আলু উৎপাদনে রেকর্ড ত্রিপুরার, পেরুর গবেষণা কেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তি হবে চিপস প্রক্রিয়াকরণ: কৃষিমন্ত্রী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :- আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ত্রিপুরা আলু ও আলুবীজ উৎপাদনে স্বনির্ভর হবে। ত্রিপুরাকে আলু ও আলুবীজ উৎপাদনে স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে পেরুর ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টার-এর সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। শুক্রবার মহাকরণে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই কথা বলেন রাজ্যের কৃষি ও কৃষক কল্যাণমন্ত্রী রতন লাল নাথ। তিনি এদিন ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টারের ডিরেক্টর জেনারেল সাইমন হেক এবং ভারতে নিযুক্ত সংস্থার ম্যানেজার নিরোজ শর্মার সঙ্গে মহাকরণে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে কৃষিমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সাংবাদিকদের সম্মেলনে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে ত্রিপুরায় ২৩ হাজার ৭৪৬ জন আলুচাষি রয়েছেন এবং ৪৭ হাজার ৬৩৭ কানি জমিতে, অর্থাৎ প্রায় ৭,৬২২ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হচ্ছে।

আগে হেক্টরপ্রতি আলু উৎপাদন ছিল ১৯.১৬ মেট্রিক টন। বর্তমানে রাজ্যে প্রতি হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদন হচ্ছে ৬২.৫ মেট্রিক টন। এই উৎপাদন গোটা দেশে রেকর্ড। যা দেখে বিশেষজ্ঞরাও খুশি। মন্ত্রী বলেন, আগে রাজ্যে আলুর বীজ আসত সংরক্ষিত আলু থেকে কিংবা পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব ও আগরতলার গোলবাজার থেকে। কিন্তু এর গুণগত মানের কোনো নিশ্চয়তা ছিল না, উৎস ছিল অনির্দিষ্ট এবং উৎপাদনও হতো খুবই কম।পরে রাজ্যে ট্রু পটেটো সিডস (টিপিএস) চালু করা হয়। তবে এটি ব্যয়বহুল এবং দক্ষ শ্রমিক প্রয়োজন। নাগিছড়া গবেষণা কেন্দ্র ছাড়া এর উৎপাদন সম্ভব ছিল না এবং উৎপাদনও তেমন বড়সড় ছিল না। বর্তমানে রাজ্যে আলু উৎপাদন হচ্ছে ১.৪৬ লক্ষ মেট্রিক টন, যেখানে চাহিদা ১.৫৫ লক্ষ মেট্রিক টন। ফলে ঘাটতি পূরণের জন্য বাইরের রাজ্য থেকে আলু আমদানি করতে হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার আসার পর ২০২২-২৩ অর্থবছর থেকে নতুন পদ্ধতি এপিক্যাল রুটেড কাটিং (ERC) চালু করি। কেন্দ্রের রাষ্ট্রীয় কৃষি বিমা যোজনায় (RKBY) থেকে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ নিয়ে আমরা পেরুর ইন্টারন্যাশনাল পটেটো সেন্টারের সঙ্গে প্রযুক্তি সহায়তা, দক্ষতা বৃদ্ধি, গবেষণা, সার্টিফিকেশন, বাইরে রপ্তানি এবং আলুচিপস প্রসেসিং সেন্টার স্থাপনের জন্য চুক্তি করি। ২০২৩ সাল থেকে প্রকল্প চালু হয়। প্রথম বছরে ১০৪ জন চাষিকে বীজ ও চারাগাছ দেওয়া হয়েছিল। ২০২৪ সালে ৪০২ জন চাষিকে দেওয়া হয়েছে। আর এখন ৪,০০০ জন চাষি এর সুবিধা পাবেন।
মন্ত্রী জানান, সাইমন হেক স্বীকার করেছেন, তিনি ভারতের কোথাও এভাবে আলু উৎপাদন দেখেননি। আগে যেখানে হেক্টরপ্রতি উৎপাদন ছিল ১৯.১৬ মেট্রিক টন, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৬২.৫০ মেট্রিক টন, যা গোটা দেশে রেকর্ড। রতন লাল নাথ আরও বলেন, ২০২৮-২৯ অর্থ বছরের মধ্যে ত্রিপুরা আলুর বীজে স্বনির্ভর হবে এবং ২০২৯-৩০ সালের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে আলু উৎপাদনে স্বনির্ভর হবে। এরপর আমরা রাজ্যের বাইরে রপ্তানির দিকেও এগোতে পারব।সেটাই আমাদের পরিকল্পনা।
