August 1, 2025

টিসিএ-এর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন, স্টেডিয়ামে ক্ষতিপূরণ ২৮ কোটি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি।।

 টিসিএ-এর নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন, স্টেডিয়ামে ক্ষতিপূরণ ২৮ কোটি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি।।

অনলাইন প্রতিনিধি :-নরসিংগড়ে টিসিএ-এর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম নির্মাণে নিযুক্ত বহি:রাজ্যের ঠিকাদার সংস্থাকে তড়িঘড়ি ২৮ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি বিধানসভায় উত্থাপন করে এই ব্যাপারে রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেন কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ।এই গোটা বিষয়ে তিনি সন্দেহ এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিধায়ক শ্রী বর্মণ।তার অভিমত,এই বিশাল পরিমাণ অর্থের একটা বড় অংশ নানাভাবে আত্মসাৎ হতে পারে। এটা জনগণের অর্থ কেউ যাতে আত্মসাৎ করতে না পারে তার জন্য তিনি মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, বিচারপতির নির্দেশের বিরুদ্ধে টিসিএকে উচ্চআদালতের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করারও কথা বলেন শ্রী বর্মণ।
সোমবার বিধানসভার শূন্যকালে বিধায়ক শ্রী বর্মণ বিষয়টি উত্থাপন করে বলেন,বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর। তিনি বলেন, হাইকোর্টের জনৈক বিচারপতি সব পক্ষকে তড়িঘড়ি তার চেম্বারে ডেকে এনেছেন। চেম্বারেই তিনি কেন সবাইকে ডেকে আনলেন আমরা জানি না। যতটুকু জানতে পেরেছি চেম্বারেই এই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।এরপর ২০ মার্চ বিচারপতি একটি অর্ডার পাস করেছেন। তাতে বলা হয়েছে আগামী ২৫ মার্চের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা ঠিকাদার সংস্থাকে দিতে হবে। অবশিষ্ট তিন কোটি টাকা আগামী মে মাসে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সুদীপবাবু প্রশ্ন তুলেন, বিষয়টি নিয়ে এত তাড়াহুড়ো কেন? সুদীপবাবু বলেন, তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা হলো, ওই বিচারপতি নিজেও ২৫ মার্চ অবসরে চলে যাচ্ছেন। ফলে পুরো বিষয়টি নিয়ে তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেন। বিধায়ক শ্রী বর্মণ আরও বলেন,ওই বিচারপতির কাছে ছিল এমবিবি মাঠে ফ্লাডলাইট বসানো নিয়ে দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলাটি। প্রকৃতপক্ষে দেখা গেছে ওই মামলাটির এখনও চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হয়নি। বারবারই মামলার আংশিক শুনানি হচ্ছে।
আর যে মামলা আর্বিট্রেশন কোর্টে হওয়ার কথা, সেই মামলা ওই বিচারপতি তড়িঘড়ি চেম্বারে নিষ্পত্তি করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। ভূ-ভারতে এমন ঘটনা আছে কিনা আমার জানা নেই। সুদীপবাবু বলেন, ২০১৯ সালে ঠিকাদার সংস্থাকে একবার ১৩ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছিল। এখন আবার ২৮ কোটি। টাকাটা জনগণের। এই বিষয়ে পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, টিসিএ একটি স্বশাসিত সংস্থা। বিসিসিআই-এর তত্ত্বাবধানে চলে। এখানে রাজ্য সরকার কি করবে? এতে কি আমি হস্তক্ষেপ করতে পারি। এখানে বিচারপতির বিষয়ে কথা হচ্ছে। এই ব্যাপারে রাজ্য সরকার কিছু করতে পারে কি? যদি আইন শৃঙ্খলার বিষয় থাকে,তাহলে রাজ্য সরকার হস্তক্ষেপ করতে পারে।মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পর বিধায়ক শ্রী বর্মণ বলেন, টিসিএ যেন এই অর্ডারের বিরুদ্ধে আপিলে যায়।নতুবা তিনি এই ব্যাপারে মামলা করবেন বলে জানান।পরে বিরোধী দলনেতা জিতেন চৌধুরীও এই বিষয়ে বলেন, রাজ্য সরকার কেন স্টেকহোল্ডার হচ্ছে না।তিনিও গোটা বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। এদিকে সবথেকে বিস্ময়ের ঘটনা হলো, বিচারপতির নির্দেশের পর চারদিন অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও, টিসিএ-এর পক্ষ থেকে নির্দেশের বিরুদ্ধে আপিলে যাওয়ার কোনও উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। এই নিয়েও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। সব মিলিয়ে গোটা বিষয়টি নিয়ে জনমনেও বড় ধরনের সন্দেহ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে আর্বিট্রেশন কোর্টের মামলা সংশ্লিষ্ট কোর্টে নিষ্পত্তি না হয়ে অন্য একজন বিচারপতির চেম্বারে নিষ্পত্তি হলো কীভাবে?এই নিয়েও জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।শুধু তাই নয়, কিসের ভিত্তিতে ঠিকাদার সংস্থাকে ২৮ কোটি টাকা দেওয়ার বিষয়টি নির্ধারণ হলো?টিসিএ এই ব্যাপারে নীরব কেন?এই সব প্রশ্ন এখন বড় হয়ে উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *