ছাত্র ভর্তির অনৈতিক দাবিতে উত্তাল কলেজ,শিক্ষকদের দরজা বন্ধ করে বিক্ষোভ, অশ্লীল গালাগাল!!
ঘুমন্ত উচ্চশিক্ষা!!

রাজ্যে উচ্চশিক্ষা দপ্তর নামে একটি দপ্তর রয়েছে। মূলত শিক্ষা দপ্তরের অধীনেই এই দপ্তর। আদতে এই দপ্তরের অস্তিত্ব আছে কি না তা বোঝা দুষ্কর। কিছু কলেজ, নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এই দপ্তর। কিন্তু সেই কলেজগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের কী হাল তা কী জানেন উচ্চশিক্ষা দপ্তরের কর্তারা।সংবাদে প্রকাশ পেয়েছে যে, রাজ্য উচ্চশিক্ষা দপ্তরের বদান্যতায় ত্রিপুরার প্রায় ২০ হাজার ছাত্রছাত্রী মাস্টার ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হতে পারবে না। আরও বুঝিয়ে বললে বলা যায় – রাজ্য উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সৌজন্যে রাজ্যের প্রায় ২০ হাজার স্নাতক ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষা গ্রহণ প্রায় এক বছর পিছিয়ে যাবে। এর জন্য দায়ী কারা? কী কারণে ছাত্রছাত্রীরা এক বছর পিছিয়ে পড়বে তার কী কোনও ব্যাখ্যা আছে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের কাছে।
সংবাদে প্রকাশ, সেখানে ঘটে তা চূড়ান্ত সেমিস্টারের পরীক্ষা এবং ফল প্রকাশের কার্য এবং পরবর্তীতে ছাত্রছাত্রীরা মাস্টার ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হবার কথা সেই জায়গায় তারা এখন পঞ্চম সেমিস্টারের পরীক্ষা দিয়েছে। অর্থাৎ তাদের চূড়ান্ত বর্ষের তথা চূড়ান্ত সেমিস্টার পরীক্ষা হতে আরও ছয় মাস দেরি। রেজাল্ট প্রকাশিত হতে আরও দেরি। অর্থাৎ গোটা পর্বটি শেষ হবার পর ছাত্রছাত্রীদের কাছে চলতি বর্ষে আর মাস্টার ডিগ্রিতে ভর্তি হওয়া দূরঅস্ত ঠেকতে চলছে। সুতরাং ছাত্রছাত্রীরা যে চলতি বর্ষে মাস্টার ডিগ্রিতে ভর্তি হতে পারলো না এর জন্য দায় কার? ছাত্রছাত্রীদের জীবন থেকে যে একটা বছর হারিয়ে যেতে বসেছে এর জন্য দায়ী কারা? এর দায়ভার কে নেবে?
কেননা, ইতোমধ্যেই ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়, এমবিবি বিশ্ববিদ্যালয় সহ সারা দেশেই সরকারী, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। তাহলে কি দাঁড়াল? ছাত্রছাত্রীরা চলতি বর্ষে আর মাস্টার ডিগ্রি কোর্সে ভর্তি হতে পারছে না। তাহলে দাঁড়াল কী? ত্রিপুরার কলেজগুলিতে পাঠরত ছাত্রছাত্রীরা এ বছরের জন্য মাস্টার ডিগ্রি কোর্সে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত। অথচ এমন তো হবার কথা ছিল না। কেন এমন হলো?
জানা গেছে, ২০২২ সালে তড়িঘড়ি কোন চিন্তাভাবনা না করেই জাতীয় শিক্ষানীতি চালু করতে গিয়ে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের এখন ল্যাজেগোবরে অবস্থা। রাজ্যের পঁচিশটি সাধারণ ডিগ্রি কলেজ এবং সাতটি বেসরকারী ডিগ্রি কলেজে প্রায় ২০ হাজার ছাত্রছাত্রী এর শিকার হয়েছেন বলে জানা গেছে। এই ২০ হাজার ছাত্রছাত্রীদের বেশিভাগই স্নাতক ডিগ্রি গ্রহণের পর উচ্চশিক্ষা লাভে মাস্টার ডিগ্রিতে ভর্তি হতে ইচ্ছুক ছিল। কিন্তু তাদের সেই আশার গুড়ে বালি দিল উচ্চশিক্ষা দপ্তর।
বর্তমানে কলেজগুলিতে সেই পরীক্ষা আগের মতো নেই। সেমিস্টার প্রথা চলে এসেছে কলেজগুলিতে। ফলে এখন ৬ মাস অন্তর অন্তর সেমিস্টার পরীক্ষা হয়ে থাকে। তিন বছর আগে ভর্তি হবার পর এটাই তাদের চূড়ান্ত সেমিস্টার হবার কথা ছিল। কিন্তু তাদের পরীক্ষা হয়েছে ৫ম সেমিস্টারের। ঘুমে রয়েছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। এতে করে ছাত্রছাত্রীদের একটা বিরাট অংশ মাস্টার ডিগ্রিতে ভর্তি হতে পারল না এ বছর। এর দায় কি নেবে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। ২৫ সালে যে চূড়ান্ত সেমিস্টার হবার কথা তার বদলে এবার রাজ্যের প্রায় ২০ হাজার ছাত্রছাত্রীর চূড়ান্ত সেমিস্টার হবে চলতি বছরের শেষদিকে কিংবা আগামী বছরের প্রথম দিকে। এর ব্যর্থতা অবশ্যই উচ্চশিক্ষা দপ্তরের। উচ্চশিক্ষা দপ্তরের এর দায় নিতে হবে। উচ্চশিক্ষা দপ্তর এর জবাব দেবার জন্য তৈরি তো?