August 2, 2025

অমর একুশে!!

 অমর একুশে!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-আজ অমর একুশে।আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।গোটা বিশ্বজুড়ে আজ এই মহান দিবসটি নানা কর্মসূচির মাধ্যে উদ্যাপিত হবে।১৯৫২ সালে ২১ ফেব্রুয়ারী ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই এই দাবিতে কোটি কোটি বাঙালি যখন রাজপথে নেমে এসেছিল।তখন পাকিস্তানি ঘাতক বাহিনী তার জবাব দিয়েছিল বুলেটের মাধ্যমে।সেদিন বাংলার দামাল ছেলেরা মাতৃভাষা ‘বাংলার’ জন্য বুকের তাজা রক্তে রাজপথ করেছিল রঞ্জিত।সেই রক্তের ছোঁয়া পেয়ে সেদিন গোটা বাঙালি জাতি জেগে উঠেছিল তার শেকড়ের টানে।ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাঙালি সেদিন এক হয়ে একটাই প্রতিজ্ঞা করেছিল,মায়ের ভাষার সম্মান যে কোনও মূল্যে রক্ষা করবই।নিজের সংস্কৃতিকে যেভাবেই হোক ধারন করবই। বহু রক্তের বিনিময়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল মায়ের ভাষা ‘বাংলা’।বহু জীবন বিসর্জনের মধ্যদিয়ে বাঙালি রক্ষা করেছিল তার ভাষা, স্বকীয়তা এবং গৌরবোজ্জল সংস্কৃতিকে।তাই ২১ ফেব্রুয়ারী বাঙালি জাতির নবতর উত্থানের দিন।২১ ফেব্রুয়ারী বাঙালি জাতির সংস্কৃতির হৃৎপিণ্ড।বাংলা আমাদের ‘মা’।মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য বুকের রক্ত দেওয়ার যে ইতিহাস বাঙালিরা সৃষ্টি করেছেন, পৃথিবীতে আর এমন দৃষ্টান্ত দ্বিতীয়টি নেই।একুশে ফেব্রুয়ারী ধর্ম-বর্ণ সম্প্রদায় নির্বিশেষে বাঙালিদের ঐক্য ও চেতনায় অগ্নিস্মারক।এই এক অবিনাশী,অবিনশ্বর চৈতন্যের জ্যোর্তিময় শিখা। এই শতাব্দীতে বাঙালি জাতির ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল রক্তাক্ত একুশের বিশ্ব স্বীকৃতি। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের অন্যতম প্রধানসংস্থা ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারীকে।আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসাবে ঘোষণা দিয়ে বাঙালি জাতিকে বিশ্বে সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত করে দিয়েছে।এই মহান কাজটি একদিনে হয়নি,এর জন্য অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার পথ অতিক্রম করতে হয়েছে। আজ আমাদের বুক গর্বে ভরে যায়।পৃথিবীর সব দেশের জনগণ আজ প্রতিবছর এই দিনটিকে মাতৃভাষা দিবস হিসাবে উদ্যাপন করে।
স্বাভাবিকভাবেই ‘একুশ’ আজ প্রতিটি বাঙালির অহংকারের প্রতীক।’একুশ’ প্রতিটি বাঙালির গর্ব,সাহস ও প্রেরণার উৎস।’একুশ’ প্রতিটি বাঙালি চিন্তা চেন্তনা-সংস্কৃতির প্রতীক। বাংলা আজ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পঞ্চম ভাষা।কিন্তু আজ অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে হয়,বাঙালি ক্রমশ ভুলতে চলেছে তার নিজের স্বত্ত্বা। ক্রমশ ভুলতে চলেছে তার ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও পরম্পরা। বাঙালি আজ তার নিজের কৃষ্টি, এবং আবহমান সংস্কৃতি ভুলে ক্রমশ অনুকরণের পথে হাঁটছে।আমার সন্তান ‘বাংলা’ বলতে পারে না বলে,এই প্রজন্মের অনেক অভিভাবক গর্ব অনুভব করেন।আমরা চিন্তা ও চেতনার দিক থেকে হব আন্তর্জাতিক, কিন্তু পরিচয়ে থাকবো বাঙালি।এই ধারায় কি যাপন করছি জীবন?এই নিয়ে ভাবনার সময় কিন্তু এসে গেছে।রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী কি এইভাবে ভুলে গেলে চলবে। এই ভাবে চলতে থাকলে তো একদিন পৃথিবীতে বাঙালি জাতির অস্তিত্বই সঙ্কটে পড়ে যাবে। তাই একুশ হয়ে উঠুক ভালোবাসার অনন্য প্রতীক হয়ে বাঙালির জীবনজুড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *