দেশি-বিদেশিদের উপচে পড়া ভিড়,আন্তর্জাতিক পর্যটন মানচিত্রে জম্পুই!!
কোন পথে রাজনীতি??
রাজনীতির সহজ পাঠই হলো আত্মসমালোচনা।প্রতিপক্ষকে সম্মান করাচ ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়া। প্রতিনিয়ত সংশোধনের পথে হেঁটে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা। কিন্তু বর্তমান ভোট রাজনীতির পাকচক্রে ঘুরপাক খেতে খেতে রাজনীতির সেই ‘সহজ পাঠ’ গুলিই বেমালুম ভুলে গেছেন রাজনীতিকরা। শাসক কিংবা বিরোধী- পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখা যাবে নিতান্ত বেকায়দায় না পড়লে কেউই এখন ভুল স্বীকার করতে চান না। আত্মসমালোচনা দূরের কথা। এরা মুখে বলেন আত্মসমালোচনার কথা, ভুল থেকে শিক্ষা নেওয়ার কথা, ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেদের সংশোধনের পথে হাঁটার কথা, প্রতিপক্ষকে সম্মান ও মর্যাদা দেওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে অশ্বডিম্ব। এদের কথার সঙ্গে কাজের কোনও মিল নেই। শুধু মুখ আর মুখোশের খেলা চলছে। সমাজবিদরা বলেন, ভারতীয় রাজনীতির প্রকৃত সংজ্ঞা পাল্টে গিয়ে রাজনীতিকে ‘পেশা’ হিসাবে দেখা শুরু হয়েছে আরও সহজ করে বললে রাজনীতি যখন ‘পেশা’ হিসাবে তকমা পেয়েছে, তখন থেকেই ভারতীয় রাজনীতির সংস্কৃতিও পাল্টে গেছে। মহান গণতন্ত্রের অপরিহার্য এই ক্ষেত্রটি আজ মারাত্মকভাবে দূষিত, কলুষিত হয়ে পড়েছে। রাজনীতির প্রতিটি অঙ্গ এখন কলঙ্কিত। আত্মসমালোচনা এখন অতীত। রাজনীতিকরা এখন জনগণের সামনে দাঁড়িয়ে সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলার সাহস হারিয়েছেন।
রাজনীতিতে এখন প্রবেশ করেছে ভয়, হিংসা, সন্ত্রাস, খুন, হুমকি সহ আরও অনেক কিছু। রাজনীতি মানেই এখন কথার ফুলঝুড়ি। কে কেত বেশি কুকথা বলতে পারে, কে কত বেশি হুমকি দিতে পারে, কে কত বেশি ভয়ের পরিবেশ ও পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, কে কত বেশি প্রতিপক্ষকে অসম্মান করতে পারে, এখন শুধু তারই প্রতিযোগিতা চলছে। এসবই এখন রাজনীতির মূল উপাদান হয়ে উঠেছে। গতকালও (রবিবার) একটি সভায় রাজ্য কংগ্রেসের এক বিধায়ক প্রকাশ্যে যেভাবে বুথ লেভেল অফিসারদের (বিএলও) হুমকি দিয়েছেন, তা এককথায় নজিরবিহীন। ওই বিধায়ক শুধু হুমকি দিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি, বুথ লেভেল অফিসারদের সরাসরি পেটানোর কথা বলছেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, একজন জনপ্রতিনিধি এভাবে প্রকাশ্যে সরকারী কর্মচারীকে (বিএলও) হুমকি দিয়ে তাদেরকে পিটানোর (মারধোর) কথা প্রকাশ্যে বলতে পারেন কিনা? সারা দেশেই এখন ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধনী অর্থাৎ স্পেশাল ইনটেনসিভ (রিভিশন ( এসআইআর) নিয়ে সরগরম। ত্রিপুরাতেও এই কর্মসূচি রূপায়ণের প্রাথমিক প্রক্রিয়ার কাজ শুরু হয়েছে। আর এই কাজটি সম্পাদনে মুখ্য ভূমিকা পালন করবেন নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত বুথ লেভেল অফিসাররা। এরা যাতে বর্তমান শাসক দলের হয়ে অন্যায় ভাবে কোনও বৈধ ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ না দেন, তার জন্য আগাম সতর্ক করতে গিয়েই কংগ্রেস বিধায়ক বুথ লেভেল অফিসারদের সরাসরি পেটানোর নিদান দিয়েছেন।
অন্যদিকে, একই পরিস্থিতি শাসক দলের ক্ষেত্রেও। রবিবার কংগ্রেসের এই সভাকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই কৃষ্ণনগর নোয়াগাঁও এলাকা উত্তপ্ত। বিরোধী দলের এই সভাকে বানচাল করে দিতে শাসক আশ্রিত দুষ্কৃতী বাহিনী সকাল থেকেই সক্রিয় হয়ে উঠে। ভেঙে ফেলে দেয় বিরোধীদলের সভার মঞ্চ। সকাল থেকেই এলাকায় ভয়-ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে রাখা হয়। কেউ যাতে এই সভায় না আসে, তার জন্য এলাকায় অলিখিত হুলিয়া জারি করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এরকম অজস্র উদাহরণ, ঘটনা প্রতিদিন ঘটে চলেছে। প্রকাশ্য জনসভায় রাজনৈতিক কর্মী ও সমর্থকদের উদ্বুদ্ধ করতে রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীরা এমন কুকথা, এমন কুৎসিত ভাষাই ব্যবহার করছেন। প্রতিপক্ষকে কীভাবে কোণঠাসা করা যায়, সমাজে ভয়-ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করে রাজনীতির অঙ্গনকে কলুষিত করা যায়, শুধু তারই প্রতিযোগিতা চলছে। বলতে কোনও দ্বিধা নেই। আসলে । রাজনীতির বিষয় তুলে আনতে এখন সকলেই ব্যর্থ। এদের যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন আছে। এভাবে চলতে থাকলে, আমাদের ভবিষ্যৎ বড় অন্ধকার একথা হলফ করে বলা যায়। কোন পথে ছুটছে রাজনীতি? এই প্রশ্নের জবাব এখনই খুঁজতে হবে।