August 2, 2025

তাকেদা-র ডেঙ্গু টিকা ব্যবহারের পরামর্শ দিল হু।

 তাকেদা-র ডেঙ্গু টিকা ব্যবহারের পরামর্শ দিল হু।

জাপানের ওষুধ নির্মাতা তাকেদা ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানির তৈরি ডেঙ্গু জ্বরের টিকা ব্যবহার করুন, বিশ্ববাসীর উদ্দেশে বিবৃতি দিয়ে এ কথা জানিয়ে দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)।ফ্রান্সের
জিজি প্রেস সূত্রে খবর, হু বলেছে, তাকেদার ডেঙ্গ প্রতিরোধী এই টিকা মানুষের
দেহে কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
ঘটাবে না,বরং এডিশ মশাবাহিত ভাইরাসটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলবে।প্রসঙ্গত, তাকেদার ডেঙ্গু টিকাই প্রথম
নয়, যাকে ব্যবহারের ছাড়পত্র দিয়েছে হু।এর আগে ‘কিউডেঙ্গা” নামে ডেঙ্গু ভ্যাকসিনকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইন্দোনেশিয়া ও ব্রাজিলে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন করেছে হুহ।জিজি প্রেস সূত্রে খবর, তাকেদার ডাবল ডোজের এই ভ্যাকসিনটি সেরোটাইপ ২ ভেরিয়েন্টের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। তবে এখানে অন্য তিনটি ধরনের উপাদানও যুক্ত রয়েছে। ডোমিনিকান রিপাবলিক, পানামা এবং ফিলিপাইনে ১ হাজার ৮০০ জন তরুণ-তরুণীর উপর চালানো হয়েছে এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল। গবেষণায় দেখা গেছে, ভ্যাকসিনটি নেওয়ার পর এটি ডেঙ্গুর চার ধরনের বিরুদ্ধে অন্তত চার বছর সুরক্ষা দেয়।এই ফলাফলের পর এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার ২০ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবীর উপর আরেকটি পরীক্ষা চালায় তাকেদা।তাতে দেখা যায়, ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার প্ল্যাসিবোর (যে স্বেচ্ছাসেবীরা টিকার পরিবর্তে জলজাতীয় তরল পেয়েছিলেন) তুলনায় ৮৪ শতাংশ কম এবং এটি ৬১ শতাংশ পর্যন্ত রোগ প্রতিরোধে কাজ করে। এর পাশাপাশি তেমন উল্লেখযোগ্য কোনও নিরাপত্তা ঝুঁকিও পাওয়া যায়নি পরীক্ষায়।২০১৩ সালে ইনভিরাজেন ইনক নামে আমেরিকার কলোরাডো ভিত্তিক একটি ফার্মা কোম্পানিকে কিনে নেয় তাকেদা ফার্মা।এই কোম্পানিই কিউডেঙ্গা নিয়ে কাজ শুরু করে।এর কার্যকারিতা এবং সুরক্ষাব্যবস্থা প্রমাণ করা বেশ জটিল ছিল, কারণ ডেঙ্গুর চারটি আলাদা আলাদা ধরন রয়েছে, ভ্যাকসিনটি স্বতন্ত্র চার ধরনের বিরুদ্ধেই সুরক্ষা দিতে পারে কিনা তা জানা ছিল আবশ্যক।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে,৬-১৬ বছর বয়সি শিশুদের জন্য তাকেদা ফার্মার টিকা চালু করা হবে মূলত যারা তীব্র ডেঙ্গি জ্বরে আক্রান্ত এবং যাদের বাস উচ্চ সংক্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়।উল্লেখ্য, বাংলাদেশেও সম্প্রতি প্রথমবারের মতো ডেঙ্গুর চারটি ধরনের বিরুদ্ধে উপযোগী টিকা নিয়ে সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র। বাংলাদেশের এই টিকা গবেষণায় যৌথ ভাবে কাজ করেছে আমেরিকার ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউভিএম) লার্নার কলেজ অব মেডিসিন।টিভি-০০৫ নামের ডেঙ্গু টিকাটি এক ডোজের বলে জানিয়েছে আইসিডিডিআরবি।

এক বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানিয়েছে, গবেষণায় ব্যবহৃত এক ডোজের ডেঙ্গু টিকা টিভি- ০০৫ মূল্যায়ন করে দেখা গেছে, এটি শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রয়োগের জন্য নিরাপদ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সক্ষম।যদিও সেই টিকা ব্যবহারের জন্য এখনও হু-এর ছাড়পত্র মেলেনি।১৯৯৭ সালে ফরাসি বহুজাতিক ফার্মাসিউটিক্যাল এবং স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা সানোফি
একটি ডেঙ্গু ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ শুরু করে।২০১৫ সালে ‘ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া’ নামে ওই ভ্যাকসিনটি মেক্সিকোতে অনুমোদন পায়।এরপর ১৯টি দেশে চালু হয় ওই ভ্যাকসিন। কিন্তু পরে সানোফির আরেক গবেষণায় দেখা যায়, কিছু বিরল ক্ষেত্রে ডেঙ্গভ্যাক্সিয়া উল্টো বিপর্যয় ঘটাতে পারে। যাদের কখনও ডেঙ্গু হয়নি তাদেরকে টিকা দেওয়ার পর তারা যদি ডেঙ্গু আক্রান্ত হন, তবে ভ্যাকসিনটি অনেকক্ষেত্রেই রোগটিকে আরও গুরুতর করে তুলতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *