন, ক্লাউড সিডিংয়ের পরেও উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়নি, তাই এর প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী নয়।
মঙ্গলবারের পরীক্ষায় একটি সেসনা ২০৬এইচ বিমান কানপুর থেকে উড়ে দিল্লির উত্তর-পশ্চিম অঞ্চলে যায়— খেকরা, বুরারি, ময়ূরবিহার ও করোলবাগ এলাকায়। বিমানের মাধ্যমে মেঘে ছিটানো হয় সিলভার আয়োডাইড ও ভোজ্য লবণ, যাতে আর্দ্রতা বাড়ে এবং বৃষ্টি নামতে পারে। কিন্তু ফলাফল আশানুরূপ হয়নি। তবুও আইআইটির গবেষকরা আশাবাদী। তাঁদের মতে, পরীক্ষা মানেই সাফল্য বা ব্যর্থতা— দুটোই সম্ভব। ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়েই বিজ্ঞান এগোয়, আর সেই শিক্ষাই ভবিষ্যতের সফল কৃত্রিম বৃষ্টির পথে এগিয়ে নেবে দিল্লিকে।