খেতে নেমে ধানের চারা রোপণ, কৃষকদের উৎসাহ কৃষিমন্ত্রীর!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- ধান চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে শুধু মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভাষণে নয়, একেবারে মাঠে নেমে জল কাদায় চাষিদের সাথে ধানের চারা রোপণ করে উৎসাহ জোগালেন কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ। বৃহস্পতিবার তিনি সিমনা বিধানসভার ঈশানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নন্দলাল দাস পাড়ায় কৃষিখেতে শ্রী পদ্ধতিতে ধান চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করলেন। পাশে ছিলেন মোহনপুর পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারপার্সন রাকেশ দেব,মোহনপুর পুর পরিষদের ভাইস চেয়ারপার্সন শংকর দেব এবং দপ্তরের আধিকারিক সহ অন্যরা। তাছাড়া রাজ্য সরকার হাইব্রিড ধান চাষে গুরুত্ব দিচ্ছে কারণ একদিকে কৃষকদের আয় বৃদ্ধি পাবে অন্যদিকে অল্প সময়ে ধানের উৎপাদন বেশি হবে।

মাঠে জল কাদায় কর্মরত কৃষকদের সাথে চারা রোপণ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, চাষিরা হচ্ছে ভারত আত্মা। দেহ থেকে আত্মা চলে গেলে মানুষ যেরকম মৃত হয়ে যায়, তেমনি কৃষক বেঁচে থাকলে আগামী ভারতবর্ষ সূর্যোদয় দেখতে পাবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও চাইছেন ভারতবর্ষ খাদ্যশস্য উৎপাদনে পৃথিবীতে গ্লোবালভাবে পরিণত হোক।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, চারা রোপণের মধ্য দিয়ে কৃষকদের উৎসাহিত করতে এবং নতুন প্রজন্মকে কৃষি কাজের সম্মান জানানোর বার্তা দিতে এই প্রয়াস। তারা শিক্ষাদীক্ষায় উন্নত হলেও, তাদের এই উন্নত জীবন গঠনে কৃষকদের যে কত বড় ভূমিকা আধুনিক সভ্যতায় সেই গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারে না। তাই আগামী প্রজন্ম যেন কৃষকদের সম্মান দেয় সেজন্য এই প্রচেষ্টা।

রাজ্য সরকার ধান উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হাইব্রিড ধান চাষের গুরুত্ব দিচ্ছে।২০২৫-২৬ খারিফ মরশুমে ২৫ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে এই হাইব্রিড ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়া ২০২৪-২৫ সালের রাজ্যে মোট ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এরমধ্যে খারিফ মরশুমে ৮৬৩০ হেক্টর, রবি মরশুমে ২৬ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। বর্তমানে ৩০ লাখ কানি জমিতে বিভিন্ন উৎপাদন তাত্ত্বিক ফসলের চাষ হয়। প্রতিবছর ১৫ লাখ কানি জমিতে ধান চাষ।

এরমধ্যে ৯.১ লাখ কানিতে আমন ধান, তিন দশমিক ৯৪ লক্ষ কানিতে বোরো ধান এবং প্রায় ৮৫ হাজার কানিতে জুম চাষ হয়। তিনি আরও জানান, ৫৮টি ব্লকের মধ্যে বর্তমানে ৩০টি ব্লক এবং দক্ষিণ গোমতী ও সিপাহীজলা জেলা খাদ্যশস্য উৎপাদনে আত্মনির্ভর। রাজ্য সরকার শ্রী পদ্ধতিতে ধান চাষে জোর দিচ্ছে চালের ঘাটতি মেটাতে। সরকারের তরফে যে সহযোগিতা করা হবে তা হলো নির্ধারিত নিয়ম মেনে চাষ করলে সরকার অর্থ সাহায্য সার ও অন্যান্য উপকরণ দেবে। এদিন কৃষিমন্ত্রী ওই কৃষিখেতে কাজ করতে থাকা সাতজন মহিলাকে জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে মিষ্টি খাওয়ার জন্য দিয়েছেন। পাশাপাশি কৃষি খেতের পাশে দাঁড়িয়ে কৃষকদেরও রিশা পরিয়ে সম্মান জানান। এদিন তিনটি পরিবারের মধ্যে বিদ্যুতের কানেকশন সহ অন্য সমস্যাও সমাধান করে দিলেন ওই জায়গায় বসে।
