সোমবার ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ সার্কিট যাত্রা শুরু করবে ‘ভারত গৌরব’ ট্রেন!!
চরমে অস্থিরতা।।

গণতন্রে উওরণ বিলম্বিত হলে,সংকট ঘণীভূত হয়।বাংলাদেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে সেখানকার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর সংঘাত যে পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে, তাতে এই সংকটের ছায়াই প্রলম্বিত হতে দেখা যাচ্ছে।সম্প্রতি দেশটির সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আগামী এপ্রিলে নির্বাচন করানোর বিষয়ে যে ঘোষণা দিয়েছেন তাতে দেশের প্রায় সবকটি প্রধান বিরোধী দলই অসন্তুষ্ট। বিএনপি ইউনুসের এপ্রিলের নির্বাচনের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় বলেছে, নির্বাচনকে বিলম্বিত করার লক্ষ্যেই এপ্রিলকে বেছে নিয়েছেন ইউনুস। এমনকি এইদিন ইউনুস ভোটের ঘোষণা দিতে গিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন, তা ইউনুসের শব্দচয়ণে রাজনৈতিক সৌজন্যতার সীমা অতিক্রম করেছে বলেও বিএনপি অভিযোগ করেছে।
সব মিলিয়ে নির্বাচন ঘোষণার মাধ্যমে ইউনুস এবং তার উপদেষ্টামণ্ডলী দেশের প্রায় বেশিরভাগ বিরোধী দলের কাছে নিরপেক্ষ চরিত্র হারিয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ ইতিমধ্যেই অভিযোগ উঠেছে, এপ্রিলে ভোট ঘোষণা করার মধ্য দিয়ে ইউনুস একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন। এই বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠী বলতে বাদবাকী বিরোধীরা যে জামায়েত ইসলামী সহ বাকি দুই একটি দলকেই ইঙ্গিত করেছেন সেটা মোটামুটি সকলের কাছেই পরিষ্কার।
আসলে বিএনপি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চাইছে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়েই।কারণ নির্বাচন হলেই বিএনপি ক্ষমতায় যাবে – এই ধারণা মোটামুটি বিএনপি সহ দেশের রাজনীতিতে তৈরি হয়ে আছে।কারণ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে ভোটের ময়দানে অন্য কোনও দলকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করছে না বিএনপি।ফলে রাজনৈতিক দল হিসেবে তৈরি হওয়ার সুযোগ বা সম্ভাবনাকে দ্রুত কাজে লাগিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার একটা বিষয় কাজ করছে। তাছাড়া নির্বাচন পিছিয়ে গেলে জামায়েত কৌশলে বাড়তি সুযোগ নেবে। কারণ বিএনপির মধ্যেই ইদানীং চাঁদাবাজি কিংবা আধিপত্য বিস্তারের একটা অভিযোগ রয়েছে। ভোেট দেরিতে হলে বর্তমানের সহায়ক পরিস্থিতিগুলি বিএনপি এতটা সহজে কাজে লাগাতে পারবে না। তাছাড়া দিন যত যাবে বিএনপির বিরুদ্ধে সমালোচনা বা অভিযোগের বহর বাড়তে থাকবে। এই সুযোগ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার হয়তো চাইবে বিএনপির বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ হিসেবে জামায়েত ও আরো দুই-একটা মৌলবাদী দলকে সামনে নিয়ে আসা। এই ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেয়েই মরিয়া বিএনপি ডিসেম্বরেই নির্বাচনের দাবিতে অনড়। কিন্তু প্রশ্ন হলো, অন্তর্বর্তী সরকার যদি নিজের অবস্থান পরিবর্তন না করে
এপ্রিলেই ভোটে যেতে চায়। তখন বিএনপির কি করার আছে?
একটা বিষয় যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ যে, বিএনপি সহ প্রায় ৩০টির মতো বিরোধী রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের দাবি জানিয়ে রাখলেও জামায়েত এবং এনসিপির অবস্থান কিন্তু আলাদা। ইতিমধ্যেই ইউনুসের ঘোষিত এপ্রিলে সম্ভাব্য নির্বাচন নিয়ে জামায়েত সন্তোষ ব্যক্ত করেছে। আসলে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এপ্রিলে নির্বাচন হতে পারে এমন মত আগেই দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ সেনাপ্রধানের পরামর্শ কিংবা বিএনপি সহ দেশের বেশিরভাগ বিরোধী দলের দাবিকে অস্বীকার করেই অন্তর্বর্তী সরকার জামায়েতে ইসলামী এবং এনসিপির পরামর্শ গ্রহণ করেই নির্বাচনের জন্য এপ্রিল মাসকে বেছে নিয়েছে এটা এখন একপ্রকার পরিষ্কার। প্রসঙ্গত, ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের বিষয়টি শুরুতেই আলোচনায় এনেছিলেন দেশটির সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। স্বাভাবিক কারণে নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশের পরিস্থিতি যে ক্রমশই ঘোরালো হতে শুরু করেছে এটা নিশ্চিত। আর এপ্রিলের মতো প্রতিকূল প্রাকৃতিক আবহাওয়ায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হতে পারলে আদৌ দেশে কবে নাগাদ পর্যন্ত নির্বাচন করানো সম্ভব হবে সেই আশঙ্কা কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। সব মিলিয়ে আবারো একটা অনিশ্চয়তা, অস্থিরতা, অচলাবস্থার দিকে বাংলাদেশের রাজনীতি ধাবিত হয় কিনা সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। আর এক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের সামনে কালো মেঘ আরো ঘণীভূত হতে চলেছে তার ইঙ্গিত কিন্তু এই ঘটনাক্রমের নিরীখে আভাস মিলছে- তেমনটাই আশঙ্কা বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহলের।