August 1, 2025

ইস্তফা জল্পনা!!

 ইস্তফা জল্পনা!!

আচমকা উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে জগদীপ ধনখড় নানা জল্পনা উস্কে দিয়েছেন।সোমবার সংসদের বাদল অধিবেশনের দিনে সন্ধ্যার পর আচমকাই উপরাষ্ট্রপতি পদে ইস্তফা দেন জগদীপ ধনখড়।যে ধনখড় সবসময় বিতর্কে থাকতে পছন্দ করেন তাকে এভাবে বিদায় নিতে দেখে অবাক রাজনৈতিক মহল।স্বাস্থ্যের অজুহাত দেখিয়ে ইস্তফার নাটক মঞ্চস্থ হলেও আদতে এর পেছনে রহস্য রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল থাকাকালে বিতর্ক তার নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে তার সংঘাত প্রতিদিন সংবাদ শিরোনামে থাকত। পদত্যাগী উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের একটা অভ্যাস হল আগ বাড়িয়ে মন্তব্য করা। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল থাকাকালে প্রতিটি ইস্যুতে রাজনৈতিক নেতার মতো তিনি মন্তব্য করতেন। সংবাদমাধ্যমের সাথে আগ বাড়িয়ে কথা বলতেন। তার নানা মন্তব্যের জন্য শাসক দলের সথে তার সংঘাত প্রায়শই লেগে থাকতো। এহেন জগদীপ ধনখড়ের উপরাষ্ট্রপতি পদে মনোনয়নও ছিল চমকভরা। ২০২২ সালে দার্জিলিংয়ে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক বৈঠক হয়। এরপরই পশ্চিমবঙ্গের তদানীন্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের নাম উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য উঠে আসে। কেন্দ্রের তখনকার মতো উদ্দেশ্য হয়ত তো ছিল মমতার সাথে প্রতিনিয়ত যে সংঘাত তা কমানো। কিন্তু এবার আরও ২ বছর মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও কেন তিনি স্বেচ্ছায় সরে গেলেন। এমনটা সচরাচর হয় না যে উপরাষ্ট্রপতি ইস্তফা দেন। তাহলে ধনখড় ইস্তফা দিলেন কেন? সোমবার গোটা দিন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হিসাবে বেজায় সক্রিয় ছিলেন ধনখড়। আচমকা রাতে স্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিলেন। তাহলে কি কেন্দ্রের সাথে কোন ইস্যুতে তার মনোমালিন্য হল? তাও আবার সংসদ শুরুর দিনেই! তা নিয়ে ব্যাপক জল্পনা শুরু হলেও এর কোন উৎস কেউ খুঁজে বের করতে পারেনি। রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের (সদ্য প্রাক্তনী সাথে অধিবেশন চলাকালে গত তিনবছরে বিরোধীদের সাথে তার সংঘাত লেগেই ছিল। বিশেষ করে বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গের সাথে সরাসরি তিনি তর্ক জুড়ে দিতেন। গত বছর জয়া বচ্চনের সাথে তার সংঘাত বেজায় চর্চার ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছিলো।এরপর বিরোধীরা তার বিরুদ্ধে আ নাস্থা প্রস্তাব আনার জন্য তোড়জোড় শুরু করে।যদিও সংসদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তা আর হয়ে উঠেনি।
সম্প্রতি আরএসএসের এক মন্তব্যের সাথে নিজেকে সম্পৃক্ত করে ফের বিতর্কের কেন্দ্রে চলে আসেন জগদীপ ধনখড়। যদিও বাদল অধিবেশন শুরুর দিনেই তার এই নাটকীয় ইস্তফা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বিরোধীদের বক্তব্য- যদি স্বাস্থ্যের কারণে তার এই ইস্তফা ত বলে সংসদ শুরুর আগেই ইস্তফা তিনি দিতে পারতেন। এবং এটা ঠিক যে ইদানীং তার শরীর স্বাস্থ্য ভালো যাচ্ছে না। কিছুদিন আগে উত্তরাখণ্ডের কুলায়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তারপর থেকে তাকে অবশ্য প্রকাশ্য কোন সভায় দেখা যায়নি। ২/৩ দিন আগে তার সাথে আপ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বৈঠকের একটি ছবি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল যে হঠাৎ করে উপরাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করতে গেলেন তা বোধগম্য হয়নি কারো। এরই মধ্যে আচমকা তার ইস্তফা ঘোষনায় নানা প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে। তবে প্রকাশ্যে এই প্রশ্নগুলির উত্তর কারো কাছে নেই। এর উত্তর দিতে পারবেন একমাত্র ধনখড় নিজে এবং বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব। ধনখড়কে নিয়ে বিজেপির অন্য কোন প্ল্যান রয়েছে কিনা তা সময়ই বলবে। তবে আপাতত ধনখড়ের ইস্তফা নিয়ে দিল্লীর রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। আপাতত ধনখড়ের শূন্যস্থানে কে আসেন তা নিয়ে সবার নজর যেমন থাকবে তেমনি ধনখড়কে নিয়ে বিজেপির কোন প্ল্যান থাকলে তাও জানা যাবে শীঘ্রই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *