চাদর-কম্বল বিতর্কে ট্রেনের ভেতর মর্মান্তিক খুন: সেনা জওয়ানকে কুপিয়ে হত্যা করল রেলকর্মী!!
কর্মসংস্থানের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ: মুখ্যমন্ত্রী!!
অনলাইন প্রতিনিধি:-জনজাতি এলাকার উন্নয়ন ছাড়া সার্বিকভাবে ত্রিপুরা রাজ্যের উন্নয়ন সম্ভব নয়। রাজ্য সরকার ২০২৫-২৬ আর্থিক বছরে তাই জনজাতি এলাকার উন্নয়নের জন্য মূল বাজেট থেকে ৪০ শতাংশেরও অধিক বরাদ্দ রেখেছে। বৃহস্পতিবার ধলাই জেলার ছৈলেংটা বাজার মাঠে আয়োজিত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ব্রু প্রার্থীদের রাজ্যভিত্তিক টুলকিট বিতরণ এবং ভার্চুয়ালি বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এছাড়াও ছামনু দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের নতুন পাকা ভবন, ছামনু ফায়ার স্টেশনের নতুন ভবন, মনু আরডি ডিভিশনের অধীনে এগজিকিউটিভইঞ্জিনীয়ার অফিসের নতুন ভবন এবং মনু এলাকার রাস্তার ধারে সৌন্দর্যায়নের সুবিধা নির্মাণ করতে ভার্চুয়ালি মুখ্যমন্ত্রী এক এক করে এই প্রকল্পগুলিরও সূচনা করেন। অনুষ্ঠানে শুরুতে স্বাবলম্বন যোজনায় এদিন মোট ৬টি অটো রিকশার ফ্ল্যাগ অফ করেন মুখ্যমন্ত্রী।এরপরই আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা বলেন, এই প্রকল্পে বেনিফিসিয়ারিদের প্রায় ১ লক্ষ টাকার মতো সাবসিডি দেওয়া হয়। ব্যাঙ্ক লোনের অবশিষ্ট অর্থও খুব কম সুদে প্রদান করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মাস কয়েক আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আমবাসায় এসে রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসন কেন্দ্র পরিদর্শন করে তাদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপরই বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত করে তোলা হয় তাদের। এদিন প্রশিক্ষিত সেই ব্রু প্রার্থীদের মধ্যেই টুলকিট বিতরণ করা হলো। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদের আত্মবিশ্বাস যেমন বৃদ্ধি পাবে তেমনি তাদের আয়ের উৎসও সমৃদ্ধ হলো। কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে গেলে তাই আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধির উপর গুরুত্ব দিতে হবে।মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মিজোরাম থেকে উদ্বাস্তু হয়ে আসা রিয়াং শরণার্থীরা দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে নানা দুর্বিষহ অবস্থার মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ বাম শাসনে তাদের জন্য কাজের কাজ কিছুই করা হয়নি। অবশেষে ২০১৮ সালে ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির নিরিখে তাদের সমস্যার সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সরকার চায় তাদের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ব্রু রিয়াংদের জন্য যখন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় তখন ধারাবাহিক আলোচনার ভিত্তিতে তাদের মধ্য থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৪৪৫ জনকে প্লেসমেন্ট দেওয়া হয়েছে। মোট ৮৯৫ জনকে টুলকিট এবং ২০০ জনকে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করা হয়। এজন্য ১.৪৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ত্রিপুরা এমন একটি রাজ্য যেখানে আমরা দক্ষ কর্মীকে চিহ্নিত করছি এবং তাদের জাপানে পাঠানোরও উদ্যোগ নিয়েছি। অথচ বিরোধীরা সবসময় বর্তমান সরকার চাকরি দিচ্ছে না বলে কার্যত বিরোধিতার জন্যই বিরোধীতা করে আসছে বরাবরের মতো।মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে মোট বাজেটের মধ্যে জনজাতি এলাকায় উন্নয়নের জন্য ৬,৬৪৫ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে, যা প্রায় ৩৯.০৬ শতাংশ। ২০২৫-২৬ সালে শিক্ষা, খেলাধুলা, চিকিৎসা ইত্যাদি ক্ষেত্রেও জনজাতি এলাকার উন্নয়নের জন্য বাজেটের ৪০ শতাংশের অধিক বরাদ্দ রাখা হয়েছে। জনজাতি এলাকার জন্য এক্সটার্নালি এইডেড তহবিলও গঠন করা হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী সান্তনা চাকমা, বিধায়ক শম্ভুলাল চাকমা, ধলাই জেলার সভাধিপতি সুস্মিতা দাস, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, ধলাই জেলার জেলাশাসক বিবেক এইচ বি, দক্ষতা উন্নয়ন দপ্তরের অধিকর্তা প্রদীপ কে সহ অন্য জনপ্রতিনিধি, পদস্থ আধিকারিকরা।