August 22, 2025

অরুণাচল, নাগাল্যান্ডে বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে শুরু ট্রেন, ব্রাত্য ত্রিপুরা!!

 অরুণাচল, নাগাল্যান্ডে বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে শুরু ট্রেন, ব্রাত্য ত্রিপুরা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের বিভিন্ন এলাকায় রেলপথে বৈদ্যুতিকরণের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়ে গেছে। ফলে অরুণাচল প্রদেশ ও নাগাল্যান্ড বৈদ্যুতিক ইঞ্জিন চালিত ট্রেনের আওতায় চলে এসেছে। সীমান্ত রেলের রঙিয়া বিভাগে রেলপথে বৈদ্যুতিকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গেছে। তিনসুকিয়া বিভাগের সিংহভাগে শেষ হয়ে গেছে এই কাজ। ইতিমধ্যে এর সুফল মিলতে শুরু করেছে।
এমতাবস্থায় মর্যাদাকর রাজধানী এক্সপ্রেস রঙিয়া-রাঙাপাড়া হয়ে ডিব্ৰুগড় পর্যন্ত বৈদ্যুতিক রেলপথ ও বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে চলাচল শুরু করেছে।
সোজা কথায় ডিব্ৰুগড় রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেন নয়াদিল্লী থেকে ডিব্ৰুগড় পর্যন্ত পুরো বৈদ্যুতিক রেলপথ ও বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে চলাচল করছে। চলতি ২০২৫ সালের জুন মাস থেকে শুরু হয়েছে এই ব্যবস্থা।মাঝখানে তিনসুকিয়া সহ বিভিন্ন রেলপথ চলে এসেছে বৈদ্যুতিকরণের আওতায়।শুধু রাজধানী এক্সপ্রেস নয়,রেলপথে বৈদ্যুতিকরণ হওয়ার সুফল হিসাবে সীমান্ত রেল এলাকায় নতুন করে মোট আঠাশটি দূরপাল্লার এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনে।এই বারোটি ডিজেল চালিত ইঞ্জিন তথ্য রেলের পরিভাষায় লোকোমোটিভ মুক্তি পেয়েছে।আপাতত নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে এই ইঞ্জিনগুলি। উল্লেখিত কারণে সীমান্ত রেল এলাকায় ট্রেন চলাচলে পরিবেশ দূষণের পরিমাণ কমেছে।সাশ্রয় হয়েছে জ্বালানির। একই সঙ্গে ডিজেল চালিত ইঞ্জিন নির্গত কার্বণ সহ নানা ধরনের ক্ষতিকর গ্যাসের পরিমাণ কমেছে।সীমান্ত রেল তুলনামূলকভাবে সবুজ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলছে উল্লেখিত কারণে।
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের তরফে মুখ্য
জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা এই সংবাদ জানান। তিনি এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন,সীমান্ত রেল এলাকায় নতুন করে মোট এক হাজার তেতাল্লিশ কিলোমিটার রেলপথে বৈদ্যুতিকরণ হয়েছে। এই ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে রঙিয়া বিভাগ। এই বিভাগের একশো শতাংশ রেলপথ চলে এসেছে বৈদ্যুতিকরণের আওতায়। তিনসুকিয়া বিভাগেরও প্রায় পুরোটা এর আওতায় এসে গেছে। বৈদ্যুতিকরণ হয়েছে বিভাগের ডিব্রুগড় পর্যন্ত। তার উপর লামডিঙ বিভাগের ডবল লাইন এলাকার চাপারমুখ-হোজাই রেলপথে বৈদ্যুতিকরণ হয়ে গেছে প্রায় ছেচল্লিশ কিলোমিটার রেলপথে। এর ফলে যাত্রীদের আরও বেশি স্বাচ্ছন্দ্যময়, দ্রুত ও পরিচ্ছন্ন পরিষেবা মিলছে বলে উল্লেখ করেন শ্রীশর্মা। তবে তিনি লামডিঙ বিভাগের পাহাড়ি রেলপথ সহ ত্রিপুরা এবং আসামের বরাক উপত্যকার কথা এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করেননি। লামডিঙ বিভাগের এই অংশে কবে বৈদ্যুতিকরণের কাজ শেষ হবে তা জানাননি সীমান্ত রেলের তরফে মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা। ভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত খবর অনুসারে এই এলাকায় বৈদ্যুতিকরণের কাজ শেষ হওয়ার বিষয়টি আপাতত অনিশ্চিত হয়ে আছে। এর দিনক্ষণ বলতে পারছেন না অথবা চাইছেন না সীমান্ত রেলের তরফে প্রায় কেউই।
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের আওতায় মোট পাঁচটি বিভাগ তথা ডিভিশন রয়েছে। আলিপুরদোয়ার, কাটিহার, লামডিঙ, রঙিয়া এবং তিনসুকিয়া। এর মধ্যে কাটিহার বিভাগ মূলত বিহার রাজ্যের কাটিহার জেলা সহ পশ্চিমবঙ্গের একাংশ নিয়ে গঠিত। আলিপুরদোয়ার বিভাগ পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার, আলিপুরদোয়ার সহ আরও কিছু অংশ নিয়ে গঠিত। এই দুইটি বিভাগে রেলপথ বৈদ্যুতিকরণের আওতায় চলে এসেছে বহু আগে। রঙিয়া বিভাগের আওতায় রয়েছে আসামের বিশ্বনাথ সহ আরও কিছু জেলা এবং অরুণাচল প্রদেশের একাংশ। এই বিভাগের আওতাধীন রেলপথের বড়ো অংশেও দীর্ঘদিন আগে থেকেই বৈদ্যুতিকরণ হয়ে গেছে। তুলনায় ছোট এই বিভাগটি। লামডিঙ সীমান্ত রেলের সবচেয়ে বড়ো বিভাগ। এই বিভাগে রয়েছে আসামের কামরূপ, হোজাই, ডিমাহাসাও, কাছাড় এবং করিমগঞ্জ জেলা সহ পুরো ত্রিপুরা ও মিজোরাম রাজ্য সহ মণিপুর রাজ্যের একাংশ। তিনসুকিয়া বিভাগের আওতায় রয়েছে আসামের তিনসুকিয়া জেলা সহ নাগাল্যান্ডের ডিমাপুর জেলা এবং অন্য কিছু এলাকা। সীমান্ত রেলের মধ্যে লামডিঙ বিভাগে সবচেয়ে নতুন রেলপথ গড়া হয়েছে ত্রিপুরা, মিজোরামে। ব্রডগেজেও নতুন রেলপথ গড়া হয়েছে এই বিভাগের আওতাধীন আসামের বরাক উপত্যকা এবং ত্রিপুরা ও মিজোরামে। এই বিভাগে আসামের ডিমাহাসাও জেলায় রয়েছে বরাইল পাহাড় ঘেরা পাহাড়ি রেলপথ। আর এই রেলপথই যেন যাবতীয় বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *