সাংবাদিকতা শুধুই পেশা নয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও : মুখ্যমন্ত্রী!!
অব্যবস্থায় পানিসাগর কলেজ, ছাত্রছাত্রী মহলে তীব্র ক্ষোভ!!
অনলাইন প্রতিনিধি :- পানিসাগরবাসীর দাবি কয়েক বছর আগে পানিসাগরের রৌয়াতে পানিসাগর ডিগ্রি কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে আশায় বুক বাঁধে মহকুমার ছাত্রছাত্রীরা। কেননা দীর্ঘ একটা সময় পানিসাগর ও ধর্মনগর মহকুমার ছাত্রছাত্রীরা উচ্চমাধ্যমিকের পর ধর্মনগর কলেজেই যেতেন পড়াশোনা করতে। সেক্ষেত্রে দূরত্বের কারণে পানিসাগর মহকুমার ছাত্রছাত্রীদের প্রতিদিন ধর্মনগর কলেজে গিয়ে পড়াশোনা করাটা অনেকটাই সমস্যাজনক হয়ে উঠতো। এই সমস্যার সমাধানে কয়েক বছর আগে পানিসাগরের রৌয়া এলাকায় অবস্থিত রৌয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি পুরাতন বিল্ডিয়ে পানিসাগর মহাবিদ্যালয় চালু করে পঠনপাঠন শুরু হয়। প্রথম অবস্থায় এই মহাবিদ্যালয় ৫০ জন পড়ুয়া দিয়ে কলা বিভাগের পড়াশোনা দিয়ে শুরু হয়। এরপর থেকে পানিসাগর নগরের পঞ্চায়েত সহ দামছড়া, খেদাছড়া, চন্দ্র হালাম পাড়া, তিলথৈ, ভাল্লুক ছড়া, পানিটিলা সহ
বিভিন্ন এলাকার ছাত্রছাত্রীরা এই মহাবিদ্যালয়ে ভর্তি হতে থাকে। ধরে ধীরে বাড়তে থাকে পড়ুয়াদের সংখ্যা। পড়ুয়াদের সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে মহাবিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগত দিক থেকে সমস্যায় পড়তে হয় ছাত্রছাত্রীদের। কেননা ছাত্রছাত্রীদের। কেননা ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও মহাবিদ্যালয়ের
পরিকাঠামোগত কোনো পরিবর্তন কর্তৃপক্ষ করেনি। বর্তমানে কলেজে প্রায়
৩০০-এর কাছাকাছি পড়ুয়া রয়েছে। কিন্তু মহাবিদ্যালয়ের ক্লাসরুমের সংখ্যা খুবই কম। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ,
অধিকাংশ সময়েই তাদের কলেজে এসে ক্লাসরুমের অভাবের কারণে কলেজ বিল্ডিঙের বাইরে দাঁড়িয়ে
থাকতে হয়। কেননা ক্লাস রুমের সংখ্যা কম থাকায় একই ক্লাসের মধ্যে পরপর
কয়েকটা সেমিস্টারের ছাত্রদের সময়ের ব্যবধানে ক্লাস নিতে হয়। এর ফলে
ছাত্রছাত্রীদের বাইরে ঘোরাফেরা করতে হয়। এছাড়াও ক্লাসের অবসর সময়ে কোথাও বসে সময় কাটাবার একটি নির্দিষ্ট জায়গা পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীদের জন্য বরাদ্দ নেই গোটা কলেজ চত্বরে। এর ফলে কলেজে আসা ছাত্রছাত্রীদের ক্লাস রুমের সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে কলেজে আসা বন্ধ করতে হয় অধিকাংশ সময়। শুধু তাই নয়, অধ্যাপক সহ কলেজের অফিসিয়াল কাজের জন্য রুমের ব্যাপক সমস্যা রয়েছে। একই সাথে সমস্যা রয়েছে পানীয় জলের। কলেজে পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা না থাকায় অধিকাংশ সময় ছাত্রছাত্রী ও অধ্যাপকদের পকেটের টাকা দিয়ে পানীয় জল কিনে আনতে হয়। কলেজে নেই কোনো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন শৌচাগার। কলেজের সাথেই থাকা রৌয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শৌচাগারটি কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও ব্যবহার করে, যার অবস্থা অত্যন্ত করুণ। শৌচাগারে ব্যবহৃত জল অত্যন্ত নোংরা ও আবর্জনায় ভরপুর। বাধ্য হয়ে মহাবিদ্যালয়ে আসা ছাত্রছাত্রীরা গোটা বিল্ডিঙের মধ্যে থাকা অধ্যাপকদের জন্য বরাদ্দ একমাত্র টয়লেটটি ব্যবহার করে থাকেন। এমনকী গোটা কলেজ বিল্ডিয়ের আশপাশ অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছে। যার ফলে এই কলেজে আসা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে কলেজের নানা অব্যবস্থা দেখে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বর্তমান কলেজের বিল্ডিংটি অবস্থা অত্যন্ত বেহাল। যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছে, প্রায়শই কলেজ বিল্ডিয়ের বিভিন্ন অংশ ভেঙে পড়ছে। প্রায় চার মাস আগে বর্তমান কলেজের প্রিন্সিপালের সাথে সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বললে তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন সমস্যা সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও কলেজের সমস্যাগুলোর কোনো সমাধান হয়নি। বরং কলেজের ছাত্রছাত্রী জানিয়েছেন কিছুদিন আগে কলেজে থাকা গেস্ট লেকচারারদের চাকরির মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে প্রায় একমাস কলেজের সকল রকম পড়াশোনা বন্ধ ছিল। পুনরায় তাদের মেয়াদ বৃদ্ধি করলে পড়াশোনা কিছুটা স্বাভাবিক হয়। এই কলেজে স্থায়ী কোনো প্রফেসার নেই। পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীরা জানিয়েছেন আগে একটা সময় এই কলেজটি পানিসাগরের জলাবাসা অবস্থিত ডিএলএড কলেজে স্থানান্তরিত করার জন্য উচ্চ পর্যায়ে প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। কেননা প্রায় দু’বছর আগে পানিসাগরের ডিএলএড কলেজ উদ্বোধন করা হলেও তাতে এখনও পড়াশোনা শুরু হয়নি। তাই প্রস্তাব ছিল পানিসাগর কলেজের নিজস্ব জায়গায় নতুন কলেজ বিল্ডিং হওয়া পর্যন্ত ডিএলএড কলেজেই যেন পানিসাগর মহাবিদ্যালয়টি ব্যবহার করা যায়। কেননা সেখানে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো ছিল কলেজের পড়াশোনা চালাবার জন্য। কিন্তু অনুমতি মেলেনি সেখানে যাবার। পড়ুয়ারা জানিয়েে শীঘ্রই সমস্যাগুলো সমাধানে ব্যবস্থ গ্রহণ করা না হয় তবে তাল আন্দোলনের পথে নামবেন।