ঘর ভাঙছে বিজেপির,পাহাড়ে একটিই রাজনৈতিক দল থাকবে ‘তিপ্রা মথা’: প্রদ্যোত!!
জম্পুই পাহাড়ে মিজোরামের আগ্রাসন ত্রিপুরা সরকারের ভূমিকায় প্রশ্ন!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-জম্পুইয়ে আবারও মিজোরামের আগ্রাসন ভূমিকায় কাঞ্চনপুরে চরম উত্তেজনা চলছে।গত বছরের বেথেলিয়ানচীফে বন দপ্তরের নির্মিত ক্যাফেটেরিয়ারে গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনার স্মৃতি এখনও তাজা। গেলো বছর ঠিক এই সময় জম্পুই পাহাড়ের ফুলডুংসাইয়ে নির্মিত ক্যাফেটেরিয়ার দালান বাড়ির একাংশ মিজোরামের আগ্রাসী চাপের সামনে ভেঙে ফেলা হয়েছিল। সেই সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ছুটে আসতে হয়েছিল জেলার গোটা প্রশাসনিক টিমকে। রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী জম্পুই এসে দফায় দফায় বৈঠক করে মানুষকে শান্ত করেন। অথচ এক বছর পরেও দেখা যাচ্ছে প্রশাসনের সেই তৎপরতা কেবলমাত্র ক্ষণস্থায়ী, স্থায়ী সমাধানে কোনও উদ্যোগই নেয়নি সরকার। এ বছর আবারও একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি। জম্পুই পাহাড়ে প্রমো ফেস্ট উপলক্ষে বেথেলিয়ানচীফ যাওয়ার রাস্তায় জঙ্গল পরিষ্কারের কাজ শুরু হতেই মিজোরামের একাংশ লোক এসে শ্রমিকদের উপর এমন প্রভাব বিস্তার করে যে, শ্রমিকরা প্রাণভয়ে কাজ ফেলে পালিয়ে আসে। সীমান্তবর্তী এলাকায় কর্মরত শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব – অথচ সেই প্রশাসন এবারও নীরব। মানুষের ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দুতে সেই পুরনো প্রশ্ন- কেন বারবার মিজোরামের আগ্রাসনের সামনে মাথা নত করে ত্রিপুরার প্রশাসন? এক বছর আগে নির্মিত দালান ভাঙার ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল মানুষ। তারপরও কোনো আইনি উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কোনো দোষীকে চিহ্নিত করা হয়নি, কোনো কঠোর প্রশাসনিক বার্তাও পাঠানো হয়নি। ফলে মিজোরামের আগ্রাসন আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। গত বছরের ঘটনার পরেও যারা মনে করেছিল প্রশাসন এবার কড়া অবস্থান নেবে তারা সকলেই প্রতারিত। চলতি নভেম্বর মাসের আটাশ ও উনত্রিশ তারিখ জম্পুই পাহাড়ে রাজ্য পর্যটন দপ্তর যে প্রমো ফেস্টের আয়োজন করেছে, সেটি নিয়েও মানুষের মধ্যে উৎসাহ দেখা যাচ্ছে না। অনেকেই প্রশ্ন তুলছে জম্পুই পাহাড় কি সত্যিই ত্রিপুরার? নাকি সরকারের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে মিজোরাম ধীরে ধীরে তার দখল নেওয়ার চেষ্টা করছে?মানুষ মনে করছে- বারবার আগ্রাসন, বারবার জবরদস্তি, আর বারবার প্রশাসনের চুপ করে থাকা এই পাহাড়ের ভবিষ্যৎকে সংকটে ফেলছে। কোনও রাজ্য যখন নিজের সীমানা নিয়ে এতটা উদাসীন তখন সেই রাজ্যের মানুষদের নিরাপত্তা কোথায় দাঁড়িয়ে? মানুষের অভিযোগ, প্রশাসন শুধু ঘটনা ঘটার পর ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুই-চারটি বৈঠক করে চলে যায়। কিন্তু সীমান্ত সুরক্ষা, আইনগত কর্তৃত্ব বা ভবিষ্যৎ সুরক্ষার কোনও কৌশলগত পরিকল্পনা নেই। ফলে প্রতি বছর একই দৃশ্য দেখা যায় মিজোরামের আগ্রাসন চাপে ত্রিপুরার প্রশাসনের নীরবতা।
সরকারের এই দুর্বল ও নরম ভূমিকা জম্পুই পাহাড়ের অস্তিত্বকেই প্রশ্নের মুখে ফেলছে। সীমান্তে আগ্রাসন রোখার ক্ষমতা যাদের হাতে তারাই নীরব দর্শকের ভূমিকা নেয়। এই অবস্থায় জম্পুই পাহাড়ে প্রমো ফেস্ট যে প্রবল ধাক্কার মুখে – তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এই পরিস্থিতির জন্য মানুষ সরাসরি দায়ী করছে প্রশাসনকে যারা বারবার আগ্রাসনের সামনে মাথা নত করে স্থায়ী শান্তি ও সুরক্ষার পরিবর্তে বেছে নিয়েছে নীরবতা। জম্পুই পাহাড়ে মিজোরামের আগ্রাসন: আর ত্রিপুরা প্রশাসনের লজ্জাজনক নীরবতায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অথচ এই পাহাড়েই রাজ্য সরকার ২৮-২৯ নভেম্বর প্রোমো ফেস্টের মহোৎসব সাজাতে ব্যস্ত। উৎসবের নামে বাহ্যিক শো-অফ কিন্তু মাটির নিচে স্তরে স্তরে জমে থাকা অস্থিরতা, ভয় এবং অপমান – প্রশাসন যেন চোখ বুজে সব ঢেকে রাখতে চায়। গত বছর বেথেলিয়ানচীফে নির্মিত ক্যাফেটেরিয়ারে গ্রেনেড নিক্ষেপ করে ভেঙে ফেলার নির্মম ঘটনাটি এখনও পাহাড়ের বুকে ক্ষত হয়ে রয়ে গেছে। সেই সময় পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী দৌড়ে এসেছিলেন- কিন্তু ফলাফল? শুধুই বৈঠক, শান্ত করার সভা, আর লিপিবদ্ধ কিছু আশ্বাস। এক বছর পেরিয়ে গেলেও আগ্রাসন থামেনি, বরং আরও বেপরোয়া হয়েছে। কারণ ত্রিপুরার প্রশাসন প্রতিবারের মতোই দুর্বলতার নজির স্থাপন করেছে।গত বছরের আগ্রাসন থেকে সরকার কিছুই শিখেনি:এটি আজ পরিষ্কার।বেথেলিয়ানচীফের ঘটনায় যেমন ছিল নির্বিকার প্রশাসন এ বছরও ঠিক সেই একই চেহারা।ভীরু, নরম, নমনীয় এবং ফলহীন। পাহাড়ের মানুষ মনে করেন – যে পাহাড় নিজেদের নয় বলে মনে করে সরকার, সেখানে উৎসব করা মানে পাহাড়ের যন্ত্রণাকে ঢেকে রাখা।