September 8, 2025

ডিজিটাল হাউস নাম্বার প্লেট সরবরাহের নামে অর্থ আদায়!!

 ডিজিটাল হাউস নাম্বার প্লেট সরবরাহের নামে অর্থ আদায়!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-উত্তর ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর মহকুমার বিভিন্ন এডিসি ভিলেজ কমিটিতে সম্প্রতি এক নতুন বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে ডিজিটাল হাউস নাম্বার প্লেট সরবরাহের নামে একটি উত্তরপ্রদেশের বেসরকারী সংস্থা সরকারী ছত্রছায়ায় কার্যক্রম চালাচ্ছে। অথচ এই উদ্যোগের বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, লালজুরি আরডি ব্লকের বিস্তীর্ণ গ্রামে হাজার হাজার মানুষকে বাধ্যতামূলকভাবে এই কার্ড করতে বাধ্য করা হয়েছে। প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে পঞ্চাশ টাকা করে ফি। অথচ প্রশাসনের তরফে পরিষ্কারভাবে জানানো হয়েছে, এই ডিজিটাল হাউস নাম্বার প্লেট কোনওভাবেই বাধ্যতামূলক নয়।কাঞ্চনপুর মহকুমাশাসক ডা. দীপক কুমার আইএএস এক স্পষ্ট বার্তা দিয়ে জানিয়েছেন, ডিজিটাল হাউস নাম্বার প্লেট সরকারের নির্দেশিত প্রকল্প নয়। এটি কোনও পরিবার করতে চাইলে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছায় করতে পারবে। কারও উপর জোর করে এই কার্ড করানো যাবে না। তবে কেউ চাইলে স্ব-ইচ্ছায় ওই সংস্থাকে পঞ্চাশ টাকা প্রদান করে কার্ড করাতে পারে। অর্থাৎ প্রশাসনের অবস্থান একেবারেই স্পষ্ট এটি একটি ঐচ্ছিক উদ্যোগ,যার সঙ্গে সরকারী বাধ্যবাধকতার কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু মাঠ পর্যায়ের পরিস্থিতি প্রশাসনিক নির্দেশনার বিপরীত। লালজুরি এবং আশপাশের এলাকায় দেখা যাচ্ছে বহু গ্রামের মানুষকে হুমকি দিয়ে বা প্ররোচনা দিয়ে এই কার্ড করানো হচ্ছে। গ্রামবাসীদের একাংশ জানিয়েছে, ভিলেজ অফিসে উপস্থিত কর্মকর্তারা এই কার্ডকে -বাধ্যতামূলক হিসাবে উপস্থাপন করছে।ফলে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে। এক্ষেত্রে মূল প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে – যেখানে এসডিএম নিজে স্পষ্ট করেছেন যে এই কার্ড বাধ্যতামূলক নয়, সেখানে কেন – ভিলেজ কমিটিস্তরে জোরজবরদস্তি চলছে?সাধারণ মানুষ তাই সন্দেহ প্রকাশ করছেন যে, এর পেছনে বাণিজ্যিক স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে। অভিযোগ, এই পুরো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্রামবাসীর কাছ থেকে অর্থ আদায় করা হচ্ছে। নামমাত্র একটি কার্ডের আড়ালে
লুকিয়ে আছে আর্থিক লেনদেনের ফাঁদ। মানুষকে ভয় দেখিয়ে বা ভুল তথ্য দিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে। ডিজিটাল হাউস নাম্বার প্লেটের মতো ব্যবস্থা যদি সত্যিই দরকার হয় তবে সেটি রাজ্য সরকারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এবং প্রশাসনিক নির্দেশনার মাধ্যমে হতে হবে। তা না হলে এই উদ্যোগ আইনসম্মত নয়। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে এডিসি প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। স্থানীয়স্তরে যদি মানুষকে জোর করে কার্ড করতে বাধ্য করা হয় তবে তা সরাসরি সরকারী নির্দেশনার বিরোধী। ফলে দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের জন্য সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি বলে মনে করছেন সচেতন মহল। কাঞ্চনপুর মহকুমাশাসকের বক্তব্যে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হলেও বাস্তবে যদি প্রসাসনিক নির্দেশ উপেক্ষিত হয়, তবে এর পেছনে কোনও প্রভাবশালী মহলের স্বার্থ কাজ করছে কী না তা খতিয়ে দেখা জরুরি। সাধারণ মানুষের দাবি, অবিলম্বে এই জোরজবরদস্তি বন্ধ করতে হবে এবং যারা ইতিমধ্যে টাকা দিয়ে কার্ড করতে বাধ্য হয়েছে তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি গ্রামবাসীর কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়া দরকার যাতে তারা প্রতারণার শিকার না হন। এই ঘটনায় আবারও সামনে এলো এডিসি ভিলেজস্তরে প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার চিত্র। সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে যদি সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয় তবে তা শুধু অনৈতিক নয়, আইনত দণ্ডনীয়ও বটে। কাঞ্চনপুর মহকুমায় তৈরি হওয়া এই পরিস্থিতি নিয়ে ক্ষোভছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তাদের প্রশ্ন, যখন কর্তব্যরত এসডিএম নিজে স্পষ্ট বলেছেন যে, এই কার্ড একেবারেই বাধ্যতামূলক নয়, তখনও কেন গ্রামবাসীদের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। সরকারী ব্যবস্থাপনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলছে এই ঘটনাই। প্রশাসনিক নজরদারি না বাড়ালে মানুষকে ঠকিয়ে এমন ভুয়ো প্রকল্প আরও ছড়িয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *