August 2, 2025

আরআইসি জল্পনা!!

 আরআইসি জল্পনা!!

জল্পনাটা চলছে গত বেশ কয়েক মাস ধরেই।এক হতে পারে তিন মাথা। এই তিন মাথা মানে মোদি পুতিন এবং জিনপিং। আর এটা যদি হয়ে যায়, তাহলে আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে, চমকে যাবে গোটা বিশ্ব। বদলে যাবে বিশ্ব রাজনীতির অভিমুখ। পাল্টে যাবে ভূ-রাজনীতির গতিপথ। খবরে প্রকাশ, রাশিয়া- চিন-ভারত একজোট হতে পারে। খবরে আরও প্রকাশ, পুরনো সম্পর্ককেই আবার নতুন করে গড়তে চাইছে চিন। আর এতে সমর্থন জানাচ্ছে রাশিয়াও। তবে এই বিষয়ে ভারত সরকার এখনও কোন ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। যতটুকু খবর, নয়াদিল্লী এই বিষয়ে আরও গভীরভাবে ভাবনাচিন্তা করতে চায়। লাভ-ক্ষতি সবদিক বিবেচনা করেই ভারত এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে বলে খবর।
খবরে প্রকাশ, পশ্চিমি দুনিয়ার দেশগুলির একাধিপত্য রুখতে চায় চিন। পাশে রয়েছে রাশিয়াও। আর এখানেই ভারতকেও পাশে চাইছে তারা। আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত যেভাবে বৈশ্বিক শক্তি হয়ে উঠেছে, তাতে বিশ্ব রাজনীতিতে ভারতের গুরুত্ব বেড়েছে। আর এজন্যই চিন-রাশিয়া বাড়িয়ে দিচ্ছে ভারতের প্রতি নিবিড় বন্ধুত্বের হাত। রাশিয়া, ভারত ও চিন মিলে ইউরেশিয়ান ত্রিশক্তি গড়তে চাইছে, যা পশ্চিমি কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করবে। মাসখানেক আগেই রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সার্গেই লাভরড বলেছিলেন, এই ত্রিশক্তির কাজ আবার শুরু হওয়া উচিত।
প্রসঙ্গত, আগে তিন দেশ একসঙ্গে কাজ করেছে। রাশিয়া-ইন্ডিয়া-চিন অর্থাৎ আরআইসি-এর অধীনে কুড়িটিরও বেশি বৈঠকও হয়েছিল। তবে ২০২০ সালে করোনা মহামারি ও এরপর পূর্ব লাদাখের গালওয়ানে ভারত-চিন সেনাবাহিনীর সংঘর্ষের পর আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়। উল্লেখ্য, ভারত একদিকে যেমন ব্রিকসের সদস্য, তেমনি আবার আমেরিকা, জাপানের সঙ্গে কোয়াডের সদস্যও। চিন মনে করে, তাদের উত্থানকে রুখতেই কোয়াড তৈরি হয়েছে। তাই রাশিয়াকে নিজের দলে টেনে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক মজবুত করতে চাইছে বেজিং। এমনটাই অভিমত আন্তর্জাতিক মহলের। সম্প্রতি, তিন দেশের জোটের বিষয়টি নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। ন্যাটোকে টক্কর দিতে আরআইসির জন্য এককথায় অস্থির হয়ে উঠেছে রাশিয়া ও চিন। তারা যেভাবেই হোক ভারতকে পাশে চাইছে। খবরে প্রকাশ, তিন দেশের জোট পুনরায় শুরু করার জন্য বৈঠকের আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে রাশিয়া। এখন চিনও তাতে সমর্থন দিয়েছে। চিন বলেছে, আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য এটি জরুরি। তবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, এটি তিন দেশের সুবিধার উপর নির্ভর করবে।
এখন সব থেকে বড় প্রশ্ন হচ্ছে, আরআইসি পুনর্গঠনে রাশিয়া এবং চিন এতটা উতলা হয়ে উঠেছে কেন? কেন তারা এই জোটে ভারতকে বেশি করে কাছে পেতে চাইছে? এর পিছনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। রাশিয়ার জন্য ভারতকে জরুরি এই কারণে যে, ভারত তাদের কাছ থেকে অস্ত্র থেকে শুরু করে তেল পর্যন্ত সবকিছু ক্রয় করে। পশ্চিমা দেশগুলোর চাপ সত্ত্বেও ভারতের মতো ক্রেতা তাদের কাছে থাকুক, এটাই রাশিয়া চায়। শুধু তাই নয়, ভারত রাশিয়ার দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত বন্ধুও বটে। অন্যদিকে, চিনের সমস্যা হলো আমেরিকার সাথে তাদের শুল্ক যুদ্ধ চলছে। বিশেষ করে ট্রাম্প দ্বিতীয়বার আমেরিকার রাষ্ট্রপতি পদে বসার পর চিনের সাথে বানিজ্য বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। এই পরিস্থিতিতে চিন চায় ভারতের মতো বিশাল বাজার তাদের জন্য খোলা থাকুক। এছাড়াও আমেরিকার সাথে শুল্কযুদ্ধ মোকাবিলা করার জন্য ভারত, চিন এবং রাশিয়ার ঐক্যবদ্ধতা কার্যকর থাকবে বলে দাবি করেছে বেজিং। সব থেকে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, গত কয়েক মাস ধরেই চিন বারবার বলছে যে, তারা ভারতের সাথে ভালো সম্পর্ক চায়। শুধু তাই নয়, চিনের উদ্যোগেই লাদাখে সীমান্ত উত্তেজনা কমেছে এবং উভয় দেশের সেনাসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে বলে দাবি করে আসছে বেজিং। যতটুকু খবর, মস্কো ‘আরআইসি’ পুনর্গঠনের জন্য ব্যাপক তৎপরতা শুরু করেছে। ভারতের সাথেও এই বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এই উদ্যোগে ভারতের সংযত জবাবের পরই ফের আরআইসি পুনর্গঠন নিয়ে বিশ্বজুড়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। এখন দেখার এই উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত কতটা কার্যকরী হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *