August 2, 2025

কর্মী ও অফিসার সংকটে জেরবার কৃষি ও উদ্যান দপ্তর

 কর্মী ও অফিসার সংকটে জেরবার কৃষি ও উদ্যান দপ্তর

দৈনিক সংবাদ অনলাইন প্রতিনিধি || কর্মী ও অফিসার সংকটে জেরবার কৃষি ও উদ্যান দপ্তর । কর্মী ও অফিসারের প্রয়োজনের চেয়ে নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হয় নামমাত্র।এতে দিন দিন দপ্তরে কাজ বাড়লেও কর্মী ও অফিসার সংকটে ব্যাহত হচ্ছে উন্নয়নমূলক কাজ।এরই মধ্যে নামমাত্র কিছু সংখ্যক অফিসার নিয়োগের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তাতে বহিঃরাজ্যের যুবক-যুবতীদের ইন্টারভিউ’র সুযোগ করে দেওয়ায় বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় ভোগছেন রাজ্যের কৃষি ও উদ্যান বিষয় নিয়ে ডিগ্রি ও মাস্টার ডিগ্রিধারী যুবক- যুবতীরা।এ নিয়ে আগাম ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে। এদিকে রাজ্যের কৃষি ও উদ্যান বিষয় নিয়ে পাস করা ডিগ্রি ও মাস্টার ডিগ্রিধারীরা জানান, ত্রিপুরা একটি কৃষি নির্ভর রাজ্য।রাজ্যের কৃষি ব্যবস্থার উন্নতির জন্য কৃষি দপ্তর প্রতিনিয়ত উন্নয়নমুখী কর্মযজ্ঞে ব্যস্ত। তৃণমূল স্তরে কৃষি অফিসারদের প্রচণ্ড সংকট।যেখানে ৩৮৩ জনের সেংশন পোস্ট আছে,সেখানে মাত্র ৬০ জনের মতো অফিসার বর্তমানে মাঠে কাজ করছেন,এদিকে রাজ্যের সরকার আবার আগামী ১৮ জুন টিপিএসসির মাধ্যমে ষাটটি পদে নতুন কৃষি অফিসার নিয়োগের জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষার আয়োজন করতে চলেছে। এসবের মাঝখানে দীর্ঘদিন ধরে ত্রিপুরা কৃষি স্নাতকদের মধ্যে যে গুঞ্জন কান পাতলেই শোনা যায় তা হলো রাজ্যের কৃষি দপ্তরের অধীনস্থ কৃষি অফিসার পদের জন্য ভারতের যে কোনও রাজ্য থেকে পরীক্ষা দিতে পারার যে নিয়ম রয়েছে তা কতটুকু যুক্তিযুক্ত?কারণ একদিকে রাজ্যে শতশত কৃষি স্নাতক দীর্ঘদিন ধরেই বেকারত্বের জীবনযাপন করছে।অনেকে উচ্চ ডিগ্রি নিয়েও সরকারী চাকরিতে আবেদনের বয়স প্রায় পেরিয়ে ফেলছে,কারণ প্রায় ১৩ বছরে মাত্র একবার এই পদে নিয়োগ হয়েছে বছর খানেক আগে।কৃষি নিয়ে সেই রকম কোনও প্রাইভেট সংস্থা ত্রিপুরাতে নেই।আর যত সংখ্যক কৃষি প্রকল্প আছে তাতে এতো বেকারের কর্মসংস্থান অসম্ভব।এমন অবস্থায় কৃষি অফিসারের পদটি ছিল তাদের জন্য আশার আলো।কিন্তু এ সমস্ত পদের একটা ভাগ যদি বহিঃরাজ্যের যুবক-যুবতীদের কাছে চলে যায় এতে করে রাজ্যের বেকার কৃষি স্নাতকরাই বঞ্চিত হবে। অন্যদিকে,বিগত দিনে বহিঃরাজ্যের কৃষি স্নাতকরা রাজ্যে চাকরি পেয়েছে ঠিক,কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই ত্রিপুরা সরকারের বেতন নিয়ে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে নিজের রাজ্যে পাড়ি দিয়েছে।এই বিগত পরীক্ষায় প্রায় ৩০ জনের মতো (ঝাড়খণ্ড, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ, মণিপুর, গুজরাট, কেরালা ইত্যাদি রাজ্য থেকে) বহিঃরাজ্যের কৃষি স্নাতক টিপিএসসি পরীক্ষায় মৌখিক উত্তীর্ণ হয়েছে। ফাইনাল লিস্টে ৩-৪ জন স্থান পেলেও মাত্র ১জন চাকরিতে জয়েন করেছেন।বাকিরা শুধুমাত্র ত্রিপুরা রাজ্যের অনেক বেকারদের পেছনে ফেলে দিতেই পরীক্ষায় বসে। নিজের রাজ্যের বেকারদের কথা চিন্তা করে গতবছর পার্শ্ববর্তী আসাম সরকার ফিসারি অফিসার নিয়োগের জন্য ‘State Domicile’ বাধ্যতামূলক করেছে। হরিয়ানার মতো রাজ্যগুলি রাজ্যের সরকারী ভাষা জানা বাধ্যতামূলক করেছে।এমনকী অবাক করার মতো একটি বিষয় হলো এই ত্রিপুরা রাজ্যেই প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের অধীনে যে ভেটেরিনারি অফিসার নিয়োগের জন্য নোটিফিকেশন বেরিয়েছে (ADV No.01/23) তাতেও ‘State Domicile’ বাধ্যতামূলক রাখা হয়েছে। মৌখিক পরীক্ষায় কিছু আলাদা মার্কস রাখা হয়েছে বাংলা/kokborok ভাষা জানার জন্য।এখন প্রশ্ন হল একই রাজ্যের দুটি দপ্তরে সমপর্যায়ের দুটি পদের জন্য কোনও এই আলাদা আলাদা নিয়ম সেটাই কৃষি স্নাতকদের বোধগম্য হচ্ছে না।এছাড়া কৃষি অফিসারদের কাজ মাঠ পর্যায়ে,তারা কৃষকদের সাথে একত্রিত হয়েই কৃষকদের উন্নতি সাধনে বিভিন্ন সরকারী নীতিমালা স্থাপন করে থাকেন,এমতাবস্থায় আগামীতে যদি বহিঃরাজ্যের কোনও লোক এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত হন সেই ক্ষেত্রে রাজ্যের বেকার কৃষি স্নাতকদের পাশাপাশি ভাষাগত অসুবিধার জন্য রাজ্যের কৃষকরাও কোথাও না কোথাও সুবিধাবঞ্চিত হবেন এবং রাজ্যের প্রাকৃতিক পরিবেশ, জলবায়ু জনসমাজ সম্পর্কে রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা একজন কৃষি স্নাতক যতটুকু জানবেন বুঝবেন তা বহিঃরাজ্যের কেউ বুঝবেন না যার ফলে রাজ্য কৃষিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। উক্ত কারণসমূহের জন্যই বিভিন্ন রাজ্যের উদাহরণ নিয়ে এবং রাজ্যের কৃষি ও কৃষি স্নাতকদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মতো কৃষি দপ্তরেও ‘State Domicile’ বাধ্যতামূলক করাই প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন রাজ্যের কৃষি ও উদ্যান বিষয়ক ডিগ্রিধারীরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *