গাছ নয়, ঘর থেকে কার্বন শোষক নয়া ব্যাকটেরিয়ার খোঁজ বিজ্ঞানীদের!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-সালোকসংশ্লেষ এই বিশেষ পদ্ধতিতেই আজও পৃথিবী ফুরফুরে, সবুজে ভরা। এই পদ্ধতির মাধ্যমেই প্রাণভরে শ্বাস নেওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে আমাদের চিরপরিচিত এই পৃথিবীতে সালোকসংশ্লেষ-এর প্রসঙ্গ এলেই মনে পড়ে মানুষের প্রকৃত বন্ধু উদ্ভিদদের কথা। সবুজ পাতা, সূর্যের আলো, মাটির জল আর বাতাসের কার্বন-ডাই-অক্সাইডের সাহায্যে নিজের খাবার নিজেরাই তৈরি করে বিশ্ব চরাচরের বেশিরভাগ উদ্ভিদ। তাতে সুবিধা এই যে বায়ু থেকে প্রচুর বিষ অর্থাৎ ক্ষতিকারক কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ করে উদ্ভিদরা এবং তার বদলে তারা পরিবেশে দান করে প্রাণবায়ু অক্সিজেন। এবার পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে বিজ্ঞানীরা এক যুগান্তকারী আবিষ্কার করেছেন।
বিজ্ঞানীরা পরিবেশ থেকে কৃত্রিম সালোকসংশ্লেষ অর্থাৎ ‘ফটোসিন্থেটিক’ উপাদানের খোঁজ পেয়েছেন। যা যেকোনও ঘর থেকে সহজেই কার্বন শুষে নিতে সক্ষম, এমনই দাবি একদল সুইস বিজ্ঞানীর। পরিবেশ দূষণ রুখতে কতজন কতই না উপায় হাতড়াচ্ছেন আজকাল, গবেষণাও চলছে জোরকদমে। আর তাতেই নতুন এক ফটোসিন্থেটিক উপাদান উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি ওই সুইস গবেষকদলের। বলা হচ্ছে, সায়নো ব্যাকটেরিয়া যা কিনা পৃথিবীর অন্যতম আদি জীবের তালিকায় বর্তমান, তাকে কাজে লাগিয়েই এভাবে ঘর কিংবা বড় বড় ইমারতের কার্বন শোষণের এক অভিনব পন্থা বের করতে পেরেছেন তারা।
নীলাভ-সবুজ শৈবাল সালোকসংশ্লেষ একধরনের করতে সক্ষম। বলা হচ্ছে, তেমন পরিবেশ পেলে এই সায়নো ব্যাকটেরিয়া দূষণরোধে বড়োসড়ো ভূমিকা পালন করতে পারে। গবেষক দলের অন্যতম বিজ্ঞানী ইফান কুইয়ের বলেন, ‘সায়নোব্যাকটেরিয়া হল পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন এক জীব। সামান্য সূর্যালোক পেলেই তারা সালোকসংশ্লেষ করতে সক্ষম। তাতেই পরিবেশের কার্বন-ডাই-অক্সাইড শোষণ এবং অক্সিজেন নিগমন হয় বৃহৎ পরিমাণে।
নেচার কমিউনিকেশন’ জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, সায়নো ব্যাকটেরিয়াকে কাজে লাগিয়ে একধরনের হাইড্রোজেল তৈরি করা হচ্ছে। পলিমারের সঙ্গে একটি বিশেষ বিক্রিয়া ঘটিয়ে জলীয় উপাদান সমৃদ্ধ সেই জেলি যদি কোনও বড় ভবনে রাখা যায়, তাহলে উপযুক্ত পরিবেশে তা কার্বন শুষে নেবে নিমেষে। এই গবেষণার রিপোর্টে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, একটি বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে একটি ফটোসিন্থেটিক জৈব উপাদান তৈরি করা হয়েছে, যা বায়োমাসের মাধ্যমে কার্বন শুষে নিতে সক্ষম। এছাড়া অজৈব পদার্থ থেকে কার্বোনেট শোষণ করে পরিবেশকে সুস্থ করতে পারে এই উপাদান। এই জৈব পদার্থটি ৪০০ দিন সময় পেলে যে কোনও স্থানে (অবশ্যই উপযুক্ত পরিবেশে) পরিপূর্ণভাবে পরিবেশ বান্ধব হয়ে উঠবে বলে গবেষণার ফলাফলে প্রকাশিত হয়েছে। ইটালির ভেনিস শহরের গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, দু’ থেকে তিনটি ছোট গাছের গুঁড়ির আকারের উপাদান দিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। যা প্রতি বছর ১৮ কিলোগ্রাম কার্বন-ডাই-অক্সাইড শুষে নিতে সক্ষম।