দ্বিতীয় উড়ালপুল, টেকনিক্যাল বিড স্ক্রুটিনি চলছে শীঘ্রই খুলবে ফিনান্সিয়াল বিড!!
চেক জালিয়াতিতে বড় রহস্য, ঋণ দিয়েছে পুর নিগম! নেতা আমলা বাঁচাতে তোড়জোড়!!
অনলাইন প্রতিনিধি :- পুর নিগমের চেক জালিয়াতির ঘটনার পেছনে লুকিয়ে আছে বড় রহস্য। মামলার পরদিনই মেয়র দীপক মজুমদারের মন্তব্যের জেরে তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা বিপদে পড়েছেন। কিছুতেই পুর নিগমের কোনো কর্মচারীকে জালে তুলতে পারছে না। ক্রাইম ব্রাঞ্চের ইকোনমিক অফেন্স শাখার তদন্ত যতই এগিয়ে যাচ্ছে বেরিয়ে আসছে বড় বড় প্রভাবশালীদের নাম। অভিযোগ, শুধু ষোল কোটি টাকা নয়, টাকার পরিমাণ আরও অনেক বেশি। প্রতারণার চক্র ছড়িয়ে আছে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে। চেক ও এটিএমের মাধ্যমেও উঠানো হয়েছে পুর নিগমের টাকা। এদিকে তদন্তে এগিয়ে যেতেও সাহস পাচ্ছেন না ইকোনমিক অফেন্স শাখার তদন্তকারী অফিসার ডিএসপি বি যুইনুপুইয়া। এই মামলার তদন্তের জন্য বেশ কয়েকজন দক্ষ অফিসার প্রয়োজন। এছাড়া রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত অফিসার না হলে তদন্ত আটকে থাকবে ষোল কোটি টাকায়। শুক্রবার চেক জালিয়াতি মামলায় এ ভি অ্যাসোসিয়েটের কর্ণধার নাগপুরের ভাংখেদা মতিবাগের পদম সুরেশ শ্রীবাস্তব রাই আশিয়ানা আবাসনের ৪১১ নম্বর ফ্ল্যাটের বাইন্দা বিমল কুমার জোয়ালা প্রসাদ শ্রীবাস্তবের আগাম জামিনের আবেদনটি ভারপ্রাপ্ত দায়রা আদালতের বিচারক পিপি পালের কোর্টে শুনানির জন্য উঠে। রাজ্য সরকারের পক্ষে অতিরিক্ত পিপি কার্তিক জমাতিয়া আগাম জামিনের বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া গেছে। আর্থিক প্রতারণার এই ধরনের মামলায় আগাম জামিন দেওয়া যায় না বলে তিনি দাবি করেছেন। আগামী সাতাশ অক্টোবর এই মামলা পুনরায় শুনানির জন্য রেখেছেন বিচারক। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক ধর্মেন্দু দাসের কোর্টে শুনানির কথা রয়েছে। বিচারক পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত বিমল কুমারকে গ্রেপ্তার না করতে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশকে। যদিও গত ছয় সেপ্টেম্বর পশ্চিম আগরতলা থানায় মামলায় বিমলের নাম এসেছিল। কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে নাগপুর যায়নি। মামলার তদন্ত যায় ক্রাইম ব্রাঞ্চের ইকোনমিক অফেন্স শাখায়। তদন্তে নেমে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিসাররা। বিমল কুমার এভি অ্যাসোসিয়েটের নামে সাড়ে তিন কোটি টাকা ঋণ চেয়েছিলেন আগরতলা পুর নিগমের কাছ থেকে। সুকন্যা জীবন নিথি লিমিটেড প্রকল্পের নামে এই টাকা চাওয়া হয়। অথচ বিনা বাধায় উজ্জীবন স্মল ফিনান্স, বিরামজি টাউন ব্রাঞ্চে এভি অ্যাসোসিয়েটের অ্যাকাউন্টে চার কোটি সাতান্ন লক্ষ
সাতচল্লিশ হাজার সাতশ টাকা ঢুকে যায়। বিমল জানান, ঋণ হিসাবে টাকা নিয়েছে বিমল কুমার। কিন্তু বাস্তবটা অন্যরকম। মামলা করার কথা ছিল পুর নিগমের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনীয়ারের। অথচ মামলা অনেক পরে করেছে ইউকো ব্যাঙ্ক। মামলা যখন হয়েছে এর আগেই এই টাকা বিমল কুমারের সংস্থার অ্যাকাউন্ট থেকে বহুজনের কাছে চলে গেছে। এই টাকা চেক এবং এটিএম দিয়ে তোলা হয়। তদন্তকারী অফিসাররা মামলায় এভি অ্যাসোসিয়েট থেকে কাদের কাছে টাকা গেছে, এটা নিয়ে তদন্তে এগিয়ে যেতে সাহস করতে পারছে না। এর কারণ হচ্ছে এই লোকরা সবাই রাজ্যের বাইরের। এখানে আসা-যাওয়া করতেও রাজ্য পুলিশের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। তবে ইউকো ব্যাঙ্কের মামলাটি হচ্ছে চেক ক্লোন করে টাকা আরটিজিএস করা হয়েছে। অথচ এটা সত্যি না বলেও তদন্তে উঠে আসছে। টাকার চেক বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়েছিল। এটা ঋণ হিসাবে। কীভাবে এই ঋণ দেওয়া হলো? ব্যাঙ্ক কেন কোটি কোটি টাকা মুহূর্তে রাজ্যের বাইরে পাঠিয়ে দিলো? একদিনও অপেক্ষা করলেন না ইউকো ব্যাঙ্কের আগরতলা শাখার ম্যানেজার সহ কর্মীরা? এই প্রশ্নের জবাব রাজ্য পুলিশ দেয় না। আগরতলা পুর নিগমের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনীয়ার কেন মামলা করলেন না? প্রশ্ন উঠছে কেন পুর নিগমের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনীয়ার, অ্যাকাউন্টেন্ট, ক্যাশিয়ারকে গ্রেপ্তার করে না পুলিশ? মামলার পরদিনই মেয়র দীপক মজুমদার সংবাদ মাধ্যমে বলে দেন, পুর নিগমের কেউ এই জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত নন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য পুলিশের ক্ষমতা নেই পুর নিগমের কারোর নাম মামলায় জড়াতে। এখানে প্রভাবশালী বড় নেতা, বড় প্রশাসনিক আধিকারিক জড়িয়ে পড়বেন। ষোল কোটির বদলে কয়েকশো কোটি টাকার কেলেঙ্কারি ধরা পড়তে পারে। যেমনটা অভিযোগ করেছিলেন বিরোধী দলনেতা জিতেন্দ্র চৌধুরী। কেলেঙ্কারি ধামাচাপা পড়ছে ক্রাইম ব্রাঞ্চে। দ্রুত মামলার তদন্ত সিবিআই না নিলে ষোল কোটি টাকার নামে পুর নিগমের কয়েকশো কোটি টাকার হদিশ আর পাওয়া যাবে না। রাজ্যের উন্নয়নের টাকা কিছু নেতা, আমলাদের পকেটে কাটমানি হিসাবে থেকে যাবে। বাকি সব টাকা নিয়ে যাবে রাজ্যের বাইরের প্রতারকরা।