জাতীয় সড়ক বাইপাসের উদ্যোগ,উদয়পুরে সুখসাগর জলাধারে গড়ে উঠবে আধুনিক উপনগরী!!
ডিজের যন্ত্রণা রুখতে সাউন্ড লিমিটরই অস্ত্র!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- উৎসব মানেই আনন্দ, ভিড়, ঢাক-ঢোল আর হুল্লোড়। কিন্তু সেই আনন্দের মাঝেই ক্রমশ ভর করছে শব্দদূষণের আতঙ্ক। প্রশাসনের বারবার সতর্কতা ও নিষেধাজ্ঞা জারি সত্ত্বেও এবারও পুজোর মরশুমে নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে ডিজের কর্কশ আওয়াজ।
পরিবেশবিদদের অভিযোগ, ‘উৎসবের দিনে ডিজের আওয়াজ এতটাই কানফাটা যে প্রশাসনের সাবধানবাণী পৌঁছচ্ছে না আয়োজকদের কানে।’ উৎসবের মরশুমে সবচেয়ে বড় চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে এই শব্দদূষণ।
আইন অনুযায়ী, দিনের বেলায় শব্দসীমা ৬৫ ডেসিবেল এবং রাত ১০টার পর সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ মাইক্রোফোন বা ডিজে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, বেশিরভাগ জায়গায় সেই নিয়মের তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। এক পরিবেশবিদের কথায়, ‘উৎসব মানেই আনন্দ – এই মানসিকতার সুযোগ নিয়ে শব্দের দৌরাত্ম্য বাড়ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশু, বৃদ্ধ থেকে শুরু করে অসুস্থ মানুষ সকলেই।’
প্রশাসনিক মহলেরও স্বীকারোক্তি, ভিড়ে ঠাসা পুজোয় ডিজের হুল্লোড় সামলানোর পর্যাপ্ত পরিকাঠামো নেই স্থানীয় স্তরে। তাই প্রশ্ন উঠছে, কতটা আন্তরিকভাবে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব?
সদ্য অনুষ্ঠিত গণপতি পুজো, মনসা পুজোতেও শব্দ দানবের উৎপাত চলে। কিন্তু প্রশাসন বধির। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের হলো, ভুক্তভোগী জনসাধারণের কাছে অভিযোগ পেয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি প্রতিটি ক্ষেত্রেই ডিজের তাণ্ডব রুখতে ঘটনাস্থলে ছুটছেন। কিন্তু হা পিত্যেশ। কালীপুজোর উদ্যোক্তারা যখন ডিজে বাজিয়ে ভাসানের জন্য রাস্তার দখল নিয়ে ছুটছেন, সেখানে গিয়েও পুলিশ ফিরে আসে। পাড়ার সামাজিক সংস্থার আয়োজিত গণপতির ভাসানেও ডিজের তাণ্ডব দেখে ফিরে আসতে হয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কর্তাদের। বাড়ির মনসা পুজোর ভাসানেও একই চিত্র। কারণটা হলো উদ্যোক্তারা যে নামে যে পুজোরই আয়োজন করুন না কেন, সর্বত্রই যাদের উপস্থিত, তারা হলেন মণ্ডল কর্তা। মণ্ডল এখন শহর-গ্রামে পাড়া-বাড়ি-ক্লাব সর্বত্রই মিলেমিশে একাকার। তাই নিট ফল শূন্য।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিজের তাণ্ডব ঠেকাতে কার্যকরী ব্যবস্থা হতে পারে সাউন্ড লিমিটর ব্যবহার। এই যন্ত্র ডিজে সিস্টেমে লাগালে শব্দ নির্দিষ্ট সীমার বাইরে যাবে না। তবে তার জন্য দরকার প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও কড়া প্রয়োগ।

একটি উৎসবের আনন্দ যে মানুষের জীবনে স্থায়ী যন্ত্রণা ডেকে আনবে না, তা নিশ্চিত করতেই এখন প্রশাসন ও সমাজের দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। তাই প্রশ্ন উঠছে: কেন প্রশাসন এতটা উদাসীন? কেন বায়ু দূষণের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হলেও শব্দ দানবের উৎপাত নিয়ে কথা নেই। কেন সাধারণ মানুষের যন্ত্রণা চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো সত্বেও ব্যবস্থা নেই?
উৎসব মানেই আনন্দ, কিন্তু সেই আনন্দ যদি মানুষের কানে, মস্তিষ্কে, স্বাস্থ্যে যন্ত্রণা ডেকে আনে, তবে তাকে উৎসব নয়, শব্দসন্ত্রাস বলা উচিত। এখনই ব্যবস্থা না নিলে, ভবিষ্যতে এর সামাজিক ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব ভয়ঙ্কর হয়ে দাঁড়াবে। শারদোৎসব ও আসন্ন দীপাবলির সময়ে এই ডিজে যন্ত্রণা রুখতে প্রশাসন কতটা সজাগ হবেন সেই দিকেই তাকিয়ে পাহাড় থেকে গ্রামের সাধারণ মানুষের।
