৫৫ আসন নিয়ে প্রত্যাবর্তন করছে বিজেপিঃ হিমন্ত

এই খবর শেয়ার করুন (Share this news)

তেইশের বিধানসভা নির্বাচন বিজেপির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। শাসক দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও রাজ্যের বিধানসভা ভোটকে অগ্রাধিকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। সোমবার বুথ বিজয় অভিযানের সূচনা করে শাসকদলের হাইকমাণ্ডের এইমনোভাবের কথা ব্যক্ত করলেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। তিনি রবীন্দ্র ভবনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চল পদ্মশিবিরের জন্য শক্তিশালী ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। এই অঞ্চল বিজেপিকে ভালো ফলাফল দিচ্ছে। আসাম, অরুণাচলপ্রদেশ, মণিপুরে দ্বিতীয়বারের মতো বিজেপি সরকার হয়েছে। এবার ত্রিপুরা, নাগাল্যাণ্ড এবং মেঘালয়েও তা হতে চলেছে।

সপ্তাহব্যাপী বুথ বিজয় অভিযানের সূচনা করে নর্থ ইস্ট ডেমোক্রোটিক অ্যালায়েন্সের (নেডা) চেয়ারম্যান শ্রী বিশ্বশর্মা বলেন, আঠারোর নির্বাচনের আগে বিজেপি যা বলেছিল তা করেছে। ঘোষণার বাইরে গিয়েও অনেক কিছু করা হয়েছে। তিনি বলেন, বিগত পাঁচ বছর রাজ্যের ইতিহাস স্বর্ণ অক্ষরে লেখা থাকবে। বামেদের কালো যুগ পেছনে ফেলে এই সময়ে রাজ্য বিকাশের প্রদেশে পরিণত হয়েছে। শুরু হয়েছে উন্নয়নের নয়া দৌড়। গত কয় বছরে রাজ্যে বিজেপি একশো গুণ শক্তিশালী হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে তিনি প্রত্যয়ের সাথে বলেন, এবার বিজেপি সরকার ৫৫টি আসন নিয়ে প্রত্যাবর্তন করছে। প্রায় আধ ঘণ্টার বক্তব্যে তিনি তিনবার দৃঢ়তার সাথে এই দাবি করেছেন।

বিরোধী দলগুলির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে শ্রী বিশ্বশর্মা বলেন, কংগ্রেস সিপিএম এখন একই থালায় খাবার খাচ্ছে। তাতে কাজের কাজ কিছু হবে না। সব দল একজোট হয়ে গেলেও ত্রিপুরাতে বিজেপিই জিতবে। তিনি বলেন, বিগত বিধানসভা নির্বাচনে ভয় নিয়ে কাজ করতে হয়েছিল। এবার সেই পরিবেশ নেই। গত পাঁচ বছরে যথেষ্ট অভিজ্ঞতাও সঞ্চিত হয়েছে। শ্রী বিশ্বশর্মা বলেন, গত পঁচাত্তর বছরে দেশে উত্তর পূর্বাঞ্চলের এত প্রভাব দেখা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী আগে একবার উত্তর পূর্ব সফরে এলে বড়সড় খবর হয়ে যেত। গত কয় বছরে প্রধানমন্ত্রী ষাট বার এই অঞ্চল সফর করে নিয়েছেন। সময় পেলেই এই অঞ্চলে পা রাখছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি, বলেন, মোদি মন্ত্রিসভায় এখন উত্তর-পূর্বের পাঁচজন প্রতিনিধি রয়েছে। যার মধ্যে ত্রিপুরার প্রতিনিধি প্রতিমা ভৌমিকও রয়েছেন।

আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর তালিকায় উত্তর পূর্বে একমাত্র সন্তোষ মোহন দেবেরই নাম ছিল। তিনি বলেন, রাজ্যে বিকাশের নয়া দৌড় শুরু হয়েছে। এই দৌড় আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যই বিজেপির প্রত্যাবর্তন জরুরি। আগামী পঁচিশ বছরে বিজেপি দেশের উন্নত রাজ্যগুলির সমকক্ষ হয়ে দাঁড়াবে। এই লক্ষ্য নিয়েই বিজেপি এগিয়ে চলেছে। তিনি বলেন, সবাই মিলেই বিকাশের ইতিহাস গড়তে হবে। বুথ বিজয় অভিযান দিয়েই পুনরায় বিজেপিকে জেতানোর অভিযান শুরু হয়ে গেছে। যার লক্ষ্যে সবাইকে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। সংকল্প নিয়েই ভোটের ময়দানে নামতে হবে। আগামী তিন মাস সময় দলের জন্য সমর্পণ করতে হবে পরিবারের জন্য সময় কাটছাঁট করে। তিনিবলেন, কর্মীদের কাজের দিশা কী হবে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজেপির উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোঅর্ডিনেটর সম্বিত পাত্রা।

তার দিশা অনুযায়ী কাজ শুরু করে দিতে হবে। আগামী ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত কর্মীদের বিরতি নেওয়া চলবে না। শেষ ভোট না পড়া পর্যন্ত সংকল্প যাত্রা চলবে। আমার বুথ সবচেয়ে মজবুত বুথ এই সংকল্প নিয়েই এদিনের অভিযান শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়ে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব, প্রদেশ বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য সহ অন্যরা। অনুষ্ঠানে ছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মণ, প্রদেশ বিজেপির নির্বাচন প্রভারি ড. মহেন্দ্ৰ সিং, প্রদেশ বিজেপি প্রভারি ডা. মহেশ শর্মা, সংগঠন মন্ত্রী ফণীন্দ্র নাথ শর্মা, বিজেপির জনজাতি মোর্চার সর্বভারতীয় সভাপতি সমীর ঔরান সহ অন্যরা। বুথস্তরের দেড় হাজার কর্মকর্তা এদিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন। ছিলেন বিজেপির মন্ত্রী, বিধায়ক সহ শীর্ষ পদাধিকারীরাও।

এদিন শহরের বিভিন্ন বুথে বিজেপির কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতৃত্ব বুথ বিজয় অভিযানের সূচনা করেন। নির্বাচনি প্রস্তুতি নিয়ে এদিন বিজেপির সর্বভারতীয় সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক বিএল সন্তোষের সাথেও প্রদেশ ও কেন্দ্রীয় নেতারা ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। এদিকে, সোমবার বিজেপির বুথ বিজয় অভিযানের সূচনা করা হয় পুর নিগমের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের ভট্টপুকুরস্থিত ২৮ নম্বর বুথ থেকে। এই বুথটি টাউন বড়দোয়ালী বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত। এখানে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বুথ বিজয় অভিযানের সূচনা করেন আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা, রাজ্যসভার সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব, দলের নির্বাচনি প্রভারি মহেন্দ্র সিং, রাজ্য বিজেপি সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য, পুর নিগমের দক্ষিণ জোনালের চেয়ারম্যান অভিজিৎ মল্লিক, বুথ সভাপতি শঙ্কর দেব প্রমুখ। বিজেপির প্রচুর কর্মী-সমর্থকের উপস্থিতিতে বুথ বিজয় অভিযানের সূচনা হয়।

Dainik Digital

Recent Posts

ইন্ডিগো ফ্লাইটে বোমার হুমকি!! কলকাতা বিমানবন্দর হাই অ্যালার্ট!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতার নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উচ্চ সতর্কতা জারি করা…

7 hours ago

আওয়ামী লীগের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করল নির্বাচন কমিশন!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-গেজেট নোটিফিকেশন দিয়ে আওয়ামী লীগের সবরকম কার্যকলাপ নিষিদ্ধ ঘোষণা করল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রশাসন…

8 hours ago

অবসর নিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-সুপ্রিম কোর্টের ব্যাটন তুলে দিয়ে গেলেন বিচারপতি বি আর গাভাইয়ের হাতে। বুধবার ১৪…

9 hours ago

সিঁদুর’ প্রসঙ্গে বিজেপির ১০ দিনের ‘তিরঙ্গা যাত্রা’!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে প্রচারে নামতে চলেছে বিজেপি।পাকিস্তানকে জবাব দেওয়ায় ভারতীয় সেনা বাহিনীকে ধন্যবাদ…

10 hours ago

পুরনো ছন্দে ফিরছে উপত্যকা!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে শ্রীনগর। শ্রীনগর বিমানবন্দরও মঙ্গলবার খোলার সম্ভাবনা রয়েছে। রাস্তা ঘাটে স্বাভাবিক…

10 hours ago

পঞ্জাবের বায়ুসেনাঘাঁটিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী!!

অনলাইন প্রতিনিধি :-ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে যে সামরিক অস্থিরতা তৈরি হয়েছিল, তা প্রশমনের পর মঙ্গলবার…

11 hours ago