ডিম্বাশয়ের ক্যানসার নিয়ে সচেতন হোন!!

দৈনিক সংবাদ অনলাইন :-ডিস্বাশয় ক্যানসার গভীরে বাসা বাঁধে,নীরবে শরীর গ্রাস করে।
কোনও পূর্ববার্তা ছাড়াই যখন নারীর দেহে ছড়িয়ে পড়ে ক্যানসারের ছায়া, তখন বুঝতে বুঝতে অনেক দেরি হয়ে যায়। ডিম্বাশয় ক্যানসার এমনই এক নীরব ঘাতক; যার লক্ষণ প্রথম দিকে ধরা পড়ে না, আবার অসচেতনতায় বেড়ে চলে প্রাণঘাতী রূপে। নারীর স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতনতা আর নিয়মিত পরীক্ষা হতে পারে জীবনের বড় সুরক্ষা।
ডিম্বাশয় ক্যানসার কী এবং কেন তা ভয়ংকর?
ডিম্বাশয় ক্যানসার নারীর প্রজনন অঙ্গে দেখা দেওয়া একটি মারাত্মক রোগ। প্রাথমিক পর্যায়ে এর তেমন কোনও লক্ষণ থাকে না। কিন্তু যখন ধরা পড়ে, তখন তা অনেকটাই ছড়িয়ে পড়ে শরীরের অন্যান্য অংশে।
এই ক্যানসারের মূল জটিলতা হল ‘লেট ডিটেকশন’ বা দেরিতে ধরা পড়া। চিকিৎসার অগ্রগতি সত্ত্বেও ক্যানসারটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতার কারণে এটি ভয়ংকর হয়ে ওঠে।
প্রাথমিক লক্ষণগুলো কী কী?
ডিম্বাশয় ক্যানসারের প্রাথমিক লক্ষণগুলো সাধারণ শারীরিক সমস্যা হিসেবে মনে হয়। যেমন- পেট ফাঁপা বা চাপ, ক্ষুধামন্দা, দ্রুত ওজন হ্রাস, প্রস্রাবের চাপ, ক্লান্তি বা দুর্বলতা। এইসব লক্ষণ প্রায়ই অন্য রোগের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলায় নারীরা গুরুত্ব দেন না, ফলে সময়মতো চিকিৎসাও শুরু হয় না।
যারা বেশি ঝুঁকিতে:-ডিম্বাশয় ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে ৫০ বছরের বেশি বয়সি নারীরা, যাদের পরিবারে ব্রেস্ট বা ওভারিয়ান ক্যানসারের ইতিহাস আছে, হরমোন বা ওভুলেশন-সম্পর্কিত দীর্ঘমেয়াদি ওষুধ সেবনকারী নারীরা, কখনও সন্তান না হওয়া নারীরা।
কীভাবে প্রতিরোধ সম্ভব?
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা। সচেতনতা বৃদ্ধি। নিজের শরীর সম্পর্কে জানুন, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন। পারিবারিক ইতিহাস থাকলে জেনেটিক কাউন্সেলিং, সুষম খাদ্য ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, সঠিক সময়ে মা হওয়া ও স্তন্যপান করানোও প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।
প্রেক্ষাপটে সমস্যা কোথায়?
ডিম্বাশয় ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা এখনও খুবই সীমিত। গ্রামীণ নারীরা তো বটেই, শহরের শিক্ষিত নারীরাও অনেক সময় উপসর্গগুলো গুরুত্ব দেন না।
অনেকেই লজ্জা বা অবহেলায়
চিকিৎসকের কাছে যান না। ফলে ক্যানসার যখন ধরা পড়ে, ততক্ষণে পরিস্থিতি অনেক জটিল হয়ে যায়। পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেকেই সময়মতো চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারেন না। নারীদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করুন, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষিত করুন, মিডিয়ায় প্রচার ও আলোচনার আয়োজন করুন, বিনামূল্যে ক্যানসার স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা হোক : পারিবারিকভাবে খোলামেলা আলোচনা হোক নারীর স্বাস্থ্য নিয়ে সময়ের দাবি। ডিম্বাশয় ক্যানসার নিয়ে ভয় নয়, সচেতনতা আর সময়মতো পদক্ষেপই হতে পারে সুরক্ষার চাবিকাঠি। বিশ্ব ডিম্বাশয় ক্যানসার দিবস শুধু একটি দিন নয়, বরং নারীর প্রতি যত্ন, সচেতনতা এবং সম্মানের বার্তা বহন করে। আসুন নারীর প্রতি দায়িত্ববান ই; কথায় নয়, কাজে।