August 3, 2025

চৈত্র সংক্রান্তিতে গাজন নৃত্য গ্রাম-বাংলার চিরাচরিত ছবি!!

 চৈত্র সংক্রান্তিতে গাজন নৃত্য গ্রাম-বাংলার চিরাচরিত ছবি!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-চৈত্র সংক্রান্তির গ্রামীণ জীবনের এক বর্ণিল সাংস্কৃতিক ধারা হল গাজন নৃত্য বা ঢাকি। বারুণী থেকে শুরু শেষ ঠিকানা চড়ক পুজো।মাঝের দিনগুলোতে গ্রামীণ মানুষের আনন্দের একটি বর্ণময় দিক হলো এই গাজন নৃত্য।বছর ঘুরে গাজন নৃত্য পরিলক্ষিত হয়।মোবাইল যুগের নতুন প্রজন্মের কাছে এটা একটা অচেনা দৃশ্য!কিন্তু গ্রামীণ মানুষের সাংস্কৃতিক ধারায় এই গাজন অনন্য। ছোটবেলায় ঢাকি নৃত্য আজও আমাদের স্মৃতিতে ভেসে উঠে।রাত জেগে ঢাকির পেছনে পেছনে হাঁটার স্মৃতি আজও অমলিন, সবুজ, সতেজ।মনে আছে,সাতের দশকে সাব্রুম শহরে অন্তত চার-পাঁচটি গাজনের দল রাত জেগে বাড়ি বাড়ি যেত। সাব্রুম শহরে ঢাকির কথা আসলে মনে পড়ে বিভীষণ বড়ুয়ার কথা। মনে পড়ে নিধান চক্রবর্তী, নারায়ণ মালাকার, শংকর দে, অনিল শীল, মিলন দাসদের।
হ্যাজাক লাইট নিয়ে বাড়ি বাড়ি চলতো গাজন নৃত্য। সন্ধ্যায় শুরু সারা রাত জুড়ে চলতো।ঘুম ঘুম চোখে ঢাকির নাচ দেখার সুখ স্মৃতি আজও ভোলা যায় না। চড়ক পুজোর জন্য চাঁদা তোলা। পুজোর আয়ের উৎস এই গাজন নৃত্য। তবে পাশাপাশি এই ঢাকের নাচে অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের যতটা সম্ভব পারিশ্রমিক মিটিয়ে দেওয়া হয়।সাব্রুম বাজারে শনিবার এক ঢাকির দলের উপস্থিতি সবার নজর কাড়ে। মানুষ জড়ো হয় ঢাকির নাচ দেখার জন্যে।উৎসুক মন ও আবেগপ্রবণ হয়ে ঢাকির নাচ দেখতে ক্রমশ ভিড়
বাড়ছিল।চড়ক মেলায় গাজন নৃত্য গ্রামীণ এলাকার প্রতিবছর এক চেনা ছবি। প্রত্যেক বাড়িতে চলে চৈত্র সংক্রান্তির সাবেকি ভোজ। ইতিমধ্যে বাজারে চলে এসেছে ওই সাবেকি ভোজের আনুষঙ্গিক যাবতীয় জিনিসপত্র।বাহারি পসরা নিয়ে বাজারে বাজারে দোকান সাজিয়েছে বিক্রেতারা।ভেষজ নানা শাকসবজি চৈত্র সংক্রান্তির আবহে বাজারে সবার দৃষ্টি ওই নানা ধরনের ভেষজ শাকসবজির দিকে।বছরের এদিনটাতে সবাই এই সাবেকীয়ানার মেনু বাড়িতে রাখবে। দুপুরে খাওয়া দাওয়া সেরে সবাই ছুটবে চড়ক মেলায়। বছর বছর পুকুরে বা বড় জলাশয়ে ডুবিয়ে রাখা ঐ চড়ক গাছ তুলে আনা হয়। তারপর ওই চড়ক গাছে চলে পুজো অর্চনা।এরপর সন্ধ্যা নামার আগে গাছ ঘোরার পালা। চড়ক মেলায় ঢাকির দলে নাচ দেখতে ভিড় জমায়
সবাই। চড়ক মেলা ও গাজন যেন আনন্দের এক ফল্গুধারা, যা আমাদের বাঙালিদের সাংস্কৃতিক চেতনার পরম্পরার আর এক নান্দনিক দিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *