দেশি-বিদেশিদের উপচে পড়া ভিড়,আন্তর্জাতিক পর্যটন মানচিত্রে জম্পুই!!
এসআইআর সব রাজ্যেই হবে,ত্রিপুরাতেও প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, জানালেন রতন!!
অনলাইন প্রতিনিধি :-স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন (এসআইআর) অর্থাৎ ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধনী প্রক্রিয়া নিয়ে এখন সরগরম জাতীয় রাজনীতি। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে এসআইআর নিয়ে শাসকদল তৃণমূলের সাথে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের সংঘাত এক প্রকার চরমে পৌঁছেছে। এসআইআর-এর বিরোধিতা করে বঙ্গের শাসকদল জাতীয় নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংঘটিত করে চলেছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের ১২টি রাজ্যে ভোটর তালিকায় স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশনের (এসআইআর) প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এসআইআর নিয়ে সব থেকে বেশি হৈচৈ হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার যেভাবে আদাজল খেয়ে এসআইআরের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে, তা এককথায় নজিরবিহীন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মনেপ্রাণে চাইছেন এসআইআর আটকাতে। কিন্তু এসআইআর একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়া। সেটা জানা সত্ত্বেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার সরকার কেন এসআইআরের বিরোধিতা করে রাস্তায় নেমেছে? তা বুঝতে কারোরই বাকি নেই। এসআইআর নিয়ে যখন জাতীয় রাজনীতির পারদ তুঙ্গে, তখন জাতীয় নির্বাচন কমিশনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না থাকা সত্ত্বেও, দেশের উত্তরপূর্বের ছোট রাজ্য ত্রিপুরাতেও এসআই আরের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে বলে জানালেন রাজ্যের নির্বাচন দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী রতনলাল নাথ। তার বক্তব্য, ত্রিপুরাতে আগামী বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২০২৮ সালে। তার আগেই প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। এই প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের (২০২৫) জুলাই মাসে জাতীয় নির্বাচন কমিশন দেশের সব রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকদের (সিইও) নির্দেশ দিয়েছেন। নির্দেশে বলা হয়েছে, যেসব বুথে ১২০০-এর বেশি ভোটার আছে, সে বুথগুলোকে বিভক্ত করার। ইআরও, এ ই আর ও, বিএলও, সুপারভাইজার এই পদগুলি যদি শূন্য থাকে, তাহলে পূরণ করে নিতে। বুথ বিভক্ত করার পর যদি দেখা যায় অতিরিক্ত বিএলও দরকার, তাও ঠিক করে নিতে। সকলের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে নিতে এবং যাদের আইটি সম্পর্কে অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাদেরকে নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় বেশি করে অন্তর্ভুক্ত করতে। মন্ত্রী জানান, জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মোতাবেক রাজ্য নির্বাচন দপ্তর অনেক কাজ ইতিমধ্যে শেষ করে নিয়েছে যেমন, ৬০ জন ইআরও নিয়োগ এবং তাদের প্রশিক্ষণ শেষ করে নেওয়া হয়েছে। ১৮০ জন এইআরও নিয়োগ এবং তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ৩৩৫২ জন বিএলও-কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আরও ৩১৪ জন বিএলও নিয়োগ করতে হবে এবং তাদেরও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এই উদ্যোগও চলছে। ৮০০ জন সুপারভাইজার নিয়োগ এবং তাদেরও প্রশিক্ষণ শেষ করে নেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী শ্রী নাথ আরও বলেন, এসআইআর দেশে নতুন কিছু নয়। এখন পর্যন্ত সারাদেশে ১৩ বার ভোটার তালিকায় স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন করা হয়েছে। তিনি জানান, এই রিভিশনগুলি হয়েছে ১৯৫২-৫৬, ১৯৫৭, ১৯৬১, ১৯৬৫, ১৯৬৬, ১৯৮৩-৮৪, ১৯৮৭-৮৯, ১৯৯২, ১৯৯৩, ১৯৯৫, ২০০২, ২০০৩ এবং ২০০৫ সালে। পশ্চিমবঙ্গে সর্বশেষ রিভিশন হয়েছে ২০০২ সালে এবং ত্রিপুরা রাজ্যে সর্বশেষ রিভিশন হয়েছে ২০০৫ সালে। মন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে যারা রাজনীতিতে আছেন, তাদের কাছে ভোটার তালিকার স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন নতুন কিছু নয়। বঙ্গেল তৃণমূল নেত্রী তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও দীর্ঘ সময় ধরে রাজনীতিতে আছেন, তিনি এই রিভিশন সম্পর্কে ভালোভাবে জানেন। তার কাছেও এটা নতুন কিছু নয়। তারপরও তিনি এবং তার সরকার কেন এসআইআরের বিরোধিতা করছেন, তা করোর অজানা নয়। তিনি সবকিছু জেনে বুঝে, সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্যই এসব করছেন। মন্ত্রী বলেন, ২০০৫ সালে ত্রিপুরায় যখন সর্বশেষ রিভিশন হয়েছিল, তখন ত্রিপুরার ভোটার সংখ্যা ছিল ২১,৩০,২৯৯ জন। ২০২৫ সালের ভোটার তালিকা অনুযায়ী বর্তমানে ত্রিপুরার ভোটার সংখ্যা ২৮,৯৭,১১৩ জন। মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ নির্বাচন করার। এর জন্য নির্বাচন কমিশন সময় সময় ভোটার তালিকায় স্পেশাল ইনটেনসিভরিভিশন করে। দেশের একজনও বৈধ নাগরিক যেন ভোটার তালিকা থেকে বাদ না যায় এবং একজনও অবৈধ লোক যেন ভোটার তালিকায় স্থান না পায়, তার জন্যই এই এসআইআর। মোদ্দা কথা ভোটার তালিকাকে স্বচ্ছ ও ত্রুটিমুক্ত করতেই এই প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়াকে সকলের স্বাগত এবং সমর্থন জানানো উচিত বলে | দাবি করেন মন্ত্রী রতন লাল নাথ।