কুয়েতে হাজারো মানুষের নাগরিকত্ব বাতিল!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-এক মুহূর্তেই রাষ্ট্রহীন—একই ঘটনা ঘটেছে হাজারো মানুষের সঙ্গে, যাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী। ৮৪ বছর বয়সী আমির মিলাশ আল-আহমাদ আল-জাবের আল-সাবহ কুয়েতের নতুন শাসক পদে আসীন হওয়ার পর থেকে ত তিনি বেশ কর্তৃত্ববাদী পথে এগোচ্ছেন। কুয়েত সিটিতে ক্লাসের জন্য ক্রেডিট কার্ডে পেমেন্ট প্রত্যাখ্যান হওয়ার পরই জানতে পারেন, তাদের ব্যাংক হিসাব সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। কারণ বিয়ের মাধ্যমে পাওয়া নাগরিকত্বটি সরকার বাতিল করেছে। কর্তৃপক্ষের প্রতিক্রিয়ার ভয়ে নিজের পরিচয় গোপন রাখার শর্তে পঞ্চাশোর্ধ্ব জর্দান বংশোদ্ভূত এই নারী ছদ্মনামে এএফপিকে বলেন, ‘এটা ছিল এক ভয়ানক ধাক্কা। ২০ বছরের বেশি সময় আইন মেনে চলার পর একদিন হঠাৎ জানতে পারলাম আমি আর নাগরিক নই তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’ কুয়েতে গণহারে নাগরিকত্ব বাতিলের ব্যপারটি সংস্কারমূলক এজেন্ডার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে মসনদে বসেই পাঁচ মাসের মাথায় সংসদ বাতিল করেন এবং সংবিধানের কিছু অংশ স্থগিত করেন। বিশ্লেষকদের অভিমত, তার এই পদক্ষেপ মূলত কুয়েতি পরিচয় পুনর্গঠনের লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে, যার লক্ষ্য রক্তসূত্রে কুয়েতিদের নাগরিকত্ব সীমিত রাখা এবং দীর্ঘদিন ধরে চলা রাজনৈতিক অচলাবস্থার প্রেক্ষিতে ভোটার সংখ্যা হ্রাস করা।দেশটিতে জনসংখ্যা প্রায় ৫০ লাখ, যাদের মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ কুয়েতি। তাদের উদ্দেশ্যে মার্চ মাসে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে আমির বলেছিলেন, তিনি কুয়েতকে ‘তার মূল মানুষদের হাতে তুলে দেবেন, যেখান থেকে সব অপবিত্রতা দূর হবে। গত আগস্ট থেকে নাগরিকত্ব হারানো মানুষের সংখ্যা ৩৭ হাজার ছাপিয়েছে। যাদের মধ্যে ২৬ হাজার নারী অন্তত। গণমাধ্যমগুলো যদিও বলছে, প্রকৃত সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে। কুয়েত ইউনিভার্সিটির ইতিহাসের সহকারী অধ্যাপক বদর আল-সাইফ এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বলেছেন, ‘বিশাল সংখ্যার নাগরিকত্ব বাতিল কুয়েতের ইতিহাসে নজিরবিহীন।’