ঘর ভাঙছে বিজেপির,পাহাড়ে একটিই রাজনৈতিক দল থাকবে ‘তিপ্রা মথা’: প্রদ্যোত!!
জট কাটবে কি?
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ভারতে পা রাখতেই, মার্কিন মুলুকে তৎপরতা রা শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেই তৎপরতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, ভারত সফর শেষে পুতিন মস্কোয় ফিরে গিয়ে ভারতকে এক ‘সভ্য রাষ্ট্র’ হিসাবে আখ্যা দেওয়ার পর। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কথায়, ‘শত শত ভাষা এবং সংস্কৃতির মেলবন্ধন বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভারতের ক্ষমতা, অন্য বৃহৎ দেশগুলোর কাছে একটি শিক্ষণীয় উদাহরণ’। এছাড়াও রাষ্ট্রপতি পুতিন ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা নিয়ে আরও এমন কিছু কথা বলেছেন, যা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।
একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপচারিতায় পুতিন তার সাম্প্রতিক ভারত সফর এবং দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির বিষয়ে আলোকপাত করেন। আলাপচারিতায় পুতিন ভারতের বিশাল বৈচিত্র দেখে তিনি আবার বিস্মিত হয়েছেন বলে জানান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়া এবং ভারতের মতো বৃহত্তর দেশগুলির জন্য এত বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বৈচিত্রের মধ্যে এই ঐক্যকে এমন এক নীতি বলে বর্ণনা করেন, যা উভয় দেশের রক্ষা করা উচিত। তাঁর মতে, গভীর ঐতিহাসিক শিকড় ও বহু সাংস্কৃতিক পরিচয়ের সমাজের স্থিতিশীলতার ভিত্তি হলো এটিই।
পুতিনের এই মন্তব্য তার উচ্চ-পর্যায়ের ভারত সফরের ঠিক পরেই এসেছে। যেখানে তিনি প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে একাধিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এই আলোচনায় প্রতিরক্ষা সহযোগিতা থেকে শুরু করে জ্বালানি সম্পর্ক, বাণিজ্য বৃদ্ধি এবং বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলি নিয়ে কথা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে বদলে যাওয়া রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভারত-রাশিয়া দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্বকে পুনরায় নিশ্চিত করার জন্যই পুতিনের ভারত সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।আর এখানেই আমেরিকার মাথাব্যথা।
মোদি-পুতিনের এই রসায়নই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একতরফা শুল্ক চাপানো থেকে শুরু করে, নানা ভাবে হুমকি-ধমকি দিয়েও বর্তমান ভারতকে কোনও অবস্থাতেই বাগে আনা যায়নি। মার্কিন হুমকিতে এখন আর ভারত কর্ণপাতই করছে না, পাত্তা দেওয়াতো দূরের কথা। আগ বাড়িয়ে ট্রাম্পের দাবিও এখন ভারত ফুঁৎকারে উড়িয়ে দিচ্ছে। যেমন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন সিন্দুর’ বিরতির কৃতিত্ব দাবি করা ট্রাম্পকে ভারত যে ভাষায় জবাব দিয়েছে, তা গোটা বিশ্ব দেখেছে এবং শুনেছে। বর্তমান ভারতের এই পরিবর্তিত অবস্থানই ট্রাম্পের বড় অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে পুতিনের ভারত সফর ট্রাম্পকে আরও চাপে ফেলে দিয়েছে বলে আন্তর্জাতিক মহলের অভিমত। ফলে নিজের দেশেও ট্রাম্প এখন সমালোচিত হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্প পুনরায় ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার উদ্যোগ নিয়েছেন বলে খবরে প্রকাশ। শুধু তাই নয়, ট্রাম্পের এই উদ্যোগে ভারত ও মার্কিন বাণিজ্যেক সম্পর্ক নতুন করে গতি পেতে চলেছে বলে খবরে প্রকাশ। ভারতের সঙ্গে শুল্ক সংক্রান্ত জটিলতা দূর করতে ও দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি চুড়ান্ত করার লক্ষ্যে বুধবার থেকে দিল্লীতে শুরু হয়েছে ভারত-মার্কিন দুই দেশের নতুন করে বাণিজ্য আলোচনা। বৈঠক চলবে দুইদিন।
খবরে প্রকাশ, এই প্রেক্ষাপটে ভারতে আসছেন মার্কিন উপ-বাণিজ্য রাষ্ট্রদূত রিক সুইটজার। ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণবীর জয়সওয়াল জানিয়েছেন, এই সফর মূলত একটি ‘ফ্যামিলিয়ারাইজেশন ভিজিট’। তবে সফরের সময় রিক সুইটজার ভারতের শীর্ষ সরকারী আধিকারিকদের সাথে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসবেন। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে বাণিজ্যিক স্বার্থ, শুল্ক সমস্যা ও বহুল আলোচিত ভারত মার্কিন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির অগ্রগতি। সব মিলিয়ে আমেরিকায় প্রতিনিধিদলের এই সফর ঘিরে কূটনৈতিক ও বাণিজ্য মহলে প্রত্যাশা অনেকটাই বেড়েছে এবং বাড়ছে। অচিরেই কি জট কাটিয়ে নতুন বাণিজ্য অধ্যায় পৌঁছুবে ভারত ও আমেরিকা?এই প্রশ্নের জবাব পেতে আরও কিছুটা সময় অপেক্ষা তো করতেই হবে।