September 18, 2025

ওষুধেই নতুন দাঁত গজাবে, গবেষণা চালাচ্ছেন জাপানের বিজ্ঞানীরা।

 ওষুধেই নতুন দাঁত গজাবে, গবেষণা চালাচ্ছেন জাপানের বিজ্ঞানীরা।

শৈশবে নয়। বয়সকালেই নতুন দাঁত গজাবে। তার জন্য মুখের ভিতরে কোনও অস্ত্রোপচারেরও দরকার পড়বে না। শুধু কিছু ওষুধ খেয়েই ফোকলা দাঁতের বদমান ঘোচাতে পারবে মানুষ। শুনতে আষাঢ়ে গল্প মনে হলেও, বিজ্ঞানের এই অলৌকিক গবেষণা ঠিক মতো এগিয়ে চললে সেদিনের সত্যিই আর বেশি দেরি নেই, যেদিন শুধু ওষুধ খেয়ে বা ইঞ্জেকশন নিয়েই নতুন দাঁত গজাবে মানুষের। জাপানের `জাতীয় দৈনিক সংবাদ ‘মাইনিচি’তে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঠিক আর এক বছর বাদে, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে দাঁত গজানোর ওষুধের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হবে। শৈশবে প্রাকৃতিক নিয়মে দাঁত পড়ে, আবার দাঁত গজায়। কিন্তু শৈশব পেরিয়ে গেলে হয় দাঁতে ‘পোকা’ লাগার কারণে দাঁত তুলে ফেলতে হয়, নতুবা বুড়ো বয়সে প্রকৃতির নিয়মেই দাঁত পড়তে শুরু করে। মাড়ির ফাঁকা অংশে অবিকল আসল দাঁতের মতো দেখতে, নকল দাঁত গ্রাফটিং করে বসিয়ে দেন চিকিৎসকরা।তবে তা বেশ খরচ সাপেক্ষ। এই জায়গা থেকেই জাপানে শুরু হয় যুগান্তকারী গবেষণা। গবেষণার নেতৃত্বে রয়েছেন জাপানের মেডিক্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট কিটানো হাসপাতালের ডেন্টিস্ট্রি ও ওরাল সার্জারি বিভাগের প্রধান গবেষক ডাঃ কাতসু তাকাহাশি। তিনি বলেছেন, ‘যে কোনও বয়সে নতুন দাঁত গজানোর এই ভাবনা যে কোনও দাঁতের চিকিৎসকের কাছে স্বপ্নের মতো। ডাক্তারি পড়া শেষ হওয়ার আগে থেকেই আমি এই বিষয় নিয়ে কাজ করছিলাম। আমার নিজের কাজের প্রতি আমার বিশ্বাস ছিল। এই আবিষ্কার যদি সত্যিই মানুষের কাজে লাগে, তবেই আমার গবেষণা করা সার্থক হবে।’গবেষণার অগ্রগতি সম্পর্কে তিনি জানান, আগামী বছর এই সময় থেকে ওষুধের হিউম্যান ট্রায়াল শুরু হরে। তা সফল হলে ২০৩০ সালের মধ্যে এই ওষুধ সর্বজনীন হয়ে উঠবে। তাকাহাশি ২০০৫ সাল থেকে কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ে এই গবেষণায় কাজ করছেন। তিনি দেখেছেন যে ইঁদুরের মধ্যে একটি বিশেষ জিন আছে, যা তাদের দাঁতের বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে। ২০২১ সালে ‘সায়েন্স অ্যাডভান্সেস’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রে তাকাহাশি বলেছেন, ইঁদুরের উপর বিশেষ ওই ওষুধ প্রয়োগ করার পর, তিনি প্রথম আবিষ্কার করেন নতুন দাঁত গজানোর এই অভিনব উপায়। এই ওষুধটি আসলে ‘ইউএসএজি-১’ নামক একটি জিনের অ্যান্টিবডি হিসেবে কাজ করবে। গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, নির্দিষ্ট এই জিনটির কার্যকারিতা ‘নিউট্রালাইজিং অ্যান্টিবডি’ দিয়ে কিছুটা শ্লথ করে দিতে পারলেই নতুন করে দাঁত গজানো সম্ভব। এই ওষুধের প্রয়োগ যদি সফল হয়, তবে বিরল জিনঘটিত রোগ ‘অ্যানোডন্টিয়া’য় আক্রান্তদের বিশেষ উপকারে লাগতে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন তাকাহাশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *